যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানিতে রপ্তানি কমছে, কারণ খুঁজছে সরকার

ফারুক মেহেদী, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ২১
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ২৬

পোশাকের শীর্ষ বাজারগুলোতে রপ্তানি কমায় অস্থিরতা সরকারের ভেতরে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে রপ্তানি নেতিবাচক হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে।

কেন এসব বাজারে অব্যাহতভাবে রপ্তানি কমছে, তার কারণ খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি পোশাকের বাইরে ভেনামি চিংড়ি, চামড়া, ফলমূল, শাকসবজির রপ্তানি বাড়াতে বহুমুখী কর্মপরিকল্পনাও তৈরি করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এ জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত রপ্তানি বাড়ানোসংক্রান্ত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এমন কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। এসব সিদ্ধান্তসংক্রান্ত প্রতিবেদনটি ২২ জানুয়ারি বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান, এনবিআর চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্রসচিবসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে রপ্তানি কমছে। এ দুটো দেশ ছাড়াও আরও শীর্ষ ৮টি বাজারেও রপ্তানি কমার ধারা অব্যাহত রয়েছে। এটিই ভাবিয়ে তুলছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাবনাময় হিসেবে নতুন বাজার সৌদি আরব, জাপানসহ এ রকম আরও কয়েকটি বাজারের দিকে নজর বাড়ানোর কথা বলছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একদিকে নতুন নতুন বাজারের প্রসার, অন্যদিকে পোশাক ছাড়াও অন্য পণ্যে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে ভেনামি চিংড়ি, চামড়া ও চামড়াজাতীয় পণ্য, তাজা শাকসবজি, হোম টেক্সটাইল পণ্য ইত্যাদি। এসব পণ্য রপ্তানিতে নানা সমস্যা ও সংকট রয়েছে। এগুলোর সমাধান করে কীভাবে রপ্তানি বাড়ানো যায়, সেই কর্মপরিকল্পনা করতে বলেছে মন্ত্রণালয়।

এসব বিষয়ে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বড় বাজারে রপ্তানি কমছে। কেন কমছে, তা খুঁজে বের করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া পোশাকের বাইরেও অন্য যেসব সম্ভাবনাময় পণ্য রয়েছে, সেগুলোর রপ্তানি কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ও সিদ্ধান্ত নিয়ে তৈরি একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভেনামি চিংড়ি রপ্তানির বড় সম্ভাবনার খাত। এ চিংড়ির পরীক্ষামূলক রপ্তানিতে সাফল্য এসেছে। মোট ৯টি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারা উৎপাদনও শুরু হয়েছে। পাইকগাছা থেকে ভেনামি চিংড়ি মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানিও হয়েছে। সামনে ব্যাপক হারে কীভাবে রপ্তানি করা যায়, সে বিষয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।

সৌদি আরবের সঙ্গে রপ্তানি বাড়াতে দেশটির ফুড অ্যান্ড ড্রাগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে বাংলাদেশ মিশনকে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সৌদিতে ৩০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে জানিয়ে বলা হয়, দেশটিতে সি ফিশ ও মিঠা পানির মাছ রপ্তানির ভালো সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
চীনের রপ্তানি বাড়াতে দেশটির ইন্সপেকশন অ্যান্ড কোয়ারান্টিন কর্তৃপক্ষের কিছু শর্ত রয়েছে। এসব শর্ত বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে। এগুলো যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন করে চীনে রপ্তানি ত্বরান্বিত করা যায়, সেই তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

জাপানে বাংলাদেশের নিট পোশাকের বেশ চাহিদা রয়েছে। সেখানের ইকো-ম্যানুফ্যাকচারিং এবং সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স পরিপালন করে রপ্তানি বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

তাজা শাকসবজি রপ্তানির জন্য দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রপ্তানিকারকদের ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত