চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী, আমদানিতে শুল্ক তুলে দেওয়ার সুপারিশ

  • বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ট্যারিফ কমিশনের চিঠি।
  • চালে বর্তমান শুল্কহার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ।
  • মাসের ব্যবধানে দেশে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ।
আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১১: ০৮
Thumbnail image
ফাইল ছবি

গত এক মাসের ব্যবধানে দেশে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৭ থেকে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর মধ্যে বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে আমনের উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে, যা চালের ঘাটতি তৈরির শঙ্কা বাড়াচ্ছে। এ পর্যায়ে স্বস্তি নেই আন্তর্জাতিক বাজারেও। তথ্যানুযায়ী থাইল্যান্ডে প্রতি টন চালের দাম ৫৫০ ডলার এবং ভারতে ৪৫০ ডলার। দেশে এই দামে চাল আমদানি হলে তার ওপর আবার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক গুনতে হবে। পরিবহন ও ব্যবসা পরিচালনার খরচ সঙ্গে যোগ হবে। এতে সবকিছু মিলিয়ে বাজারে আমদানি করা চালের দাম পড়বে প্রতি কেজি ৯২-৯৫ টাকা।

এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন গতকাল মঙ্গলবার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে এ-সংক্রান্ত আধা সরকারি পত্র (ডিও) পাঠিয়েছে। এতে করণীয় হিসেবে চাল আমদানিতে এই মুহূর্তে বহাল ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ আমদানিকারকদের উৎসাহিত করবে এবং স্থানীয়ভাবে পণ্যটির নিরাপদ মজুত গড়ে উঠবে। চালের ওপর শুল্ক না থাকলে ভোক্তারও চাল কেনায় হাপিত্যেশ কমবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৬ আগষ্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দুই দফা বন্যা দেখা দেয়। এতে ৮ লাখ ৩৯ হাজার টন চালের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে চালের মোট চাহিদা রয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ থেকে ৩ কোটি ৯০ লাখ টন। দেশে বছরে চাল উৎপাদিত হচ্ছে ৪ কোটি টন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের সরকারি গুদামে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট চালের মজুত রয়েছে ৯ লাখ ৮১ হাজার ৭০৩ টন।

টিসিবির বাজার তদারকির প্রতিবেদন বলছে, গতকাল রাজধানীতে চিকন চাল বিক্রি হয়েছে ৭২-৮০ টাকা। একইভাবে মাঝারি মানের চাল ৫৮-৬৩ টাকা এবং মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৫ টাকা কেজি।

চাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার তুলে দেওয়ার প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় চাল আমদানি করা হলে বাজারে চালের দাম কিছুটা কমবে। তবে আমদানির পরিমাণ বা নির্ধারিত সময় বেঁধে দিতে হবে। এটি না করলে দেশের কৃষকেরা নিরুৎসাহিত হবেন। তবে সরকার জিটুজি পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে চাল আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করা গেলে আরও ভালো হতো বলে তিনি জানান।

ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, চাল আমদানিতে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য ছিল। তবে দেশে চালের সম্ভাব্য ঘাটতি বিবেচনায় সরকার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত চাল আমদানির শুল্ক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়। ইতিমধ্যে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়েছে। ফলে চালে শুল্কহার সেই আগের অবস্থাতেই পুনর্বহাল হয়েছে।

ট্যারিফ কমিশনের পর্যালোচনায় দেখানো হয়েছে, থাইল্যান্ডে প্রতি টন চালের দাম ৫৫০ ডলার। প্রতি ডলারের দাম ১২০ টাকা হিসাবে প্রতি টন চালের আমদানি মূল্য দাঁড়াবে ৬৬ হাজার টাকা এবং প্রতি কেজি এফওবি মূল্য দাঁড়াবে ৬৬ টাকা। এর সঙ্গে শুল্ক ও অন্যান্য খরচ যোগ করলে দেশের বাজারে দাম পড়বে ৯ ২-৯৫ টাকা। ভারতে প্রতি টন চালের দাম ৪৫০ ডলার, যা দেশে আনার পর ভোক্তাপর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৭৫-৭৮ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত