তিক্ততার মধ্যেও মালদ্বীপের অর্থনীতি বাঁচাতে ঋণের আশায় ভারত সফরে মুইজ্জু

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৮: ১৪
Thumbnail image

সম্পর্কের টানাপোড়েন সত্ত্বেও অর্থনীতি বাঁচাতে ভারতের কাছে ঋণসহায়তা চাইছে মালদ্বীপ। এ লক্ষ্যে দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু আজ রোববার (৬ অক্টোবর) দিল্লি পৌঁছেছেন। গত বছরের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই তাঁর প্রথম ভারত সফর। 

পাঁচ দিনব্যাপী এই রাষ্ট্রীয় সফরে এসে মুইজ্জু বিবিসিকে বলেছেন, এই অর্থনৈতিক সংকটে ভারত সাহায্যের হাত বাড়াবে বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী। 

ধারণা করা হচ্ছে, অর্থনীতি বাঁচাতে ভারতের কাছে কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণসহায়তার জন্য অনুরোধ জানাবেন মইজ্জু। 

গত মাসে (সেপ্টেম্বর) মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অর্থ দিয়ে দেড় মাসের আমদানির খরচ মেটানো সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে ভারত ‘বেল আউট’ দিলে তা মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করবে। 

 ‘বেল আউট’ হচ্ছে দেনার দায়ে বা মূলধন সংকটে পড়ে দেউলিয়া হওয়ার পথে কোনো দেশ বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের তরফে আর্থিক সহায়তা করা। 

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, নির্বাচনের সময় ‘ভারত বিদায়’ নীতির প্রচারণা চালিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মইজ্জু। আর এখন তাঁর এই ভারতমুখী সুর সম্পর্কে কী বলছেন তিনি?

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘ভারত আমাদের আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। আমাদের অন্যতম বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে তাঁরা সর্বদা আমাদের বোঝা হ্রাস করতে, চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য উত্তম বিকল্প এবং সমাধান খুঁজতে প্রস্তুত।’ 

আজ রোববার দিল্লিতে পৌঁছান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। ছবি: সংগৃহীত বিগত নির্বাচনে ভারতবিরোধী প্রচার নিয়ে সরাসরি কোনো কথা না বলে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, যেকোনো মতবিরোধ উন্মুক্ত আলোচনা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।’ 

গত মাসে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডিস মালদ্বীপের ক্রেডিট রেটিং (ঋণমান) কমিয়ে দেয়। সংস্থাটি বলে, মালদ্বীপের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাস্তবিক অর্থে বেড়েছে। মুডি বলেছে, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সরকারি বাহ্যিক ঋণের চেয়ে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারেরও কম এবং ২০২৫ ও ২০২৬ সালে এটি বেড়ে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে।’ 

এই রিজার্ভ সংকট মোকাবিলার জন্য মুইজ্জু কোথায় থেকে অর্থসহায়তা পাবেন, তা স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে তুরস্ক ও চীন সফর করেছেন মুইজ্জু। বিশেষ করে গত জানুয়ারিতে মুইজ্জু চীন সফরে গেলে সেটিকে ভালোভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। বিষয়টিকে বড় ধরনের কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখেছিল নয়াদিল্লি। কারণ, মালদ্বীপের পূর্ববর্তী নেতারা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য নয়াদিল্লিকেই বেছে নেওয়ার রেওয়াজ। 

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত প্রায় ১ হাজার ২০০টি প্রবালদ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ গঠিত। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার। ছোট দ্বীপরাষ্ট্রটি বেশির ভাগ খাদ্য, অবকাঠামো নির্মাণ ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিশাল প্রতিবেশী দেশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল। 

এ কারণেই মুইজ্জুর এই দিল্লি সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, ভারত এরই মধ্যে মালদ্বীপের বিভিন্ন অবকাঠামো এবং উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত