সিলেটে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যায় কামরুলের ফাঁসির দণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০: ০৩

সিলেটে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা মামলায় হাসান মুন্সি ওরফে কামরুল হাসানকে (৪৪) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরে আলম ভূঁইয়া এ রায় দেন। 

আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট জুবায়ের বখত আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত হাসান মুন্সি গোপালগঞ্জ জেলার মাকসুদপুর খালপার এলাকার বাসিন্দা। হত্যাকাণ্ডের আগে তিনি স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে নগরের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়া খেয়াঘাট গলির প্রবাসী কামালের কলোনির ৫ নং বাসায় ভাড়া থাকতেন। 

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সকালে নগরের দক্ষিণ সুরমা ঝালোপাড়া খেয়াঘাট গলির এক বাসার বাথরুম থেকে গৃহবধূ জনি আক্তার জয়নব ওরফে শিউলি (৩৫), তাঁর সন্তান মিম (১৫) ও তাহসিনের (১৩) গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শিউলীর চাচাতো ভাই বাদশা মিয়া বাদী হয়ে নিহতের স্বামী হাসান মুন্সিসহ অজ্ঞাতনামা ৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার ১৬ বছর আগে জনি আক্তারের সঙ্গে হাসান মুন্সির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় বসবাস করত তাঁরা। তাঁদের প্রথম কন্যা সন্তান হওয়ার পর শিউলিকে নিয়ে হাসান মুন্সি গ্রামে চলে যায় এবং ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে দুই বছর ধরে কাজ করে। এরই মধ্যে তাঁদের আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ঘটনার অনুমান ১৫ দিন আগে হাসান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সিলেটে স্ত্রীর চাচাতো ভাই মামলার বাদী বাদশাহর বাসায় ওঠেন। ওই বাসায় দুদিন থাকার পর দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়ার একটি কলোনিতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। 

২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সন্ধ্যার পর বাদশাহ মিয়া জানতে পারেন হাসান মুন্সি তাঁর চাচাতো বোন ও ভাগনিদের ওই বছরের ২৬-২৮ জুলাই তারিখের মধ্যে যেকোনো সময় শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাসা বাইরে দিয়ে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। ৩০ জুলাই সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে ঘরের দরজা ভেঙে বাথরুম থেকে পুলিশ তাদের গলিত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বাদশাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। 

মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই লোকমান আহমদ। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক কামরুজ্জামান তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একমাত্র হাসান মুন্সিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র (চার্জশিট) জমা দেয়। 

মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর জজ আদালতে পাঠানো হলে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত হাসান মুন্সিকে মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত