আমরা মঙ্গলজনক অবস্থানে নেই, তবে এই মুহূর্তে ভালো বিকল্পও নেই: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ২৩: ৪৯

বর্তমান সরকার দারিদ্র্য পুরোপুরি মোকাবিলা করতে না পারলেও অনেক কমিয়ে এনেছে। বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘসহ অন্যান্য সকল সংস্থার প্রতিবেদনেই বাংলাদেশের দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তাঁর জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন। এই মুহূর্তে খুব ভালো অবস্থানে না থাকলেও এর চেয়ে ভালো বিকল্পও নেই। 

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক আয়োজিত ‘এসডিজি কন্ট্রিবিউশন ভলান্টারি রিপোর্ট-২০২৩’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা বলেন। 

এম এ মান্নান বলেন, ‘দারিদ্র্যকে মোকাবিলা করার সক্ষমতা আমাদের আছে। পুরোপুরি না পারলেও আমরা ইতিমধ্যেই অনেক কমিয়ে এনেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দারিদ্র্যদের প্রতি স্নেহ, ভালোবাসা, দায়িত্ববোধটা আছে। তিনি তার জায়গা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন। একজন নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, এই মুহূর্তে আমরা মঙ্গলজনক অবস্থানে নেই কিন্তু এর চেয়ে ভালো বিকল্প নেই এই মুহূর্তে। যেটুকু পেয়েছি সেটুকুও টিকবে না যদি ছোবলটা চলে আসে। যে প্রতিক্রিয়ার ছোবল আমি চারদিকে দেখছি।’ 

তিনি বলেন, দারিদ্র্য শুধু অর্থের অভাব নয়, কেন অর্থের অভাব এগুলোও বিচার করা দরকার। দরিদ্রদের অবহেলা, বৈষম্য, কিছু বিধি-বিধান দরিদ্রদের সহায়ক নয় বরং তাদের আরও দাবিয়ে রাখার উপাদান আছে। বৈষম্য বাড়ছে স্বীকার করে নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বৈষম্য অবশ্যই পীড়াদায়ক। তবে এর বিকল্পে যদি আরও ভয়ংকর রকমের নিপীড়ন হয়, ক্ষুধা, দারিদ্র্য হয় তবে সেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।’ 

ব্র্যাকের চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আজকের এবং আগামীর বিশ্ব যারা সক্ষমতার সঙ্গে দাঁড়াবে তাদের জন্য। বাংলাদেশের মতো দেশে গুরুত্ব দেওয়ার মতো অনেক বিষয় আছে তবে মানুষের যেটা প্রয়োজন সেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ 

সংকট সমাধান এবং উপাত্ত বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে আরও কৌশলী হতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠী শুধুমাত্র প্রান্তিক এলাকাতেই নয় বরং মেগাসিটিতেও প্রান্তিক, সুবিধাবঞ্চিত মানুষ থাকতে পারে। প্রান্তিক এলাকার সমস্যা সমাধানের উপায় আর এখানের সমস্যা একই উপায়ে সমাধান করা যাবে না।’ 

তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচন মানে কোনো মতে খাওয়া, পরা, দারিদ্র্যসীমা রেখা অতিক্রম করা নয়। ন্যূনতম চিন্তা করলে হবে না। স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভাবনা ভাবতে হবে।’ 

অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘এসডিজি কন্ট্রিবিউশন ভলান্টারি রিপোর্ট-২০২৩’ এর সারাংশ তুলে ধরেন ইফফাত আঞ্জুম। তিনি জানান, ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯০টি পরিবারের ২০ লাখ ২০ হাজার মানুষকে ব্র্যাক তাঁদের ‘গ্র্যাজুয়েশন অ্যাপ্রোচ’ দিয়ে অতি-দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে। 

তিনি আরও জানান, ব্র্যাক ১৬টি উন্নয়ন কর্মসূচি এবং ৫টি সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে দেশজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ, মানসম্পন্ন শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা এবং সমন্বিত অন্তর্ভুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করছে। যার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৫ টিতে অবদান রেখে চলেছে ব্র্যাক। 

তিনি আরও জানান, জলবায়ু সংকট, কোভিড-১৯ মহামারি, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, টেকসইহীনতা এবং সমন্বয়ের অভাব এসব কর্মসূচির ক্ষেত্রে বাঁধা হিসেবে দেখা গেছে। ভবিষ্যতে এসিডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জলবায়ু এবং বৈষম্যকে প্রাধান্য দেওয়া, সমন্বয় এবং অংশীদারত্ব বৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, উপাত্ত ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ, টেকসই অর্থায়ন এবং উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে অধিক মনোযোগী হতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত