পুরোনো দেনা নিষ্পত্তি না করে নতুন অফারের ঘোষণা ইভ্যালির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি গ্রাহকদের পুরোনো দেনা নিষ্পত্তি না করে ‘বিগ ব্যাং’ নামের নতুন অফারের ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা সম্পর্কিত বিষয় ও অফারের বিস্তারিত নিয়ে আগামীকাল শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভে আসবেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মাদ রাসেল। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইভ্যালির ইতিহাসে ‘বিগ ব্যাং’ হবে সবচেয়ে বড় আয়োজন। ‘বিগ ব্যাং’ অফারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে স্যামসাং, মিনিস্টার, যমুনা, ইউনিলিভার, টিকে গ্রুপ, সেনা, তীর, নকিয়ার মত দেশ সেরা প্রতিষ্ঠান। গ্রাহক যে কোনো পণ্য অর্ডার দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ই-কুরিয়ারের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। এখানে সকল পণ্য সিওডিতে (ক্যাশ অন ডেলিভারি) পাওয়া যাবে। গ্রাহক আগে পণ্য বুঝে পাবে এরপর টাকা পেমেন্ট দেবে। ফলে গ্রাহক ঝামেলামুক্ত হয়ে তাঁর কাঙ্ক্ষিত সেরা পণ্যটি দ্রুত পেয়ে যাবে। মূলত ইভ্যালিতে যেসব অর্ডার আসবে সেগুলো দেখে মার্চেন্ট সরাসরি ই-কুরিয়ারের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছে দেবে। ই-কুরিয়ার পণ্যের টাকা পেয়ে সেগুলো মার্চেন্টকে পেমেন্ট দেবে। ইভ্যালি শুধুমাত্র তার লভ্যাংশ মার্চেন্ট থেকে পেয়ে যাবে।

নতুন ক্যাম্পেইন সম্পর্কে মোহাম্মাদ রাসেল বলেন, গ্রাহকদের সেরা অফার দেওয়ার জন্য আমাদের সরবরাহকারীরা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেছেন। ইতিমধ্যে কয়েক’শ সেলার তাদের অফারের কথা জানিয়েছেন। দীর্ঘ সময়ের এই দূরত্ব কেবল ইভ্যালির ‘বিগ ব্যাং’ অফারের মাধ্যমে ঘোচানো যাবে। 

ইভ্যালির বিরুদ্ধে কয়েক হাজার গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। এরপর প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। শর্ত সাপেক্ষে গত ৬ এপ্রিল শামীমা নাসরিন জামিনে মুক্ত হন। এরপর বিভিন্ন গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকার মধ্য থেকে ইভ্যালির ২ হাজার ৮৮২ জন গ্রাহককে মোট ১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন গেটওয়েতে ইভ্যালির গ্রাহকদের ২৫ কোটি টাকার মতো আটকে ছিল। নগদ-এর কাছে ১৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, বিকাশের কাছে ৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা, এবং এসএসএল কমার্সের কাছে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা আটকে ছিল। এর মধ্যে নগদ হতে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা, বিকাশ থেকে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং এসএসএল থেকে ২১ লাখ টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়েছে। 

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ইভ্যালি আগেই গ্রাহকদের আস্থা হারিয়েছে। গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আবার নতুন করে তারা গ্রাহকদের কাছে প্রস্তাব (অফার) নিয়ে এসেছে। আমার মনে হয়, তাদের আরও কিছুটা সময় পর্যবেক্ষণে রাখার দরকার ছিল। অন্যথায় গ্রাহকেরা নতুন করে প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হতে পারে। দেনা নিষ্পত্তি না করে ইভ্যালি যে অপরাধটা করেছে সেটার আগে সমাধান হওয়া উচিত ছিল, শাস্তির দরকার ছিল। সেটা না করে তাদের নতুন করে সুযোগ করে দেওয়ার ফলে অপরাধীরা উৎসাহিত হবে। ই-কমার্সের ব্যবসা-বাণিজ্য আবারও ফটকা ব্যবসায় পরিণত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত