Ajker Patrika

আবাদ শুরুর আগেই সারের কৃত্রিম সংকট

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
আবাদ শুরুর আগেই  সারের কৃত্রিম সংকট

হবিগঞ্জে এখনো পুরোদমে রোপা আমন আবাদ শুরু না হওয়ায় সার কেনেনি কৃষকেরা। অথচ গেল মাসে জেলায় আড়াই হাজার মেট্রিক টনের বেশি সার গুদাম থেকে উত্তোলন করে বিক্রি দেখিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চাষিদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীরা সার মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন।

জানা গেছে, বন্যার কারণে এবার রোপা আমনের আবাদ পিছিয়েছে অন্তত ১৫ দিন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবাদ শুরু হলেও হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় এখনো বীজতলা তৈরির কাজ করছেন চাষিরা। যে কারণে সারের প্রয়োজন আরও অন্তত এক মাস পর।

ইউরিয়া সারের দাম প্রতি কেজি ছয় টাকা বাড়িয়েছে সরকার। দাম আরও বাড়তে পারে সে আশায় সার মজুত করেছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গেল জুলাই মাসে হবিগঞ্জে তিন ধরনের সারের চাহিদা দেখানো হয়েছে ৩ হাজার ৭৪ মেট্রিক টন। কৃষকদের এখনো সারের প্রয়োজন না হলেও এরই মধ্যে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআরইসি) ৮৮ জন ডিলার ২ হাজার ৬৩৯ মেট্রিক টন সার উত্তোলনের পর বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৬৪২ মেট্রিক টন। শুধু ইউরিয়া সারের চাহিদা দেখানো হয়েছিল ১ হাজার ৪৬১ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন সার গুদাম থেকে উত্তোলন করে ১ হাজার ২৩৯ মেট্রিক টন বিক্রি করেছেন।

সদর উপজেলার চিরি গ্রামের কৃষক মো. বজলুর রহমান বলেন, ‘অন্য বছর এই সময় আমন লাগানো শুরু হয়ে যায়। তবে এ বছর বন্যার কারণে কিছুটা পিছিয়েছে। আমরা এখন বীজতলা তৈরি করছি। ১২ থেকে ১৫ দিন পর রোপণ শুরু করব। যে কারণে এখনো আমাদের সারের দরকার পড়েনি।’

চুনারুঘাট উপজেলার কালিশিরি এলাকার কৃষক মো. সবুর মিয়া বলেন, ‘দুই দিন আগে গেছলাম সারের লাগি। কিন্তু বাজারে সার পাওয়া যাইতাছে না। একটা দোকানে যেও সামান্য পাইছ, দাম অনেক বেশি। ই-দামে সার আইনা পুষত না।’

লাখাই উপজেলার কৃষক আব্দুল কাদির বলেন, ‘বাজারে গিয়া দেখেন একটা বস্তা সারও পাইতেন না। গতকাল আমি সারের লাগি বাজারে গিয়া সার ছাড়াওই ফিরা আইছি। দাম বাড়ানোর জন্য সব সার ব্যবসায়ীরা মজুত কইরা রাইখা দিছে। এখন আমরা কৃষকেরা কী করমু বলেন?’

আব্দুল কাদির আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যাতে সার মজুত করতে না পারে, এ জন্য প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। এ ছাড়া কারা এই সারা মজুত করছে, তা খুঁজে বের করে আমাদের বাঁচাতে হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী (প্রশিক্ষণ) আশেক পারভেজ বলেন, ‘জুলাই মাসে আমরা সারের যে চাহিদা দিয়েছিলাম, তা পেয়েছি। নতুন করে আরও সারের চাহিদা দেওয়া হবে। কিছু ব্যবসায়ী পুরোনো সার নতুন দামে বিক্রির চেষ্টা করছেন। আমরা এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি করে দিয়েছি। এ ছাড়া কোনো ব্যবসায়ী যেন সারের দাম বেশি রাখতে না পারে এবং মজুত করতে না পারে—সে ব্যাপারে আমাদের মাঠকর্মীরা কঠোর নজরদারি রেখেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত