ইলিয়াসের স্ত্রীর গাড়িতে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ, ২ বিএনপিকর্মী আটক

সিলেটের ওসমানীনগরে প্রচারপত্র বিতরণকালে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সাড়ে ৪টার দিকে সিলেটর ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৯ নভেম্বর (শনিবার) সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার জন্য মঙ্গলবার বিকেলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ওসমানীনগরে প্রচারপত্র বিতরণ করতে আসেন ইলিয়াসের স্ত্রী লুনা। এ সময় শেরপুর থেকে দয়ামীর পর্যন্ত পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের বাধার মুখে পড়লে কর্মসূচি প্রায় পণ্ড হয়ে যায়। 

এ সময় হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মিছবাহ ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রুপ আব্দুল আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। প্রচারপত্র বিতরণের সময় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফয়সল আহমদ মিলন, উমরপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা নুরুল ইসলাম আটক করেছে ওসমানীনগর থানা-পুলিশ।

এ বিষয়ে তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি চলাকালে গোয়ালাবাজার এলাকায় পুলিশ এবং যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দিয়ে আমার ব্যবহৃত গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পুলিশ এখন উল্টো বলছে আমরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছি।’

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদ আম্বিয়া বলেন, ‘বিএনপির হামলায় যুবলীগের ছয় নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে গোয়ালাবাজার এলাকায় কেক কাটছিল যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হামলা করলে আমাদের ছয় নেতা-কর্মী আহত হয়।’

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে। গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেনি।’

এদিকে তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়িতে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পুরো সিলেট জুড়ে যখন আগামী ১৯ নভেম্বরের গণসমাবেশ নিয়ে প্রচার প্রচারণা চলছে, সিলেটবাসী যখন বিএনপির সমাবেশে একাত্মতা পোষণ করেছে, এমন সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার ঘটনা তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।’