মূল্যস্ফীতির চাপে নতুন দরিদ্র ৭৮ লাখ মানুষ: গবেষণা প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১: ৩০
প্রতীকী ছবি

ব্যাপক মূল্যস্ফীতির কারণে দেশে নতুন করে ৭৮ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়েছে। একই সঙ্গে ৯৮ লাখ ৩০ হাজার মানুষ অতিমাত্রায় দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‍্যাপিড) এক কর্মশালায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সাংবাদিকদের জন্য কর্মশালাটি পরিচালিত হয়।

র‍্যাপিড চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট গবেষণাটি উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‍্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ, গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ দ্বীন ইসলামসহ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা।

গবেষণায় বলা হয়, মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে গত দুই বছরে মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট আয় দিয়ে তারা আগের তুলনায় কম দ্রব্য বা সেবা কিনতে পারছে। এতে করে ৭৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে এসেছে। অতি দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে পড়েছে প্রায় এক কোটি মানুষ। এ ছাড়া ৩৮ লাখ মানুষ দরিদ্র থেকে হতদরিদ্র শ্রেণিতে নেমে এসেছে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েছে সব মিলিয়ে ২ কোটির বেশি মানুষ।

র‍্যাপিড চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, দারিদ্র্য যে হারে বেড়েছে, প্রকৃত মজুরি সে হারে বাড়েনি। ফলে দারিদ্র্য ও এর ঝুঁকি বেড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নীতি, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি অতিমাত্রায় বেড়েছে অতিরিক্ত টাকা সরবরাহের কারণে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে র‍্যাপিড চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অবাস্তব বাজেট প্রস্তাব করেছিল। এটা সংশোধন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান বাজেটের আকার কমিয়ে দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি করতে পারে।

ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত সংশোধন করা হলেও ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়া সম্ভব। কারণ, এ জন্য জাতিসংঘের তিনটি শর্ত বাংলাদেশ পূরণ করেছে। তবে যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করে জাতিসংঘের কাছে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা যায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মূল্যস্ফীতির প্রকৃত তথ্য না দেখিয়ে কম দেখানো হতো। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সব খাতে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। এখন প্রকৃত তথ্য দেখাতে গেলে মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে। সমালোচনা হয় যে আমরা মূল্যস্ফীতি কমাতে পারছি না।’

শফিকুল আলম বলেন, এলডিসি থেকে আসন্ন উত্তরণ নিয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিশ্লেষণ করে যা সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক হবে, সরকার সেদিকে যাবে। উত্তরণের বিষয়টি পেছানোর অনুরোধ করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

গবেষণার বিষয়ে ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, এই সরকারকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। না হলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে। দ্রুত মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার সরকার মূল্যস্ফীতি ৭০ শতাংশ কমিয়েছে। কাঠামোগত সংস্কার এবং আর্থিক নিয়মের মধ্যে থাকলেই মূল্যস্ফীতি কমবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত