সিলেট-তামাবিল সড়কে পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ১৮: ৩৮

সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় এই ধর্মঘট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। সকাল থেকে এ সড়কে বাস মিনিবাস চলতে দেখা যায়নি। পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় ইসলামপুর, টিলাগড়, উপশহর পয়েন্টে সকাল থেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ির অপেক্ষা করতে দেখা গেছে যাত্রীদের।  

জানা গেছে, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যে সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস আটকে রাখার প্রতিবাদে এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ধর্মঘটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষ করে অফিসগামিরা পড়েছেন বিপাকে। অধিক ভাড়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশায় গন্তব্যে যেতে হয়েছে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যুবক উজ্জ্বল দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, নোয়াখালি থেকে বন্ধুরা এসেছে, আজ তাদের নিয়ে জাফলং যাওয়ার প্ল্যান ছিল। এখন বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সেটা বাতিল করে রাতারগুল যাচ্ছি।  তিনি আরও বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সিএনজি, মোটরসাইকেল ও রিকশায় করে ভেঙে ভেঙে এসেছি। ভাড়া বেশি গেছে ভোগান্তিও হয়েছে। 

আজ সোমবার সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসন থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে। তবে আমাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস বা সুরাহা হয়নি। কাজেই আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে দাবি আদায়ে জেলা-বিভাগজুড়ে ধর্মঘট পালন করা হবে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এর আগে রোববার রাতে এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল হক। এসময় তিনি বলেন, ‘রোববার জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করা বাস ও মিনিবাস জৈন্তাপুরের দরবস্তে অবৈধভাবে আটকে রাখেন। এর জন্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা জৈন্তাপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেই সঙ্গে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।’

পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় বাসচাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ৫ জন যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় গত শনিবার রাতে সিলেটের জৈন্তাপুর ১৭ পরগনার সালিস সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের দাবি ওঠে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কার্যক্রম শুরু করে সালিস সমন্বয় কমিটি।

ফলে রোববার মহাসড়কটিতে চলাচল করা কয়েকটি বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওইদিন বাস চলতে না দেওয়ায় জৈন্তাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকেরা। অভিযোগে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, ৫ জন মানুষ মারা গেল। তারা (পরিবহন শ্রমিক ও মালিক) কেউ এসে দেখেনি। এমন কী জানাযায়ও অংশ গ্রহণ করেনি। সোমবার রাতে আমরা এলাকাবাসী বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। ৫ জন নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলাটি হাইওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত