
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সম্পর্ক কয়েক দশকের পুরোনো। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য। সব উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রতিশ্রুতিও বহু পুরোনো। তবে লাভের মুখ এখনো দেখেনি বিমান।
গত এক যুগে আকাশপথে পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আকাশপথে বছরে চলাচলকারী যাত্রীসংখ্যা ছিল ২০ লাখের নিচে। কিন্তু ২০১০ সালের পর মাত্র এক দশকে সেই সংখ্যা একলাফে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা বেড়ে ৮০ লাখে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার জন্য বাড়তি রুট ও ফ্লাইট দরকার হবে। বর্ধিত চাহিদা পূরণে ফ্লাইটসংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন রুট চালু করতে চায় বিমান। দেড় দশক পর ইতালিতে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বিমান। এর মধ্যে দেড় যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটেও আবার ফ্লাইট চালুর প্রচেষ্টা চলছে।
এজন্য বিমান নতুন এয়ারক্রাফট কিনবে। এখন বিমানের বহরে এয়ারবাসের কোনো উড়োজাহাজ নেই। সর্বশেষ ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ামোস এয়ারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া এয়ারবাসের এ৩৩০-২০০ উড়োজাহাজ চলত। সেটা ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফেরত দেওয়া হয়।
বিমানের বহরে মোট ২১টি উড়োজাহাজের সবই বোয়িংয়ের তৈরি। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৮, ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০। এসব উড়োজাহাজ দিয়ে বিমান ৭টি অভ্যন্তরীণ ও ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহন করে। বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ১০টি উড়োজাহাজ কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
সেই সুযোগ নিয়ে এয়ারবাস বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী বছরে এই আলোচনা বেশ জোরেশোরেই চলছিল। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে এয়ারবাস কেনার আশ্বাস দেয় সরকার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রও বোয়িং বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এয়ারবাস কেনার চুক্তির আশ্বাস দিলেও বোয়িং কেনার কথাও বিবেচনা করতে পারে বিমান।

বিমান কি বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে?
চলতি বছরের শুরুতে এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত হলেও বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাবও বিবেচনায় রেখেছে বিমান। উভয় নির্মাতাই জোর উদ্যোগে উড়োজাহাজ বিক্রির অর্ডার পেতে জোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি টেবিলে প্রলোভনের নানা প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেছেন, উভয়ের (বোয়িং ও এয়ারবাস) প্রস্তাব বিমানের বিবেচনায় আছে। এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে লাভজনক হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে এয়ারক্রাফটের সুবিধাজনক দাম, বাড়তি সহায়তা ও সুবিধা বিবেচনা করবে বিমান।
বিমান বলছে, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে নতুন রুট চালুর লক্ষ্য নিয়ে আগামী বছরগুলোতে বিমান নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে আগ্রহী। মহামারির পর ভ্রমণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াইড-বডি এয়ারক্রাফট বাড়াতে চায় বিমান। ৫১ বছর বয়সী বিমান বাংলাদেশের বহরে থাকা সব উড়োজাহাজ বোয়িং কোম্পানির। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ওয়াইড-বডি এয়ারক্র্যাফট, কিছু আছে ড্যাশ-৮ টার্বোপ্রোস।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে এসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ দুটি এ৩৫০এফ উড়োজাহাজসহ ১০টি এয়ারবাস এ৩৫০ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউরোপীয় উড়োজাহাজ কোম্পানির ওপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এয়ারবাসের ১০টি এ৩৫০ উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।’
সদ্য সাবেক বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বেশ জোর দিয়েই বলে আসছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ থেকে দুটি এয়ারবাস উড়োজাহাজের ক্রয়াদেশ দেওয়া হতে পারে। কয়েক ধাপে ১০টি উড়োজাহাজ কেনা হবে; কারিগরি কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব উড়োজাহাজ নতুন এবং পুরোনো রুটে চলাচল করবে। সব দেশের বহরেই বোয়িং এবং এয়ারবাসের উড়োজাহাজ আছে। কিন্তু আমাদের শুধু বোয়িং আছে, এয়ারবাসের একটি উড়োজাহাজও নেই।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে আরও বোয়িং বিক্রির চেষ্টা করছে। গত বছরের শেষ দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর আশ্বাস দেন। তখন তিনি বোয়িং থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দেন। বিষয়টি নিয়ে তার পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকের সময় তদ্বিরের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার সরাসরি ফ্লাইট চালুর যে চেষ্টা করছে, যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট না হলে তা সম্ভব নয়। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তরের অনুমোদন এবং এর আগে দেশটির ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সব মানদণ্ড পূরণ না হলে ওই ছাড়পত্র পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশ সোচ্চার ছিল। ভোটের কয়েক মাস আগে দেশটি ভিসা নীতি আরোপ করে। এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়। তবে এর আওতায় কারও ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এই কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুর বেশ নরম হয়েছে।
এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন বিশ্লেষকেরা। কেউ কেউ মনে করছেন, বাইরে সরকারের তীব্র সমালোচনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে হয়তো কোনো সমঝোতা হয়েছে। সেটা যা-ই হোক, বেসামরিক বিমান চলাচল খাতকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক উন্নত করার একটা সম্ভাবনা দৃশ্যমান হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বোয়িংকে একেবারে ছেড়ে দিয়ে এয়ারবাসের কাছে না-ও ভিড়তে পারে সরকার। তা ছাড়া বোয়িংয়ের আরও কিছু সুবিধা আছে।
বোয়িং বনাম এয়ারবাস: কার কী প্রস্তাব
এখন বিমানের বহরে চারটি ৭৮৭-৮ ও দুটি ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ আছে। এর মধ্যেই আকর্ষণীয় ছাড় দিয়ে বোয়িং আরও একটি ৭৮৭ কার্গোবাহী ড্রিমলাইনার বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। এখন বিমানের কোনো কার্গোবাহী উড়োজাহাজ নেই। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়াতে এবং দখল বাড়াতে বিমানের পণ্যবাহী উড়োজাহাজও লাগবে।
এ ছাড়া বোয়িং-নির্ভর বহরের উচ্চ সাশ্রয় সক্ষমতার কথা তুলে ধরে বিমানকে বোঝানোর চেষ্টা করছে মার্কিন কোম্পানিটি। বোয়িং বলছে, এয়ারবাস থেকে নতুন উড়োজাহাজ কিনলে বিমানকে নতুন প্রযুক্তিগত দল, পাইলট ও সিমুলেটরের জন্য বাড়তি খরচ করতে হবে। এর ফলে বিমানের পরিচালন খরচ বাড়বে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এয়ারবাস। এয়ারবাস পরিচালনায় সক্ষম জনবল তৈরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির (বিএসএমআরএএউ) সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। শিক্ষাক্রম, উপকরণ এবং পাঠ্যক্রম সাজাতে সহায়তা করবে এয়ারবাস। লালমনিরহাটের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এয়ারবাসের প্রশিক্ষকদের দিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পাইলট ও প্রকৌশলীদের ক্লাসরুম প্রশিক্ষণের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায়ও সহায়তার পরিকল্পনা আছে তাদের।
গত বছর মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন সামিটে বিমানের সঙ্গে দেনদরবার করেছে এয়ারবাস। এমনকি বিমানকে রাজি করাতে একটি উড়োজাহাজ প্রদর্শনীর জন্য এনে দেখানোও হয়। এর পরে বিমানকে এয়ারবাস কেনায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণসহায়তা দিতে যুক্তরাজ্যের ইউকে এক্সপোর্ট ফাইন্যান্স স্কিমের সঙ্গে বিশেষ চুক্তিও হয়।
তবে বাংলাদেশে নির্বাচন এবং বোয়িং ও মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে দেনদরবারের মধ্যে এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনা নিয়ে বিমানের নতুন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে আপাতত যে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে না, তা সরকার এরই মধ্যে ফ্রান্সকে জানিয়ে দিয়েছে। এর জন্য অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
গত ২৫ জানুয়ারি ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উপযোগী হলেই কেবল ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস কেনা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে (ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে)। এটি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরেও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ইকোনমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারব।’
যখনই হোক না কেন, আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় বিমানকে লাভজনক করতে হলে আরও উড়োজাহাজ কিনতেই হবে। এখন বিমান বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে নাকি এয়ারবাসকেও সঙ্গে নেবে। শেষ হাসি হাসবে কে—এয়ারবাস না বোয়িং, নাকি উভয়ে—তাই দেখার অপেক্ষা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সম্পর্ক কয়েক দশকের পুরোনো। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য। সব উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রতিশ্রুতিও বহু পুরোনো। তবে লাভের মুখ এখনো দেখেনি বিমান।
গত এক যুগে আকাশপথে পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আকাশপথে বছরে চলাচলকারী যাত্রীসংখ্যা ছিল ২০ লাখের নিচে। কিন্তু ২০১০ সালের পর মাত্র এক দশকে সেই সংখ্যা একলাফে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা বেড়ে ৮০ লাখে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার জন্য বাড়তি রুট ও ফ্লাইট দরকার হবে। বর্ধিত চাহিদা পূরণে ফ্লাইটসংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন রুট চালু করতে চায় বিমান। দেড় দশক পর ইতালিতে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বিমান। এর মধ্যে দেড় যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটেও আবার ফ্লাইট চালুর প্রচেষ্টা চলছে।
এজন্য বিমান নতুন এয়ারক্রাফট কিনবে। এখন বিমানের বহরে এয়ারবাসের কোনো উড়োজাহাজ নেই। সর্বশেষ ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ামোস এয়ারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া এয়ারবাসের এ৩৩০-২০০ উড়োজাহাজ চলত। সেটা ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফেরত দেওয়া হয়।
বিমানের বহরে মোট ২১টি উড়োজাহাজের সবই বোয়িংয়ের তৈরি। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৮, ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০। এসব উড়োজাহাজ দিয়ে বিমান ৭টি অভ্যন্তরীণ ও ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহন করে। বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ১০টি উড়োজাহাজ কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
সেই সুযোগ নিয়ে এয়ারবাস বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী বছরে এই আলোচনা বেশ জোরেশোরেই চলছিল। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে এয়ারবাস কেনার আশ্বাস দেয় সরকার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রও বোয়িং বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এয়ারবাস কেনার চুক্তির আশ্বাস দিলেও বোয়িং কেনার কথাও বিবেচনা করতে পারে বিমান।

বিমান কি বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে?
চলতি বছরের শুরুতে এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত হলেও বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাবও বিবেচনায় রেখেছে বিমান। উভয় নির্মাতাই জোর উদ্যোগে উড়োজাহাজ বিক্রির অর্ডার পেতে জোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি টেবিলে প্রলোভনের নানা প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেছেন, উভয়ের (বোয়িং ও এয়ারবাস) প্রস্তাব বিমানের বিবেচনায় আছে। এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে লাভজনক হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে এয়ারক্রাফটের সুবিধাজনক দাম, বাড়তি সহায়তা ও সুবিধা বিবেচনা করবে বিমান।
বিমান বলছে, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে নতুন রুট চালুর লক্ষ্য নিয়ে আগামী বছরগুলোতে বিমান নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে আগ্রহী। মহামারির পর ভ্রমণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াইড-বডি এয়ারক্রাফট বাড়াতে চায় বিমান। ৫১ বছর বয়সী বিমান বাংলাদেশের বহরে থাকা সব উড়োজাহাজ বোয়িং কোম্পানির। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ওয়াইড-বডি এয়ারক্র্যাফট, কিছু আছে ড্যাশ-৮ টার্বোপ্রোস।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে এসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ দুটি এ৩৫০এফ উড়োজাহাজসহ ১০টি এয়ারবাস এ৩৫০ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউরোপীয় উড়োজাহাজ কোম্পানির ওপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এয়ারবাসের ১০টি এ৩৫০ উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।’
সদ্য সাবেক বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বেশ জোর দিয়েই বলে আসছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ থেকে দুটি এয়ারবাস উড়োজাহাজের ক্রয়াদেশ দেওয়া হতে পারে। কয়েক ধাপে ১০টি উড়োজাহাজ কেনা হবে; কারিগরি কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব উড়োজাহাজ নতুন এবং পুরোনো রুটে চলাচল করবে। সব দেশের বহরেই বোয়িং এবং এয়ারবাসের উড়োজাহাজ আছে। কিন্তু আমাদের শুধু বোয়িং আছে, এয়ারবাসের একটি উড়োজাহাজও নেই।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে আরও বোয়িং বিক্রির চেষ্টা করছে। গত বছরের শেষ দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর আশ্বাস দেন। তখন তিনি বোয়িং থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দেন। বিষয়টি নিয়ে তার পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকের সময় তদ্বিরের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার সরাসরি ফ্লাইট চালুর যে চেষ্টা করছে, যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট না হলে তা সম্ভব নয়। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তরের অনুমোদন এবং এর আগে দেশটির ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সব মানদণ্ড পূরণ না হলে ওই ছাড়পত্র পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশ সোচ্চার ছিল। ভোটের কয়েক মাস আগে দেশটি ভিসা নীতি আরোপ করে। এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়। তবে এর আওতায় কারও ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এই কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুর বেশ নরম হয়েছে।
এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন বিশ্লেষকেরা। কেউ কেউ মনে করছেন, বাইরে সরকারের তীব্র সমালোচনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে হয়তো কোনো সমঝোতা হয়েছে। সেটা যা-ই হোক, বেসামরিক বিমান চলাচল খাতকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক উন্নত করার একটা সম্ভাবনা দৃশ্যমান হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বোয়িংকে একেবারে ছেড়ে দিয়ে এয়ারবাসের কাছে না-ও ভিড়তে পারে সরকার। তা ছাড়া বোয়িংয়ের আরও কিছু সুবিধা আছে।
বোয়িং বনাম এয়ারবাস: কার কী প্রস্তাব
এখন বিমানের বহরে চারটি ৭৮৭-৮ ও দুটি ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ আছে। এর মধ্যেই আকর্ষণীয় ছাড় দিয়ে বোয়িং আরও একটি ৭৮৭ কার্গোবাহী ড্রিমলাইনার বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। এখন বিমানের কোনো কার্গোবাহী উড়োজাহাজ নেই। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়াতে এবং দখল বাড়াতে বিমানের পণ্যবাহী উড়োজাহাজও লাগবে।
এ ছাড়া বোয়িং-নির্ভর বহরের উচ্চ সাশ্রয় সক্ষমতার কথা তুলে ধরে বিমানকে বোঝানোর চেষ্টা করছে মার্কিন কোম্পানিটি। বোয়িং বলছে, এয়ারবাস থেকে নতুন উড়োজাহাজ কিনলে বিমানকে নতুন প্রযুক্তিগত দল, পাইলট ও সিমুলেটরের জন্য বাড়তি খরচ করতে হবে। এর ফলে বিমানের পরিচালন খরচ বাড়বে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এয়ারবাস। এয়ারবাস পরিচালনায় সক্ষম জনবল তৈরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির (বিএসএমআরএএউ) সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। শিক্ষাক্রম, উপকরণ এবং পাঠ্যক্রম সাজাতে সহায়তা করবে এয়ারবাস। লালমনিরহাটের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এয়ারবাসের প্রশিক্ষকদের দিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পাইলট ও প্রকৌশলীদের ক্লাসরুম প্রশিক্ষণের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায়ও সহায়তার পরিকল্পনা আছে তাদের।
গত বছর মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন সামিটে বিমানের সঙ্গে দেনদরবার করেছে এয়ারবাস। এমনকি বিমানকে রাজি করাতে একটি উড়োজাহাজ প্রদর্শনীর জন্য এনে দেখানোও হয়। এর পরে বিমানকে এয়ারবাস কেনায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণসহায়তা দিতে যুক্তরাজ্যের ইউকে এক্সপোর্ট ফাইন্যান্স স্কিমের সঙ্গে বিশেষ চুক্তিও হয়।
তবে বাংলাদেশে নির্বাচন এবং বোয়িং ও মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে দেনদরবারের মধ্যে এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনা নিয়ে বিমানের নতুন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে আপাতত যে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে না, তা সরকার এরই মধ্যে ফ্রান্সকে জানিয়ে দিয়েছে। এর জন্য অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
গত ২৫ জানুয়ারি ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উপযোগী হলেই কেবল ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস কেনা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে (ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে)। এটি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরেও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ইকোনমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারব।’
যখনই হোক না কেন, আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় বিমানকে লাভজনক করতে হলে আরও উড়োজাহাজ কিনতেই হবে। এখন বিমান বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে নাকি এয়ারবাসকেও সঙ্গে নেবে। শেষ হাসি হাসবে কে—এয়ারবাস না বোয়িং, নাকি উভয়ে—তাই দেখার অপেক্ষা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সম্পর্ক কয়েক দশকের পুরোনো। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য। সব উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রতিশ্রুতিও বহু পুরোনো। তবে লাভের মুখ এখনো দেখেনি বিমান।
গত এক যুগে আকাশপথে পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আকাশপথে বছরে চলাচলকারী যাত্রীসংখ্যা ছিল ২০ লাখের নিচে। কিন্তু ২০১০ সালের পর মাত্র এক দশকে সেই সংখ্যা একলাফে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা বেড়ে ৮০ লাখে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার জন্য বাড়তি রুট ও ফ্লাইট দরকার হবে। বর্ধিত চাহিদা পূরণে ফ্লাইটসংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন রুট চালু করতে চায় বিমান। দেড় দশক পর ইতালিতে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বিমান। এর মধ্যে দেড় যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটেও আবার ফ্লাইট চালুর প্রচেষ্টা চলছে।
এজন্য বিমান নতুন এয়ারক্রাফট কিনবে। এখন বিমানের বহরে এয়ারবাসের কোনো উড়োজাহাজ নেই। সর্বশেষ ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ামোস এয়ারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া এয়ারবাসের এ৩৩০-২০০ উড়োজাহাজ চলত। সেটা ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফেরত দেওয়া হয়।
বিমানের বহরে মোট ২১টি উড়োজাহাজের সবই বোয়িংয়ের তৈরি। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৮, ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০। এসব উড়োজাহাজ দিয়ে বিমান ৭টি অভ্যন্তরীণ ও ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহন করে। বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ১০টি উড়োজাহাজ কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
সেই সুযোগ নিয়ে এয়ারবাস বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী বছরে এই আলোচনা বেশ জোরেশোরেই চলছিল। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে এয়ারবাস কেনার আশ্বাস দেয় সরকার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রও বোয়িং বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এয়ারবাস কেনার চুক্তির আশ্বাস দিলেও বোয়িং কেনার কথাও বিবেচনা করতে পারে বিমান।

বিমান কি বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে?
চলতি বছরের শুরুতে এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত হলেও বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাবও বিবেচনায় রেখেছে বিমান। উভয় নির্মাতাই জোর উদ্যোগে উড়োজাহাজ বিক্রির অর্ডার পেতে জোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি টেবিলে প্রলোভনের নানা প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেছেন, উভয়ের (বোয়িং ও এয়ারবাস) প্রস্তাব বিমানের বিবেচনায় আছে। এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে লাভজনক হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে এয়ারক্রাফটের সুবিধাজনক দাম, বাড়তি সহায়তা ও সুবিধা বিবেচনা করবে বিমান।
বিমান বলছে, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে নতুন রুট চালুর লক্ষ্য নিয়ে আগামী বছরগুলোতে বিমান নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে আগ্রহী। মহামারির পর ভ্রমণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াইড-বডি এয়ারক্রাফট বাড়াতে চায় বিমান। ৫১ বছর বয়সী বিমান বাংলাদেশের বহরে থাকা সব উড়োজাহাজ বোয়িং কোম্পানির। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ওয়াইড-বডি এয়ারক্র্যাফট, কিছু আছে ড্যাশ-৮ টার্বোপ্রোস।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে এসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ দুটি এ৩৫০এফ উড়োজাহাজসহ ১০টি এয়ারবাস এ৩৫০ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউরোপীয় উড়োজাহাজ কোম্পানির ওপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এয়ারবাসের ১০টি এ৩৫০ উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।’
সদ্য সাবেক বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বেশ জোর দিয়েই বলে আসছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ থেকে দুটি এয়ারবাস উড়োজাহাজের ক্রয়াদেশ দেওয়া হতে পারে। কয়েক ধাপে ১০টি উড়োজাহাজ কেনা হবে; কারিগরি কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব উড়োজাহাজ নতুন এবং পুরোনো রুটে চলাচল করবে। সব দেশের বহরেই বোয়িং এবং এয়ারবাসের উড়োজাহাজ আছে। কিন্তু আমাদের শুধু বোয়িং আছে, এয়ারবাসের একটি উড়োজাহাজও নেই।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে আরও বোয়িং বিক্রির চেষ্টা করছে। গত বছরের শেষ দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর আশ্বাস দেন। তখন তিনি বোয়িং থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দেন। বিষয়টি নিয়ে তার পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকের সময় তদ্বিরের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার সরাসরি ফ্লাইট চালুর যে চেষ্টা করছে, যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট না হলে তা সম্ভব নয়। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তরের অনুমোদন এবং এর আগে দেশটির ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সব মানদণ্ড পূরণ না হলে ওই ছাড়পত্র পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশ সোচ্চার ছিল। ভোটের কয়েক মাস আগে দেশটি ভিসা নীতি আরোপ করে। এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়। তবে এর আওতায় কারও ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এই কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুর বেশ নরম হয়েছে।
এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন বিশ্লেষকেরা। কেউ কেউ মনে করছেন, বাইরে সরকারের তীব্র সমালোচনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে হয়তো কোনো সমঝোতা হয়েছে। সেটা যা-ই হোক, বেসামরিক বিমান চলাচল খাতকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক উন্নত করার একটা সম্ভাবনা দৃশ্যমান হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বোয়িংকে একেবারে ছেড়ে দিয়ে এয়ারবাসের কাছে না-ও ভিড়তে পারে সরকার। তা ছাড়া বোয়িংয়ের আরও কিছু সুবিধা আছে।
বোয়িং বনাম এয়ারবাস: কার কী প্রস্তাব
এখন বিমানের বহরে চারটি ৭৮৭-৮ ও দুটি ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ আছে। এর মধ্যেই আকর্ষণীয় ছাড় দিয়ে বোয়িং আরও একটি ৭৮৭ কার্গোবাহী ড্রিমলাইনার বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। এখন বিমানের কোনো কার্গোবাহী উড়োজাহাজ নেই। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়াতে এবং দখল বাড়াতে বিমানের পণ্যবাহী উড়োজাহাজও লাগবে।
এ ছাড়া বোয়িং-নির্ভর বহরের উচ্চ সাশ্রয় সক্ষমতার কথা তুলে ধরে বিমানকে বোঝানোর চেষ্টা করছে মার্কিন কোম্পানিটি। বোয়িং বলছে, এয়ারবাস থেকে নতুন উড়োজাহাজ কিনলে বিমানকে নতুন প্রযুক্তিগত দল, পাইলট ও সিমুলেটরের জন্য বাড়তি খরচ করতে হবে। এর ফলে বিমানের পরিচালন খরচ বাড়বে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এয়ারবাস। এয়ারবাস পরিচালনায় সক্ষম জনবল তৈরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির (বিএসএমআরএএউ) সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। শিক্ষাক্রম, উপকরণ এবং পাঠ্যক্রম সাজাতে সহায়তা করবে এয়ারবাস। লালমনিরহাটের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এয়ারবাসের প্রশিক্ষকদের দিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পাইলট ও প্রকৌশলীদের ক্লাসরুম প্রশিক্ষণের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায়ও সহায়তার পরিকল্পনা আছে তাদের।
গত বছর মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন সামিটে বিমানের সঙ্গে দেনদরবার করেছে এয়ারবাস। এমনকি বিমানকে রাজি করাতে একটি উড়োজাহাজ প্রদর্শনীর জন্য এনে দেখানোও হয়। এর পরে বিমানকে এয়ারবাস কেনায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণসহায়তা দিতে যুক্তরাজ্যের ইউকে এক্সপোর্ট ফাইন্যান্স স্কিমের সঙ্গে বিশেষ চুক্তিও হয়।
তবে বাংলাদেশে নির্বাচন এবং বোয়িং ও মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে দেনদরবারের মধ্যে এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনা নিয়ে বিমানের নতুন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে আপাতত যে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে না, তা সরকার এরই মধ্যে ফ্রান্সকে জানিয়ে দিয়েছে। এর জন্য অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
গত ২৫ জানুয়ারি ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উপযোগী হলেই কেবল ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস কেনা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে (ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে)। এটি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরেও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ইকোনমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারব।’
যখনই হোক না কেন, আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় বিমানকে লাভজনক করতে হলে আরও উড়োজাহাজ কিনতেই হবে। এখন বিমান বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে নাকি এয়ারবাসকেও সঙ্গে নেবে। শেষ হাসি হাসবে কে—এয়ারবাস না বোয়িং, নাকি উভয়ে—তাই দেখার অপেক্ষা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সম্পর্ক কয়েক দশকের পুরোনো। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য। সব উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রতিশ্রুতিও বহু পুরোনো। তবে লাভের মুখ এখনো দেখেনি বিমান।
গত এক যুগে আকাশপথে পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আকাশপথে বছরে চলাচলকারী যাত্রীসংখ্যা ছিল ২০ লাখের নিচে। কিন্তু ২০১০ সালের পর মাত্র এক দশকে সেই সংখ্যা একলাফে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা বেড়ে ৮০ লাখে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার জন্য বাড়তি রুট ও ফ্লাইট দরকার হবে। বর্ধিত চাহিদা পূরণে ফ্লাইটসংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন রুট চালু করতে চায় বিমান। দেড় দশক পর ইতালিতে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বিমান। এর মধ্যে দেড় যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটেও আবার ফ্লাইট চালুর প্রচেষ্টা চলছে।
এজন্য বিমান নতুন এয়ারক্রাফট কিনবে। এখন বিমানের বহরে এয়ারবাসের কোনো উড়োজাহাজ নেই। সর্বশেষ ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ামোস এয়ারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া এয়ারবাসের এ৩৩০-২০০ উড়োজাহাজ চলত। সেটা ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফেরত দেওয়া হয়।
বিমানের বহরে মোট ২১টি উড়োজাহাজের সবই বোয়িংয়ের তৈরি। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৮, ছয়টি বোয়িং ৭৮৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০। এসব উড়োজাহাজ দিয়ে বিমান ৭টি অভ্যন্তরীণ ও ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহন করে। বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ১০টি উড়োজাহাজ কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
সেই সুযোগ নিয়ে এয়ারবাস বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী বছরে এই আলোচনা বেশ জোরেশোরেই চলছিল। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে এয়ারবাস কেনার আশ্বাস দেয় সরকার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রও বোয়িং বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এয়ারবাস কেনার চুক্তির আশ্বাস দিলেও বোয়িং কেনার কথাও বিবেচনা করতে পারে বিমান।

বিমান কি বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে?
চলতি বছরের শুরুতে এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত হলেও বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাবও বিবেচনায় রেখেছে বিমান। উভয় নির্মাতাই জোর উদ্যোগে উড়োজাহাজ বিক্রির অর্ডার পেতে জোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি টেবিলে প্রলোভনের নানা প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেছেন, উভয়ের (বোয়িং ও এয়ারবাস) প্রস্তাব বিমানের বিবেচনায় আছে। এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে লাভজনক হওয়ার লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে এয়ারক্রাফটের সুবিধাজনক দাম, বাড়তি সহায়তা ও সুবিধা বিবেচনা করবে বিমান।
বিমান বলছে, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে নতুন রুট চালুর লক্ষ্য নিয়ে আগামী বছরগুলোতে বিমান নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে আগ্রহী। মহামারির পর ভ্রমণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াইড-বডি এয়ারক্রাফট বাড়াতে চায় বিমান। ৫১ বছর বয়সী বিমান বাংলাদেশের বহরে থাকা সব উড়োজাহাজ বোয়িং কোম্পানির। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ওয়াইড-বডি এয়ারক্র্যাফট, কিছু আছে ড্যাশ-৮ টার্বোপ্রোস।
গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে এসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ দুটি এ৩৫০এফ উড়োজাহাজসহ ১০টি এয়ারবাস এ৩৫০ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউরোপীয় উড়োজাহাজ কোম্পানির ওপর আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এয়ারবাসের ১০টি এ৩৫০ উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।’
সদ্য সাবেক বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বেশ জোর দিয়েই বলে আসছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ থেকে দুটি এয়ারবাস উড়োজাহাজের ক্রয়াদেশ দেওয়া হতে পারে। কয়েক ধাপে ১০টি উড়োজাহাজ কেনা হবে; কারিগরি কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব উড়োজাহাজ নতুন এবং পুরোনো রুটে চলাচল করবে। সব দেশের বহরেই বোয়িং এবং এয়ারবাসের উড়োজাহাজ আছে। কিন্তু আমাদের শুধু বোয়িং আছে, এয়ারবাসের একটি উড়োজাহাজও নেই।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে আরও বোয়িং বিক্রির চেষ্টা করছে। গত বছরের শেষ দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর আশ্বাস দেন। তখন তিনি বোয়িং থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দেন। বিষয়টি নিয়ে তার পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকের সময় তদ্বিরের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার সরাসরি ফ্লাইট চালুর যে চেষ্টা করছে, যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট না হলে তা সম্ভব নয়। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তরের অনুমোদন এবং এর আগে দেশটির ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সব মানদণ্ড পূরণ না হলে ওই ছাড়পত্র পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশ সোচ্চার ছিল। ভোটের কয়েক মাস আগে দেশটি ভিসা নীতি আরোপ করে। এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়। তবে এর আওতায় কারও ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এই কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুর বেশ নরম হয়েছে।
এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন বিশ্লেষকেরা। কেউ কেউ মনে করছেন, বাইরে সরকারের তীব্র সমালোচনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে হয়তো কোনো সমঝোতা হয়েছে। সেটা যা-ই হোক, বেসামরিক বিমান চলাচল খাতকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক উন্নত করার একটা সম্ভাবনা দৃশ্যমান হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বোয়িংকে একেবারে ছেড়ে দিয়ে এয়ারবাসের কাছে না-ও ভিড়তে পারে সরকার। তা ছাড়া বোয়িংয়ের আরও কিছু সুবিধা আছে।
বোয়িং বনাম এয়ারবাস: কার কী প্রস্তাব
এখন বিমানের বহরে চারটি ৭৮৭-৮ ও দুটি ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ আছে। এর মধ্যেই আকর্ষণীয় ছাড় দিয়ে বোয়িং আরও একটি ৭৮৭ কার্গোবাহী ড্রিমলাইনার বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। এখন বিমানের কোনো কার্গোবাহী উড়োজাহাজ নেই। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়াতে এবং দখল বাড়াতে বিমানের পণ্যবাহী উড়োজাহাজও লাগবে।
এ ছাড়া বোয়িং-নির্ভর বহরের উচ্চ সাশ্রয় সক্ষমতার কথা তুলে ধরে বিমানকে বোঝানোর চেষ্টা করছে মার্কিন কোম্পানিটি। বোয়িং বলছে, এয়ারবাস থেকে নতুন উড়োজাহাজ কিনলে বিমানকে নতুন প্রযুক্তিগত দল, পাইলট ও সিমুলেটরের জন্য বাড়তি খরচ করতে হবে। এর ফলে বিমানের পরিচালন খরচ বাড়বে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এয়ারবাস। এয়ারবাস পরিচালনায় সক্ষম জনবল তৈরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির (বিএসএমআরএএউ) সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। শিক্ষাক্রম, উপকরণ এবং পাঠ্যক্রম সাজাতে সহায়তা করবে এয়ারবাস। লালমনিরহাটের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এয়ারবাসের প্রশিক্ষকদের দিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পাইলট ও প্রকৌশলীদের ক্লাসরুম প্রশিক্ষণের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায়ও সহায়তার পরিকল্পনা আছে তাদের।
গত বছর মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন সামিটে বিমানের সঙ্গে দেনদরবার করেছে এয়ারবাস। এমনকি বিমানকে রাজি করাতে একটি উড়োজাহাজ প্রদর্শনীর জন্য এনে দেখানোও হয়। এর পরে বিমানকে এয়ারবাস কেনায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণসহায়তা দিতে যুক্তরাজ্যের ইউকে এক্সপোর্ট ফাইন্যান্স স্কিমের সঙ্গে বিশেষ চুক্তিও হয়।
তবে বাংলাদেশে নির্বাচন এবং বোয়িং ও মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে দেনদরবারের মধ্যে এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কেনা নিয়ে বিমানের নতুন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে আপাতত যে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে না, তা সরকার এরই মধ্যে ফ্রান্সকে জানিয়ে দিয়েছে। এর জন্য অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
গত ২৫ জানুয়ারি ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উপযোগী হলেই কেবল ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস কেনা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে (ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে)। এটি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরেও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ইকোনমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারব।’
যখনই হোক না কেন, আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় বিমানকে লাভজনক করতে হলে আরও উড়োজাহাজ কিনতেই হবে। এখন বিমান বোয়িংয়ের সঙ্গেই থাকবে নাকি এয়ারবাসকেও সঙ্গে নেবে। শেষ হাসি হাসবে কে—এয়ারবাস না বোয়িং, নাকি উভয়ে—তাই দেখার অপেক্ষা।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ...
১৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০ ঘণ্টা আগে
ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগে
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় হলেও বাস্তব অগ্রগতি একেবারেই হতাশাজনক।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর—এই পাঁচ মাসে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ১১.৭৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প যেন এগোচ্ছেই না। সরকারি তহবিল, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন—প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন ব্যয়ের এ তিন উৎসের প্রতিটিতেই যেন মন্থরতা লক্ষণীয়।
শুধু অর্থবছরের সার্বিক পরিস্থিতিই নয়, এডিপির মাসওয়ারি অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নভেম্বর মাসের তথ্য আরও চিন্তার। এই এক মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ হাজার ১৬৫ কোটি টাকার মতো, যেখানে আগের বছরের নভেম্বরেই ব্যয় ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এক মাসেই ব্যয় কমে গেছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রগতির হার মাত্র ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধীরগতি কোনো স্বাভাবিক মৌসুমি প্রবণতা নয়; বরং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার ভেতরে জমে থাকা নানা অচলাবস্থার ফল।
প্রকল্প অনুমোদনে বিলম্ব, টেন্ডারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া, দক্ষ ঠিকাদারের অভাব, মাঠপর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগগুলোর সংকোচন—এসব মিলেই উন্নয়ন ব্যয় জমে থাকছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে তৈরি হওয়া মন্থরতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা। আইএমইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে পুরো প্রশাসনিক কাঠামো একধরনের অচল অবস্থায় ছিল, যার ধাক্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।
মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ব্যয়ে বৈষম্যও স্পষ্ট। বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সংসদবিষয়ক সচিবালয় মন্ত্রণালয় পাঁচ মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। কিছু বিভাগ অগ্রগতি দেখালেও, তা সমগ্র চিত্র বদলে দেওয়ার মতো নয়। বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ ১৩২.৭৮ শতাংশ ব্যয় করেছে, যা বরাদ্দের চেয়েও বেশি ব্যয়—এটি চলমান প্রকল্পগুলোর প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইএমইডির মতে, প্রকৃত ব্যয় ও আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যকার এ ধরনের ব্যবধান ভবিষ্যতে প্রকল্প মূল্যায়নকে আরও জটিল করে তুলবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলছেন, ‘বাস্তবায়নের হার স্পষ্টতই কম। শুধু সংখ্যা নয়, কেন এই অবস্থা, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন থাকায় ব্যবস্থাপনায় আরও ধীরতা দেখা দিতে পারে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত কিছুটা ধীরতা দেখা গেলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। নির্বাচনকালীন প্রশাসন সাধারণত ঝুঁকিনির্ভর হয় না, ফলে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
সব মিলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক দ্বিধা এবং মাঠপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণহীনতা মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, তা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন—এমনটি ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনের ভেতরেও।
চলতি অর্থবছরে এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম পাঁচ মাসে যে গতি দেখা গেছে, তাতে বছরের শেষে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন এখন আরও তীব্র হয়ে উঠছে।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় হলেও বাস্তব অগ্রগতি একেবারেই হতাশাজনক।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর—এই পাঁচ মাসে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ১১.৭৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প যেন এগোচ্ছেই না। সরকারি তহবিল, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন—প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন ব্যয়ের এ তিন উৎসের প্রতিটিতেই যেন মন্থরতা লক্ষণীয়।
শুধু অর্থবছরের সার্বিক পরিস্থিতিই নয়, এডিপির মাসওয়ারি অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নভেম্বর মাসের তথ্য আরও চিন্তার। এই এক মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ হাজার ১৬৫ কোটি টাকার মতো, যেখানে আগের বছরের নভেম্বরেই ব্যয় ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এক মাসেই ব্যয় কমে গেছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রগতির হার মাত্র ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধীরগতি কোনো স্বাভাবিক মৌসুমি প্রবণতা নয়; বরং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার ভেতরে জমে থাকা নানা অচলাবস্থার ফল।
প্রকল্প অনুমোদনে বিলম্ব, টেন্ডারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া, দক্ষ ঠিকাদারের অভাব, মাঠপর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগগুলোর সংকোচন—এসব মিলেই উন্নয়ন ব্যয় জমে থাকছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে তৈরি হওয়া মন্থরতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা। আইএমইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে পুরো প্রশাসনিক কাঠামো একধরনের অচল অবস্থায় ছিল, যার ধাক্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।
মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ব্যয়ে বৈষম্যও স্পষ্ট। বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সংসদবিষয়ক সচিবালয় মন্ত্রণালয় পাঁচ মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। কিছু বিভাগ অগ্রগতি দেখালেও, তা সমগ্র চিত্র বদলে দেওয়ার মতো নয়। বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ ১৩২.৭৮ শতাংশ ব্যয় করেছে, যা বরাদ্দের চেয়েও বেশি ব্যয়—এটি চলমান প্রকল্পগুলোর প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইএমইডির মতে, প্রকৃত ব্যয় ও আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যকার এ ধরনের ব্যবধান ভবিষ্যতে প্রকল্প মূল্যায়নকে আরও জটিল করে তুলবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলছেন, ‘বাস্তবায়নের হার স্পষ্টতই কম। শুধু সংখ্যা নয়, কেন এই অবস্থা, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন থাকায় ব্যবস্থাপনায় আরও ধীরতা দেখা দিতে পারে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত কিছুটা ধীরতা দেখা গেলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। নির্বাচনকালীন প্রশাসন সাধারণত ঝুঁকিনির্ভর হয় না, ফলে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
সব মিলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক দ্বিধা এবং মাঠপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণহীনতা মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, তা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন—এমনটি ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনের ভেতরেও।
চলতি অর্থবছরে এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম পাঁচ মাসে যে গতি দেখা গেছে, তাতে বছরের শেষে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন এখন আরও তীব্র হয়ে উঠছে।

এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করেও মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব বিবেচনা করছে বিমান। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য, সবগুলো উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। সেই বহরে একই ধরনের উড়োজাহাজের অন্তর্ভুক্তি যে ব্যয়সাশ্রয়ী হবে, তা বোঝানোর চেষ্টায় আছে বোয়িং। সে স
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০ ঘণ্টা আগে
ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগে
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে রুপি ৩৬ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ১৪-এ পৌঁছায়, যা ইতিহাসের সর্বনিম্ন, পরে সামান্য পুনরুদ্ধার হয়। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে এবং ডলারের শক্তি কিছুটা কমেছে, তারপরও রুপির পতন অব্যাহত রয়েছে।
গত ১০টি লেনদেনের দিনে রুপি ৯০ থেকে ৯১-এর মধ্যে ওঠানামা করেছে। শুধু গত পাঁচ দিনে রুপির মান ডলারের তুলনায় ১ শতাংশ কমেছে। মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দাম চলতি মাসে ৯২ ছাড়িয়ে যাবে।
আজ মঙ্গলবার আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা রুপি ৯০ দশমিক ৮৭ থেকে লেনদেন শুরু হয়। পরে ৯০ দশমিক ৭৬ থেকে ৯১ দশমিক ১৪-এর মধ্যে ওঠানামা করে। শেষে ৯১ দশমিক ০১-এ বন্ধ হয়। গত সোমবার রুপি ৯০ দশমিক ৭৮-এ বন্ধ হয়েছিল, যা আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়সা কম।
ফিনরেক্স ট্রেজারি অ্যাডভাইজার্সের হেড অব ট্রেজারি অনিল কুমার বানসালি বলেন, ‘ডলারের ক্রয় অব্যাহত থাকায় রুপি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের নতুন বাণিজ্য প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় চুক্তি স্থগিত রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে রুপি ৩৬ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ১৪-এ পৌঁছায়, যা ইতিহাসের সর্বনিম্ন, পরে সামান্য পুনরুদ্ধার হয়। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে এবং ডলারের শক্তি কিছুটা কমেছে, তারপরও রুপির পতন অব্যাহত রয়েছে।
গত ১০টি লেনদেনের দিনে রুপি ৯০ থেকে ৯১-এর মধ্যে ওঠানামা করেছে। শুধু গত পাঁচ দিনে রুপির মান ডলারের তুলনায় ১ শতাংশ কমেছে। মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দাম চলতি মাসে ৯২ ছাড়িয়ে যাবে।
আজ মঙ্গলবার আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা রুপি ৯০ দশমিক ৮৭ থেকে লেনদেন শুরু হয়। পরে ৯০ দশমিক ৭৬ থেকে ৯১ দশমিক ১৪-এর মধ্যে ওঠানামা করে। শেষে ৯১ দশমিক ০১-এ বন্ধ হয়। গত সোমবার রুপি ৯০ দশমিক ৭৮-এ বন্ধ হয়েছিল, যা আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়সা কম।
ফিনরেক্স ট্রেজারি অ্যাডভাইজার্সের হেড অব ট্রেজারি অনিল কুমার বানসালি বলেন, ‘ডলারের ক্রয় অব্যাহত থাকায় রুপি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের নতুন বাণিজ্য প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় চুক্তি স্থগিত রয়েছে।’

এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করেও মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব বিবেচনা করছে বিমান। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য, সবগুলো উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। সেই বহরে একই ধরনের উড়োজাহাজের অন্তর্ভুক্তি যে ব্যয়সাশ্রয়ী হবে, তা বোঝানোর চেষ্টায় আছে বোয়িং। সে স
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগে
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।
পেপ্যালের প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স ক্রিস বলেন, ‘পুঁজির নিরাপত্তা ছোট ব্যবসাগুলোর বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা। পেপ্যাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা ছোট ব্যবসার উন্নয়ন এবং মার্কিন অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।’
১৯৯৮ সালে ইলন মাস্ক ও পিটার থিয়েল পেপ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি গ্রাহককে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। মার্কিন ব্যাংকিং লাইসেন্স পাওয়ার পর কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে গ্রাহকের আমানতকে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে বিমার আওতায় আনতে পারবে।
পেপ্যালের আবেদন এসেছে এমন সময়ে, যখন একাধিক ক্রিপ্টো কোম্পানি এবং নিওব্যাংক এই বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সুবিধা নিয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং খাতে প্রবেশের সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা করছে। এ বছরের মধ্যে নুবাঙ্ক, কয়েনবেসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং চার্টারের জন্য আবেদন করেছে।

ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।
পেপ্যালের প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স ক্রিস বলেন, ‘পুঁজির নিরাপত্তা ছোট ব্যবসাগুলোর বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা। পেপ্যাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা ছোট ব্যবসার উন্নয়ন এবং মার্কিন অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।’
১৯৯৮ সালে ইলন মাস্ক ও পিটার থিয়েল পেপ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি গ্রাহককে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। মার্কিন ব্যাংকিং লাইসেন্স পাওয়ার পর কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে গ্রাহকের আমানতকে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে বিমার আওতায় আনতে পারবে।
পেপ্যালের আবেদন এসেছে এমন সময়ে, যখন একাধিক ক্রিপ্টো কোম্পানি এবং নিওব্যাংক এই বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সুবিধা নিয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং খাতে প্রবেশের সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা করছে। এ বছরের মধ্যে নুবাঙ্ক, কয়েনবেসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং চার্টারের জন্য আবেদন করেছে।

এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করেও মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব বিবেচনা করছে বিমান। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য, সবগুলো উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। সেই বহরে একই ধরনের উড়োজাহাজের অন্তর্ভুক্তি যে ব্যয়সাশ্রয়ী হবে, তা বোঝানোর চেষ্টায় আছে বোয়িং। সে স
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ...
১৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০ ঘণ্টা আগে
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

এয়ারবাসের সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করেও মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব বিবেচনা করছে বিমান। বিমানের বহরে বোয়িংয়ের একচ্ছত্র আধিপত্য, সবগুলো উড়োজাহাজই এই মার্কিন কোম্পানির তৈরি। সেই বহরে একই ধরনের উড়োজাহাজের অন্তর্ভুক্তি যে ব্যয়সাশ্রয়ী হবে, তা বোঝানোর চেষ্টায় আছে বোয়িং। সে স
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ...
১৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০ ঘণ্টা আগে
ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগে