টাকার কাছে সবই নস্যি! রাশিয়া ছাড়েনি বহু পশ্চিমা কোম্পানি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯: ০০
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ৪০

যুদ্ধের মধ্যেও থমকে নেই রাশিয়ার অর্থনীতি। রাশিয়া ১৪ কোটি ৩৪ লাখ মানুষের বাজার। ক্রয়ক্ষমতার দিক থেকে দেশটির মাথাপিছু জিডিপি বাড়ছে এবং এর সঙ্গে বাড়ছে মাথাপিছু বার্ষিক পারিবারিক আয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার মাথাপিছু বার্ষিক পারিবারিক আয় বেড়ে ৭ হাজার ৮৭৩ ডলার হয়। এর আগে ২০২১ সালে তা ছিল ৬ হাজার ৫৬৬ ডলার। 

ক্রমাগত মূল্যস্ফীতির পরও নানা পণ্য কেনার জন্য যথেষ্ট অর্থ রুশদের হাতে আছে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির পর এবং পশ্চিমা সংস্থাগুলোর কাছে বেছে নেওয়ার জন্য তিনটি কৌশল ছিল। এ কৌশলগুলো নির্ভর করছিল তাঁরা কতটা চাপবোধ করছেন এবং একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে তাঁদের ব্যবসা কার্যক্রম কেমন প্রভাবিত হচ্ছে তার ওপর। যারা রাশিয়ায় ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছিল তারা তখন নৈতিকতার (ইউক্রেনে অন্যায় সামরিক অভিযান) দোহাই দিয়েছিল, আর যারা সরে আসেনি তারা নানা ব্যাখ্যা দাঁড় করেছে।

২০২৩ সাল থেকেই ক্রেমলিন বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য একটি কঠোর নীতি চালু করেছে। রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হলে বিদেশি ব্যবসায়ীদের অবশ্যই তাদের সম্পত্তি রুশদের কাছে ৫০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করে যেতে হবে। এ ছাড়া তাদের যাওয়ার খরচের অন্তত ১০ শতাংশ এক্সিট ফি হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। যারা তাৎক্ষণিক রাশিয়া ছেড়ে যায়নি তাদের গত বছর বেশ মোটা অঙ্কের মূল্য চোকাতে হয়েছিল। 

যারা এখনো রাশিয়ায় রয়ে গেছে তারা নিজেদের ওপরই বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তারা নিজেদের ব্যবসা আর সম্প্রসারিত করছে না এবং নিজেদের উপস্থিতি যতটা সম্ভব সংকুচিত করার চেষ্টা করছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ২০২২ সালের মার্চে নিষেধাজ্ঞার পরও রাশিয়ায় সক্রিয় পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা অনুসারে, রাশিয়ায় এখনো প্রায় ২০০–এরও বেশি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সক্রিয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান এমনভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে যেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কোনো যুদ্ধই চলছে না! প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৫টি মার্কিন কোম্পানি, ২০টি জার্মান, ২০টি ফরাসি, ১০টি জাপানি এবং ৫টি ব্রিটিশ কোম্পানি। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের আরও বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে। 

সবচেয়ে পরিচিত ব্র্যান্ডগুলো হলো— অ্যারিস্টন, অচান, ব্রাউন, বেনেটন, ক্যালজেদনিয়া, ডিজেল, গ্লোবাস, কাওয়াসাকি, লাকোস্ট, লাইভের, মাকিতা, মিতসুবিশি, রাইফেইসেন, সিমেনস, টেপকো, টাপারওয়ার, ইউনিক্রেডিট, ইয়ামাহা, জেপটার। 

ফিলিপ মরিস, পেপসিকো, মার্স এবং নেসলেও রয়েছে শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে। একসঙ্গে এরা প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি রুবলের মতো আয় করে। তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতিহীনতার অভিযোগ থাকলেও টাকার সামনে সবকিছুই ফিকে! 

পশ্চিমা এ কোম্পানিগুলো শুধু যে মোটা অঙ্কের আয় করে তা–ই নয়, এরা রুশ সরকারকে মোটা অঙ্কের করও দেয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দ্য মস্কো টাইমস নামের এক রুশ পত্রিকায় ‘২০২৩ সালেও রাশিয়ার বাজারে থাকবে পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

ফোর্বসের রুশ সংস্করণে বলা হয়, বিদেশি শীর্ষ ৫০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টিই মার্কিন!

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত