ডলারের ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে সহায়তার আশ্বাস আইএমএফের

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮: ৩৮

ডলার-সংকট কাটাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতেই বারবার হোঁচট খাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলার রেট সময়ে সময়ে বেঁধে দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে সীমা বেঁধে দিয়ে ডলারের রেট নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে; যার মডেল বাস্তবায়ন ও কারিগরি সহায়তা দিতে আইএমএফ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুম বৈঠকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দ এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ডলারের রেট বাজারভিত্তিক করার জন্য আইএমএফ তাগাদা দিলেও বাস্তবায়ন সম্ভব না। এ জন্য বাজারভিত্তিকের কাছাকাছি পদ্ধতিকে সহায়তা দিতে সম্মতি দিচ্ছে। তবে বিকল্প আরও উন্নত পদ্ধতি খোঁজার তাগাদাও অব্যাহত রেখেছে আইএমএফ। ফেব্রুয়ারিতে সংস্থাটির কারিগরি দল বাংলাদেশে আসবে। আর ঋণের তৃতীয় কিস্তির ছাড়ের জন্য একটি মিশন মার্চে দেশে আসবে। তাদের সঙ্গে সংস্কার ও ঋণের শর্ত নিয়ে বিশদ আলোচনা হতে পারে।

সূত্র জানায়, ডলারের বাজার অস্থিরতার নেপথ্যে কারণ নিয়ে চুলচেরা পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান প্রায় ২৭ শতাংশ কমেছে। একাধারে ডলারের বিপরীতে টাকার মান অবমূল্যায়নের সুযোগ নিয়ে বিশেষ গোষ্ঠী ও কিছু এক্সচেঞ্জ হাউস কম দামের কেনা ডলার মজুত করে বেশি দামে বিক্রি করে অস্বাভাবিক মুনাফা করছে। আবার প্রবাসীদের একটা অংশও বিলম্বে দেশে ডলার পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২২ নভেম্বর থেকে তৃতীয় দফায় ডলারের দাম এক টাকা কমিয়েছে। তবে সব সময় ডলারের দর কমানো সম্ভব নয়। এটাকে আইওয়াশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, জ্বালানিসহ নিত্যপণের খরচ মেটাতে ডলার বিক্রি করা হয়। এটা দেশের বৃহৎ স্বার্থেই করা হচ্ছে। যখন ব্যাংকগুলোর পর্যাপ্ত ডলার থাকবে, তখন ডলার বিক্রি করা হবে না। প্রয়োজনে কেনাও যেতে পারে। যেমন করোনার পর ডলার ক্রয় করা হয়েছিল।

অর্থনীতির ভাষায় ক্রলিং পেগ হলো নিজের দেশের মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি; যেখানে একটি নির্দিষ্ট বিনিময় হারসহ একটি মুদ্রাকে একটি সীমার মধ্যে ওঠানামা করার অনুমতি দেওয়া হয়। অস্থিরতার সময় দেশীয় মুদ্রার মূল্য এবং হারের সীমাও ঘন ঘন সমন্বয় করা হয়। এখানে মুদ্রার রেটের একটি সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে ডলারের রেট নির্ধারণে বিশেষ দল কাজ করছে। মূলত ক্রলিং পেগ পদ্ধতির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়িত হলে ডলারের বাজারে স্বস্তি ফিরতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানা গেছে, ডলারের দরে লাগাম টানতে গত বুধবার ২৫ পয়সা এবং ২৯ নভেম্বর ডলারের দর ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত