
২০২১ সালের জুন মাস। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কোম্পানিটির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার টি-শার্টের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি সরবরাহ বাড়ালেন, সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেল। এরপর তিনি বুঝতে পারলেন, এই টি-শার্টগুলো বিশেষ একধরনের ক্রেতার কাছেই বেশি চাহিদাসম্পন্ন— আর তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী।
মহামারির সময় তুলার পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা পলিয়েস্টারের দিকে ঝোঁকেন। পলিয়েস্টার শুধু সস্তাই নয়, দ্রুত শুকিয়ে যায়। টেকনো স্পোর্টসওয়্যারের টি-শার্টগুলো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল হওয়ায় সমুদ্রে কয়েক দিন থাকলেও দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই টি-শার্টগুলো।
অ্যাক্টিভউয়্যার বা খেলাধুলার পোশাক তৈরিতে ভারতের বৃহত্তম ঘরোয়া ব্র্যান্ডের পরিচালক ঝুঞ্জুনওয়ালা দাবি করেন, ‘আজকের দিনে কন্যাকুমারী থেকে চেন্নাই পর্যন্ত তিনজন মৎস্যজীবীর মধ্যে একজন আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যবহার করে।’
বিশ্বজুড়ে পলিয়েস্টার টি-শার্ট, ভিসকোস বা অন্যান্য সিনথেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি পোশাকগুলো ‘ম্যান-মেড ফাইবার’ বা এমএমএফ নামে পরিচিত। এসব পোশাক ভারতে চল পেতে সময় লেগেছে। ভারত এখনো তুলার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে তুলার পোশাকের চাহিদা এখনো ৬০ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন।
আন্তর্জাতিক তুলা উপদেষ্টা কমিটির (আইসিএসি) মতে, ১৯৬০ সালে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল ফাইবারের চাহিদায় তুলার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বে এখন এমএমএফ ফাইবারের চাহিদার পরিমাণ এখন ৭৪ শতাংশ।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, বিশ্বের ক্রেতারা ফাংশনাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তুলা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সেখানে এমএমএফ ক্রেতাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। তাঁর মতে, তুলার তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকবে।
ফাংশনাল পোশাক বলতে বিশেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি পোশাক বোঝানো হয়, যেমন জিম বা অফিসে পরার পোশাক।

এদিকে ভারতের রপ্তানি বাজারে তুলাভিত্তিক পোশাকের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির মধ্যে এমএমএফ টেক্সটাইলের পোশাক মাত্র ১৪ শতাংশ। ফলে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের কাছে ভারত দ্রুত-বর্ধনশীল এমএমএফ বাজার হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এক সময় বিশ্ব টেক্সটাইল বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও এখন তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাহলে, ভারত কীভাবে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরে আসতে পারে? প্রথমে বোঝা যাক, ভারত কেন ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ছে।
উদ্ভাবন বনাম দক্ষতা
গোপীনাথ বালার কেমিস্ট্রির প্রতি মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর নাসার জন্য ন্যানো ম্যাটেরিয়াল ও মহাকাশ প্রকল্পে তিনটি কাজে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রকল্প। ২০০৭ সালে ভারত ফিরে এসে কোয়েম্বাটোরের কাছে উদুমালপেট এলাকায় পরিবারের মালিকানাধীন শ্রী ভেঙ্কটলক্ষ্মী স্পিনার্স প্রাইভেট লিমিটেডে মিলে কাজ শুরু করেন। কোম্পানিটি তুলার সুতা উৎপাদন করত। তবে তুলার সুতা উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় ২০১৬ সালে মিলটি বন্ধ করে বালা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল খাতে প্রবেশ করেন। এ ধরনের টেক্সটাইল প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল, বিমান ও মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়।
বালা দুটি পণ্য তৈরি করেছেন—একটি হলো বায়োডিগ্রেডেবল ফেব্রিক, যা বিজ্ঞাপনী বোর্ডে ব্যবহৃত ফ্লেক্স কাপড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি হলো আউটডোর ছাউনি ও ত্রাণ কাঠামো তৈরির জন্য কাপড়, যা ধাতু বা পাতের পরিবর্তে ছাদের জন্য ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতে বালা গাড়ির জন্য এয়ারব্যাগ তৈরি করতে চান। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন তাঁর প্রথম দুটি পণ্য থেকে পর্যাপ্ত আয় আসবে।
বালা বলেন, ‘এই দুটি পণ্য তৈরি করতে আমার তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তুলা টেক্সটাইলের তুলনায় ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) কাপড় বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ এটাতে হাতে-কলমে কাজ করতে হয়।’
কাঙ্ক্ষিত গুণমান অর্জন করতে পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করতে হয়, তার জন্য বড় অঙ্কের প্রাথমিক বিনিয়োগও প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এয়ারব্যাগ প্রকল্পটি বাজারে আসতে আরও চার বছর লাগবে।
বালা আরও বলেন, এমএমএফ ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি সুতির চেয়ে ভিন্ন। উন্নত টেক্সটাইল ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এখানে উদ্ভাবনী হতে হয়। অন্যদিকে প্রচলিত তুলার পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া টেক্সটাইল উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা।
এ বিষয়ে মেনকা মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস পণ্যসামগ্রীর খুচরা বিক্রেতা ডেকাথলনের সরবরাহকারী আর.এম. লক্ষ্মণ নারায়ণ বলেন, উদাহরণ হিসেবে কাঁচামালের বিষয়টি ধরা যাক। তুলার বিপরীতে পলিয়েস্টার সুতা তৈরির ক্ষেত্রে এর গঠন জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। পলিয়েস্টারের শত শত প্রকার রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের আরও বিভিন্ন উপভাগ আছে। সঠিক ধরনের সুতা বাছাই করতে প্রায় ২০টি বৈশিষ্ট্যের জন্য এই সুতাগুলোর পরীক্ষা করতে হয়, যেমন সংকোচন, প্রসারণ যোগ্যতা, সংকোচন ক্ষমতা বা কার্ল স্থিতিশীলতা।

তাই বেশির ভাগ তুলার কাপড়ের উদ্যোক্তা এমএমএফ বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজারে প্রবেশ করতে চান না। বালার মতে, টেক্সটাইল শিল্পের ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্যোক্তা এমএমএফ টেক্সটাইলকে উন্নত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে তুলনামূলকভাবে আরও বেশি কারিগরি দক্ষতা, উচ্চতর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
কাঁচামালের সংকট
সমস্যার শেষ নেই। ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পলিয়েস্টার ও ভিসকোজ উৎপাদনকারী হলেও মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার। ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারতে যে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতা পাওয়া যায়— তা গুণগত দিক থেকে চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের চেয়ে নিম্নমানের।’
ভারতীয় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় নতুনত্ব আনেনি। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। এসভিজি ফ্যাশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার আগরওয়াল বলেন, ভারতের পলিয়েস্টার শিল্প অধিকাংশ সময় অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোযোগী ও এর দাম খুব কম। পলিয়েস্টার সুতা প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুনত্বে বিনিয়োগের কোনো প্রণোদনা নেই। তবে এমএমএফ টেক্সটাইল রপ্তানি একবার বাড়তে শুরু করলে কাঁচামালের গুণগত মান উন্নত হবে।
ঝুঞ্জুনওয়ালার টেকনোস্পোর্টসওয়ার প্রায় সব পলিয়েস্টার সুতা চীন থেকে আমদানি করে। কোম্পানিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০০ কোটি রুপি আয়ের আশা করছে এবং সম্প্রতি তারা এ৯১ পার্টনার্স থেকে ১৭৫ কোটি রুপি তহবিল পেয়েছে।
আমদানি করাও সহজ নয়। ভারত সরকার নির্দিষ্ট পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার (কিউসিও) আরোপ করেছে, যার ফলে আমদানির জন্য ভারতীয় মান সংস্থার (বিআইএস) শংসাপত্র প্রয়োজন হয়। এর ফলে চীন থেকে আমদানি সীমিত হচ্ছে।
আগরওয়াল বলেন, চীনা কোম্পানিগুলো বিএআইএস সার্টিফিকেশন নিবন্ধন করতে পারে না, ফলে চীন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
টেকনোস্পোর্টসওয়ার চীনা ‘ফুললি ড্রন ইয়র্ন’ দিয়ে পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা ‘ড্রন টেক্সচারাইজড ইয়র্ন’ নামে আরেকটি ভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করছে। এই সুতার ওপরও কিউসি প্রযোজ্য হলে কোম্পানিটির কপাল পুড়বে।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারত এমএমএফ পোশাকের বাজারে জায়গা করে নিতে চাইলে কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে খোলামেলা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে চীনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, আগে তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে এবং এরপর পেছনে ফেলতে হবে। আমরা কেন নিজেদের সবচেয়ে কার্যকরী সাপ্লাই চেইন থেকে আলাদা রাখব?’
ঝুনঝুনওয়ালা আরও প্রশ্ন করেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে ভারতীয় এমএমএফ টেক্সটাইল শিল্প উন্নত হবে, বাজারে পৌঁছাবে ও রপ্তানি বাড়বে। একবার এটি ঘটলে দেশীয় কাঁচামালের মান উন্নত হবে। তখন আমদানি কমে যাবে। ভারত সরকার মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। বেশির ভাগ পলিয়েস্টার উপাদান চীন থেকে আসে। সেখানে টেক্সটাইল খাতকে কেন আলাদা ভাবতে হবে?’
‘মেইক-ইন-চায়না’ পলিসি
একটি বড় সমস্যা হলো, পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার মতো যেসব কাঁচামালের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা রয়েছে, সেই মানগুলো ফেব্রিকসের মতো ডাউনস্ট্রিম পণ্যের বেলায় প্রযোজ্য নয়। প্রতিদিন চীন থেকে ৮ লক্ষ কেজি এমএমএফ ফেব্রিক আসে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এগুলো কেজিপ্রতি ১ ডলারে আমদানি হতো, যা ভারতীয় সুতার খরচের থেকেও কম।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর মার্চে পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ছয় মাসের জন্য। এরপর আমদানিকারকরা অন্য ক্যাটাগরির অধীনে আমদানি করতে শুরু করেন। এমএমএফ ফেব্রিকসের ৫০টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সরকার এখন ১৩ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে সর্বনিম্ন মূল্য আরোপ করেছে এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভারত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আগরওয়াল বলেন, ‘এখানে সমস্যা হলো বাংলাদেশ চীন থেকে এমএমএফ ফেব্রিক বিনা শুল্কে আমদানি করে, সেগুলো দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার বিনা শুল্কে ভারতে রপ্তানি করে। বাস্তবে আমরা বিনা শুল্কে চীনা ফেব্রিক আমদানি করতে দিচ্ছি।’
ভারতের এমএমএফ শিল্প শক্তিশালী করতে এই নীতিটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আপনি কাঁচামালের আমদানিকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন না এবং ডাউন স্ট্রিম পণ্যের অবাধ প্রবাহকে অনুমতি দিতে পারেন না। এটা হচ্ছে ‘মেক-ইন-চায়না’ নীতি।’

মিসিং লিংক
গুণগত মানের সমস্যা সত্ত্বেও ভারত এমএমএফ সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত যথেষ্ট পরিমাণে নিটিং ও উইভিং সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামোর অভাব, বিশেষত ডাইং (রঙ করা)। কঠোর দূষণ নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের কারণে দেশীয় শিল্প যথেষ্ট সুবিধা করতে পারছে না। আরও কিছু কারণও রয়েছে।
মেনাকা মিলসের নারায়ণ বলেন, এমএমএফ ডাইং সুতি ডাইংয়ের চেয়ে আলাদা। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়া ভিন্ন। এতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াও প্রয়োজন। ডাইং প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে।
শিল্পটি এগিয়ে নিতে সরকার এ ক্ষেত্রে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (শিল্প কারখানার দূষিত পানি পরিশোধনাগার) স্থাপন করতে পারে। আগরওয়াল বলেন, এগুলো পিএম-এমআইটিআরএ প্রকল্পের আওতায় করা যেতে পারে। কেননা প্রকল্পটি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরির জন্য গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান সফরের সময় নারায়ণ হতবাক হন যে, সেখানে শিল্পটি প্রতিকেজি ফেব্রিক ডাইং করতে ৭০ লিটার পানি ব্যবহার করে। মেনাকা মিলসে ছয় বছর ধরে কাজ করার পর তিনি পানি ব্যবহারের পরিমাণ মাত্র ২৬ লিটারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে যে, আমরা এমএমএফের বাজারে পৃথিবীর সেরা হতে পারি। শুধু আমাদের সুষম প্রতিযোগিতার মাঠ দিন।’
উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা
ভারত সরকার খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে কাজ করছে। সম্প্রতি তারা এমএমএফ টেক্সটাইল এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমএমএফ ফেব্রিক, এমএমএফ পোশাক এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি রুপির প্রোডাকশন-লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪টি আবেদন স্কিমটির আওতায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট বিনিয়োগ ১৯ হাজার ৭৯৮ কোটি।
সরকার একটি জাতীয় টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশনও ঘোষণা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬৮টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
এমএমএফ এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে ভারত এসব পদক্ষেপ অনেক দেরিতে নিয়েছে। সামনে পথ এখনো বন্ধুর। ভারতের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের মানসিকতা এখনো তুলাকে ঘিরে। যারা সাহস করে এমএমএফ শুরু করেছে তাঁরা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সঠিক ইকোসিস্টেমের অভাব, কাঁচামাল সরবরাহে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিবন্ধকতা ও চড়া আমদানি মূল্য। ভারতে পলিয়েস্টারের চাহিদা এখনো ধীরে বাড়ছে ও বৈশ্বিক ক্রেতারা এখনো ভারতের এমএমএফ পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শিল্পটি আশা করছে, অন্তত তাদের ক্ষতিকর আমদানি নীতিগুলো সংশোধন করা হোক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’ থেকে ভাষান্তর করেছেন আবদুল বাছেদ

২০২১ সালের জুন মাস। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কোম্পানিটির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার টি-শার্টের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি সরবরাহ বাড়ালেন, সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেল। এরপর তিনি বুঝতে পারলেন, এই টি-শার্টগুলো বিশেষ একধরনের ক্রেতার কাছেই বেশি চাহিদাসম্পন্ন— আর তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী।
মহামারির সময় তুলার পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা পলিয়েস্টারের দিকে ঝোঁকেন। পলিয়েস্টার শুধু সস্তাই নয়, দ্রুত শুকিয়ে যায়। টেকনো স্পোর্টসওয়্যারের টি-শার্টগুলো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল হওয়ায় সমুদ্রে কয়েক দিন থাকলেও দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই টি-শার্টগুলো।
অ্যাক্টিভউয়্যার বা খেলাধুলার পোশাক তৈরিতে ভারতের বৃহত্তম ঘরোয়া ব্র্যান্ডের পরিচালক ঝুঞ্জুনওয়ালা দাবি করেন, ‘আজকের দিনে কন্যাকুমারী থেকে চেন্নাই পর্যন্ত তিনজন মৎস্যজীবীর মধ্যে একজন আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যবহার করে।’
বিশ্বজুড়ে পলিয়েস্টার টি-শার্ট, ভিসকোস বা অন্যান্য সিনথেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি পোশাকগুলো ‘ম্যান-মেড ফাইবার’ বা এমএমএফ নামে পরিচিত। এসব পোশাক ভারতে চল পেতে সময় লেগেছে। ভারত এখনো তুলার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে তুলার পোশাকের চাহিদা এখনো ৬০ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন।
আন্তর্জাতিক তুলা উপদেষ্টা কমিটির (আইসিএসি) মতে, ১৯৬০ সালে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল ফাইবারের চাহিদায় তুলার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বে এখন এমএমএফ ফাইবারের চাহিদার পরিমাণ এখন ৭৪ শতাংশ।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, বিশ্বের ক্রেতারা ফাংশনাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তুলা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সেখানে এমএমএফ ক্রেতাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। তাঁর মতে, তুলার তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকবে।
ফাংশনাল পোশাক বলতে বিশেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি পোশাক বোঝানো হয়, যেমন জিম বা অফিসে পরার পোশাক।

এদিকে ভারতের রপ্তানি বাজারে তুলাভিত্তিক পোশাকের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির মধ্যে এমএমএফ টেক্সটাইলের পোশাক মাত্র ১৪ শতাংশ। ফলে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের কাছে ভারত দ্রুত-বর্ধনশীল এমএমএফ বাজার হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এক সময় বিশ্ব টেক্সটাইল বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও এখন তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাহলে, ভারত কীভাবে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরে আসতে পারে? প্রথমে বোঝা যাক, ভারত কেন ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ছে।
উদ্ভাবন বনাম দক্ষতা
গোপীনাথ বালার কেমিস্ট্রির প্রতি মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর নাসার জন্য ন্যানো ম্যাটেরিয়াল ও মহাকাশ প্রকল্পে তিনটি কাজে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রকল্প। ২০০৭ সালে ভারত ফিরে এসে কোয়েম্বাটোরের কাছে উদুমালপেট এলাকায় পরিবারের মালিকানাধীন শ্রী ভেঙ্কটলক্ষ্মী স্পিনার্স প্রাইভেট লিমিটেডে মিলে কাজ শুরু করেন। কোম্পানিটি তুলার সুতা উৎপাদন করত। তবে তুলার সুতা উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় ২০১৬ সালে মিলটি বন্ধ করে বালা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল খাতে প্রবেশ করেন। এ ধরনের টেক্সটাইল প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল, বিমান ও মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়।
বালা দুটি পণ্য তৈরি করেছেন—একটি হলো বায়োডিগ্রেডেবল ফেব্রিক, যা বিজ্ঞাপনী বোর্ডে ব্যবহৃত ফ্লেক্স কাপড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি হলো আউটডোর ছাউনি ও ত্রাণ কাঠামো তৈরির জন্য কাপড়, যা ধাতু বা পাতের পরিবর্তে ছাদের জন্য ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতে বালা গাড়ির জন্য এয়ারব্যাগ তৈরি করতে চান। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন তাঁর প্রথম দুটি পণ্য থেকে পর্যাপ্ত আয় আসবে।
বালা বলেন, ‘এই দুটি পণ্য তৈরি করতে আমার তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তুলা টেক্সটাইলের তুলনায় ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) কাপড় বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ এটাতে হাতে-কলমে কাজ করতে হয়।’
কাঙ্ক্ষিত গুণমান অর্জন করতে পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করতে হয়, তার জন্য বড় অঙ্কের প্রাথমিক বিনিয়োগও প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এয়ারব্যাগ প্রকল্পটি বাজারে আসতে আরও চার বছর লাগবে।
বালা আরও বলেন, এমএমএফ ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি সুতির চেয়ে ভিন্ন। উন্নত টেক্সটাইল ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এখানে উদ্ভাবনী হতে হয়। অন্যদিকে প্রচলিত তুলার পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া টেক্সটাইল উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা।
এ বিষয়ে মেনকা মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস পণ্যসামগ্রীর খুচরা বিক্রেতা ডেকাথলনের সরবরাহকারী আর.এম. লক্ষ্মণ নারায়ণ বলেন, উদাহরণ হিসেবে কাঁচামালের বিষয়টি ধরা যাক। তুলার বিপরীতে পলিয়েস্টার সুতা তৈরির ক্ষেত্রে এর গঠন জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। পলিয়েস্টারের শত শত প্রকার রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের আরও বিভিন্ন উপভাগ আছে। সঠিক ধরনের সুতা বাছাই করতে প্রায় ২০টি বৈশিষ্ট্যের জন্য এই সুতাগুলোর পরীক্ষা করতে হয়, যেমন সংকোচন, প্রসারণ যোগ্যতা, সংকোচন ক্ষমতা বা কার্ল স্থিতিশীলতা।

তাই বেশির ভাগ তুলার কাপড়ের উদ্যোক্তা এমএমএফ বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজারে প্রবেশ করতে চান না। বালার মতে, টেক্সটাইল শিল্পের ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্যোক্তা এমএমএফ টেক্সটাইলকে উন্নত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে তুলনামূলকভাবে আরও বেশি কারিগরি দক্ষতা, উচ্চতর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
কাঁচামালের সংকট
সমস্যার শেষ নেই। ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পলিয়েস্টার ও ভিসকোজ উৎপাদনকারী হলেও মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার। ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারতে যে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতা পাওয়া যায়— তা গুণগত দিক থেকে চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের চেয়ে নিম্নমানের।’
ভারতীয় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় নতুনত্ব আনেনি। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। এসভিজি ফ্যাশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার আগরওয়াল বলেন, ভারতের পলিয়েস্টার শিল্প অধিকাংশ সময় অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোযোগী ও এর দাম খুব কম। পলিয়েস্টার সুতা প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুনত্বে বিনিয়োগের কোনো প্রণোদনা নেই। তবে এমএমএফ টেক্সটাইল রপ্তানি একবার বাড়তে শুরু করলে কাঁচামালের গুণগত মান উন্নত হবে।
ঝুঞ্জুনওয়ালার টেকনোস্পোর্টসওয়ার প্রায় সব পলিয়েস্টার সুতা চীন থেকে আমদানি করে। কোম্পানিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০০ কোটি রুপি আয়ের আশা করছে এবং সম্প্রতি তারা এ৯১ পার্টনার্স থেকে ১৭৫ কোটি রুপি তহবিল পেয়েছে।
আমদানি করাও সহজ নয়। ভারত সরকার নির্দিষ্ট পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার (কিউসিও) আরোপ করেছে, যার ফলে আমদানির জন্য ভারতীয় মান সংস্থার (বিআইএস) শংসাপত্র প্রয়োজন হয়। এর ফলে চীন থেকে আমদানি সীমিত হচ্ছে।
আগরওয়াল বলেন, চীনা কোম্পানিগুলো বিএআইএস সার্টিফিকেশন নিবন্ধন করতে পারে না, ফলে চীন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
টেকনোস্পোর্টসওয়ার চীনা ‘ফুললি ড্রন ইয়র্ন’ দিয়ে পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা ‘ড্রন টেক্সচারাইজড ইয়র্ন’ নামে আরেকটি ভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করছে। এই সুতার ওপরও কিউসি প্রযোজ্য হলে কোম্পানিটির কপাল পুড়বে।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারত এমএমএফ পোশাকের বাজারে জায়গা করে নিতে চাইলে কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে খোলামেলা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে চীনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, আগে তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে এবং এরপর পেছনে ফেলতে হবে। আমরা কেন নিজেদের সবচেয়ে কার্যকরী সাপ্লাই চেইন থেকে আলাদা রাখব?’
ঝুনঝুনওয়ালা আরও প্রশ্ন করেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে ভারতীয় এমএমএফ টেক্সটাইল শিল্প উন্নত হবে, বাজারে পৌঁছাবে ও রপ্তানি বাড়বে। একবার এটি ঘটলে দেশীয় কাঁচামালের মান উন্নত হবে। তখন আমদানি কমে যাবে। ভারত সরকার মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। বেশির ভাগ পলিয়েস্টার উপাদান চীন থেকে আসে। সেখানে টেক্সটাইল খাতকে কেন আলাদা ভাবতে হবে?’
‘মেইক-ইন-চায়না’ পলিসি
একটি বড় সমস্যা হলো, পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার মতো যেসব কাঁচামালের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা রয়েছে, সেই মানগুলো ফেব্রিকসের মতো ডাউনস্ট্রিম পণ্যের বেলায় প্রযোজ্য নয়। প্রতিদিন চীন থেকে ৮ লক্ষ কেজি এমএমএফ ফেব্রিক আসে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এগুলো কেজিপ্রতি ১ ডলারে আমদানি হতো, যা ভারতীয় সুতার খরচের থেকেও কম।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর মার্চে পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ছয় মাসের জন্য। এরপর আমদানিকারকরা অন্য ক্যাটাগরির অধীনে আমদানি করতে শুরু করেন। এমএমএফ ফেব্রিকসের ৫০টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সরকার এখন ১৩ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে সর্বনিম্ন মূল্য আরোপ করেছে এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভারত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আগরওয়াল বলেন, ‘এখানে সমস্যা হলো বাংলাদেশ চীন থেকে এমএমএফ ফেব্রিক বিনা শুল্কে আমদানি করে, সেগুলো দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার বিনা শুল্কে ভারতে রপ্তানি করে। বাস্তবে আমরা বিনা শুল্কে চীনা ফেব্রিক আমদানি করতে দিচ্ছি।’
ভারতের এমএমএফ শিল্প শক্তিশালী করতে এই নীতিটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আপনি কাঁচামালের আমদানিকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন না এবং ডাউন স্ট্রিম পণ্যের অবাধ প্রবাহকে অনুমতি দিতে পারেন না। এটা হচ্ছে ‘মেক-ইন-চায়না’ নীতি।’

মিসিং লিংক
গুণগত মানের সমস্যা সত্ত্বেও ভারত এমএমএফ সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত যথেষ্ট পরিমাণে নিটিং ও উইভিং সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামোর অভাব, বিশেষত ডাইং (রঙ করা)। কঠোর দূষণ নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের কারণে দেশীয় শিল্প যথেষ্ট সুবিধা করতে পারছে না। আরও কিছু কারণও রয়েছে।
মেনাকা মিলসের নারায়ণ বলেন, এমএমএফ ডাইং সুতি ডাইংয়ের চেয়ে আলাদা। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়া ভিন্ন। এতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াও প্রয়োজন। ডাইং প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে।
শিল্পটি এগিয়ে নিতে সরকার এ ক্ষেত্রে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (শিল্প কারখানার দূষিত পানি পরিশোধনাগার) স্থাপন করতে পারে। আগরওয়াল বলেন, এগুলো পিএম-এমআইটিআরএ প্রকল্পের আওতায় করা যেতে পারে। কেননা প্রকল্পটি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরির জন্য গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান সফরের সময় নারায়ণ হতবাক হন যে, সেখানে শিল্পটি প্রতিকেজি ফেব্রিক ডাইং করতে ৭০ লিটার পানি ব্যবহার করে। মেনাকা মিলসে ছয় বছর ধরে কাজ করার পর তিনি পানি ব্যবহারের পরিমাণ মাত্র ২৬ লিটারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে যে, আমরা এমএমএফের বাজারে পৃথিবীর সেরা হতে পারি। শুধু আমাদের সুষম প্রতিযোগিতার মাঠ দিন।’
উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা
ভারত সরকার খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে কাজ করছে। সম্প্রতি তারা এমএমএফ টেক্সটাইল এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমএমএফ ফেব্রিক, এমএমএফ পোশাক এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি রুপির প্রোডাকশন-লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪টি আবেদন স্কিমটির আওতায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট বিনিয়োগ ১৯ হাজার ৭৯৮ কোটি।
সরকার একটি জাতীয় টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশনও ঘোষণা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬৮টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
এমএমএফ এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে ভারত এসব পদক্ষেপ অনেক দেরিতে নিয়েছে। সামনে পথ এখনো বন্ধুর। ভারতের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের মানসিকতা এখনো তুলাকে ঘিরে। যারা সাহস করে এমএমএফ শুরু করেছে তাঁরা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সঠিক ইকোসিস্টেমের অভাব, কাঁচামাল সরবরাহে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিবন্ধকতা ও চড়া আমদানি মূল্য। ভারতে পলিয়েস্টারের চাহিদা এখনো ধীরে বাড়ছে ও বৈশ্বিক ক্রেতারা এখনো ভারতের এমএমএফ পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শিল্পটি আশা করছে, অন্তত তাদের ক্ষতিকর আমদানি নীতিগুলো সংশোধন করা হোক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’ থেকে ভাষান্তর করেছেন আবদুল বাছেদ

নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্টফোন কেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিউআর কোড চালু থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এই নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের...
১০ ঘণ্টা আগে
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।
১৬ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম
২১ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্টফোন কেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিউআর কোড চালু থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এই নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট স্মার্টফোনে ব্যবহৃত সিমের ওপর কর ও ভ্যাট কমানোর বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, নগদবিহীন লেনদেন প্রসারে একক ও আন্তসংযোগ-ভিত্তিক পেমেন্ট সিস্টেম চালুর বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হন অংশগ্রহণকারীরা। প্রস্তাবগুলো পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত আকারে উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ‘বাংলা কিউআর’ চালুর মাধ্যমে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাপ ব্যবহার করে নগদবিহীন লেনদেন শুরু হয়। বর্তমানে এই ব্যবস্থায় ৪৩টি ব্যাংক, ৫টি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং ৩টি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) যুক্ত রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি এখনো জনপ্রিয়তা পায়নি। গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোনের অভাব, সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট ব্যয় এবং অতিরিক্ত চার্জের কারণে প্রান্তিক ও সাধারণ গ্রাহকদের বড় একটি অংশ এই ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছে।
এই বাস্তবতায় স্মার্টফোন কেনায় নগদ সহায়তা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশেষ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয়। পাশাপাশি মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাকে সাশ্রয়ী করতে অপারেটরদের জন্য ভ্যাট ও করছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের খুচরা লেনদেনের অন্তত ৭৫ শতাংশ ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। আর ২০৩১ সালের মধ্যে সব ধরনের লেনদেন ক্যাশলেস করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’-এর চার স্তম্ভ—স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ বাস্তবায়নের অংশ। এই লক্ষ্যে ব্যাংক, এমএফএস, মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য পেমেন্ট সেবাদাতাকে একটি একক আন্তসংযোগ ব্যবস্থার আওতায় আনার কাজ চলছে। ইন্টারঅপারেবিলিটি পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সহজে টাকা আদান-প্রদানের সুযোগ তৈরিই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশকে ক্যাশলেস করতে হলে প্রত্যেক নাগরিকের কাছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছাতে হবে। প্রয়োজনে এ জন্য বিশেষ সুবিধাও দেওয়া হবে। একই সঙ্গে শিগগির সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা ‘রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট সিস্টেম’ চালুর কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পেমেন্ট সিস্টেম প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে এখনো ৭২ শতাংশের বেশি লেনদেন নগদে হচ্ছে। যদিও ছোট ও মাঝারি অঙ্কের লেনদেনে ডিজিটাল ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ডিজিটাল অবকাঠামো শক্তিশালী করা এবং সাশ্রয়ী প্রযুক্তি নিশ্চিত করা ছাড়া ক্যাশলেস অর্থনীতি গড়া সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নগদনির্ভরতা কমাতে হলে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রতি আস্থা তৈরি করতে হবে। একবার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে মুদ্রণ ব্যয়সহ আর্থিক ব্যবস্থাপনার খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ক্যাশ ইজ কিং’ ধারণা এখনো বাস্তবতা। দেশের অধিকাংশ লেনদেন অনানুষ্ঠানিক খাতে হয়। এসব খাতকে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থার আওতায় না আনলে ক্যাশলেস সমাজ গড়া কঠিন। নগদে স্বচ্ছন্দ থাকার পুরোনো মানসিকতার কারণে এই রূপান্তরে এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।

নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্টফোন কেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিউআর কোড চালু থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এই নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট স্মার্টফোনে ব্যবহৃত সিমের ওপর কর ও ভ্যাট কমানোর বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, নগদবিহীন লেনদেন প্রসারে একক ও আন্তসংযোগ-ভিত্তিক পেমেন্ট সিস্টেম চালুর বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হন অংশগ্রহণকারীরা। প্রস্তাবগুলো পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত আকারে উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ‘বাংলা কিউআর’ চালুর মাধ্যমে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাপ ব্যবহার করে নগদবিহীন লেনদেন শুরু হয়। বর্তমানে এই ব্যবস্থায় ৪৩টি ব্যাংক, ৫টি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং ৩টি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) যুক্ত রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি এখনো জনপ্রিয়তা পায়নি। গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোনের অভাব, সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট ব্যয় এবং অতিরিক্ত চার্জের কারণে প্রান্তিক ও সাধারণ গ্রাহকদের বড় একটি অংশ এই ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছে।
এই বাস্তবতায় স্মার্টফোন কেনায় নগদ সহায়তা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশেষ ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয়। পাশাপাশি মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাকে সাশ্রয়ী করতে অপারেটরদের জন্য ভ্যাট ও করছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের খুচরা লেনদেনের অন্তত ৭৫ শতাংশ ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। আর ২০৩১ সালের মধ্যে সব ধরনের লেনদেন ক্যাশলেস করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’-এর চার স্তম্ভ—স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ বাস্তবায়নের অংশ। এই লক্ষ্যে ব্যাংক, এমএফএস, মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য পেমেন্ট সেবাদাতাকে একটি একক আন্তসংযোগ ব্যবস্থার আওতায় আনার কাজ চলছে। ইন্টারঅপারেবিলিটি পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সহজে টাকা আদান-প্রদানের সুযোগ তৈরিই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশকে ক্যাশলেস করতে হলে প্রত্যেক নাগরিকের কাছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছাতে হবে। প্রয়োজনে এ জন্য বিশেষ সুবিধাও দেওয়া হবে। একই সঙ্গে শিগগির সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা ‘রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট সিস্টেম’ চালুর কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পেমেন্ট সিস্টেম প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে এখনো ৭২ শতাংশের বেশি লেনদেন নগদে হচ্ছে। যদিও ছোট ও মাঝারি অঙ্কের লেনদেনে ডিজিটাল ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ডিজিটাল অবকাঠামো শক্তিশালী করা এবং সাশ্রয়ী প্রযুক্তি নিশ্চিত করা ছাড়া ক্যাশলেস অর্থনীতি গড়া সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নগদনির্ভরতা কমাতে হলে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রতি আস্থা তৈরি করতে হবে। একবার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে মুদ্রণ ব্যয়সহ আর্থিক ব্যবস্থাপনার খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ক্যাশ ইজ কিং’ ধারণা এখনো বাস্তবতা। দেশের অধিকাংশ লেনদেন অনানুষ্ঠানিক খাতে হয়। এসব খাতকে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থার আওতায় না আনলে ক্যাশলেস সমাজ গড়া কঠিন। নগদে স্বচ্ছন্দ থাকার পুরোনো মানসিকতার কারণে এই রূপান্তরে এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের...
১০ ঘণ্টা আগে
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।
১৬ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম
২১ ঘণ্টা আগেআসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সেই ধারাবাহিকতা বজায় আছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ১৩.৮৯ শতাংশ।
তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো—রাজস্ব আদায়ে বৃদ্ধি হয়েছে ১৫.১৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধীরগতির কারণে রাজস্ব আদায় প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। তবে বছরের শেষ দিকে সাধারণত আদায় বাড়ে। করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন জোরদার করা এবং ফাঁকি প্রতিরোধে এনবিআর সক্রিয়।
অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক মন্দাভাব, কাঠামোগত দুর্বলতা ও সক্ষমতার অভাব সরাসরি রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া অর্থবছরের মাঝপথে লক্ষ্যমাত্রা একলাফে ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর কারণে বাস্তবতার সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার ব্যবধান আরও প্রকট হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জন্য মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। তবে ১০ নভেম্বর বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি তা ৫ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করে। ফলে বাকি সাত মাসে এনবিআরকে ৪ লাখ ৫ হাজার ২৪ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকে। প্রধান কারণ হলো এনবিআরের সক্ষমতার চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। মানবসম্পদ, কারিগরি দক্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়; পাশাপাশি করদাতা এবং করযোগ্য ব্যক্তির মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে, কর ফাঁকিও প্রচুর। বর্তমান ব্যবসায়িক মন্দা, খরচ বৃদ্ধি, আয় হ্রাস এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ কমে যাওয়াও রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানো, অটোমেশন ও সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করলে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করে আদায় বাড়ানো সম্ভব।
সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, এনবিআরের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি প্রশাসনিক পদে বড় রদবদলের কারণে কার্যক্রম গোছাতে কিছুটা সময় লাগা স্বাভাবিক।
রাজস্ব খাত অনুযায়ী, ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে। প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা; ঘাটতি ৩ হাজার ৮১৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৬.১৫ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১.৯৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আসে আয়কর খাতে। আদায় হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৮১ কোটি, লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ হাজার ৯৯৫ কোটি ২৫ লাখ; ঘাটতি ২০.১৯ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশ। কাস্টমস বা শুল্ক খাতে ৪২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ৯৭৯ কোটি ৫৬ লাখ; ঘাটতি ১৫.৯১ শতাংশ, তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার অপরিহার্য। এনবিআরের মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং অটোমেশন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন।

রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সেই ধারাবাহিকতা বজায় আছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ১৩.৮৯ শতাংশ।
তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো—রাজস্ব আদায়ে বৃদ্ধি হয়েছে ১৫.১৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধীরগতির কারণে রাজস্ব আদায় প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। তবে বছরের শেষ দিকে সাধারণত আদায় বাড়ে। করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন জোরদার করা এবং ফাঁকি প্রতিরোধে এনবিআর সক্রিয়।
অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক মন্দাভাব, কাঠামোগত দুর্বলতা ও সক্ষমতার অভাব সরাসরি রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া অর্থবছরের মাঝপথে লক্ষ্যমাত্রা একলাফে ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর কারণে বাস্তবতার সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার ব্যবধান আরও প্রকট হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জন্য মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। তবে ১০ নভেম্বর বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি তা ৫ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করে। ফলে বাকি সাত মাসে এনবিআরকে ৪ লাখ ৫ হাজার ২৪ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকে। প্রধান কারণ হলো এনবিআরের সক্ষমতার চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। মানবসম্পদ, কারিগরি দক্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়; পাশাপাশি করদাতা এবং করযোগ্য ব্যক্তির মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে, কর ফাঁকিও প্রচুর। বর্তমান ব্যবসায়িক মন্দা, খরচ বৃদ্ধি, আয় হ্রাস এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ কমে যাওয়াও রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানো, অটোমেশন ও সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করলে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করে আদায় বাড়ানো সম্ভব।
সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, এনবিআরের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি প্রশাসনিক পদে বড় রদবদলের কারণে কার্যক্রম গোছাতে কিছুটা সময় লাগা স্বাভাবিক।
রাজস্ব খাত অনুযায়ী, ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে। প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা; ঘাটতি ৩ হাজার ৮১৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৬.১৫ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১.৯৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আসে আয়কর খাতে। আদায় হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৮১ কোটি, লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ হাজার ৯৯৫ কোটি ২৫ লাখ; ঘাটতি ২০.১৯ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশ। কাস্টমস বা শুল্ক খাতে ৪২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ৯৭৯ কোটি ৫৬ লাখ; ঘাটতি ১৫.৯১ শতাংশ, তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার অপরিহার্য। এনবিআরের মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং অটোমেশন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্টফোন কেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিউআর কোড চালু থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এই নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।
১৬ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পে প্যাকেজ বা বেতন-ভাতাসংক্রান্ত একটি মামলার রায়ের পর টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের সম্পদ গত শুক্রবার রাতে ৭৪৯ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত বছর আদালত এই সুবিধাগুলো বাতিল করেছিলেন।
২০১৮ সালে মাস্কের যে বেতন প্যাকেজের মূল্য ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেটিই গত শুক্রবার ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বহাল করেন। এর দুই বছর আগে নিম্ন আদালত ওই পারিশ্রমিক চুক্তিকে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, ২০২৪ সালে দেওয়া যে সিদ্ধান্তে বেতনের প্যাকেজটি বাতিল করা হয়েছিল, তা সঠিক ছিল না এবং মাস্কের প্রতি অন্যায্য ছিল।
এর আগে চলতি সপ্তাহে মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স শেয়ারবাজারে আসতে পারে—এমন প্রতিবেদনের পর মাস্কের সম্পদ ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন।
এদিকে গত নভেম্বরে টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা আলাদাভাবে মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি পারিশ্রমিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেন।
এটি করপোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেতন প্যাকেজ। বিনিয়োগকারীরা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসভিত্তিক এক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে মাস্কের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান।
ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, মাস্কের বর্তমান সম্পদমূল্য গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের চেয়ে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বেশি। ল্যারি পেজ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স

পে প্যাকেজ বা বেতন-ভাতাসংক্রান্ত একটি মামলার রায়ের পর টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের সম্পদ গত শুক্রবার রাতে ৭৪৯ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত বছর আদালত এই সুবিধাগুলো বাতিল করেছিলেন।
২০১৮ সালে মাস্কের যে বেতন প্যাকেজের মূল্য ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেটিই গত শুক্রবার ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বহাল করেন। এর দুই বছর আগে নিম্ন আদালত ওই পারিশ্রমিক চুক্তিকে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, ২০২৪ সালে দেওয়া যে সিদ্ধান্তে বেতনের প্যাকেজটি বাতিল করা হয়েছিল, তা সঠিক ছিল না এবং মাস্কের প্রতি অন্যায্য ছিল।
এর আগে চলতি সপ্তাহে মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স শেয়ারবাজারে আসতে পারে—এমন প্রতিবেদনের পর মাস্কের সম্পদ ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন।
এদিকে গত নভেম্বরে টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা আলাদাভাবে মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি পারিশ্রমিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেন।
এটি করপোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেতন প্যাকেজ। বিনিয়োগকারীরা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসভিত্তিক এক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে মাস্কের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান।
ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, মাস্কের বর্তমান সম্পদমূল্য গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের চেয়ে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বেশি। ল্যারি পেজ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্টফোন কেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিউআর কোড চালু থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এই নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের...
১০ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম
২১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম (এসএসএস)।
নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানি ও ফান্ডগুলো মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য রেগুলেটরি ফাইলিং কাগজ ছাড়াই অনলাইনে জমা দিতে পারবে। এতে সময় ও খরচ কমার পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং ট্র্যাকিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
ডিএসই সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তথ্য একই ডিজিটাল গেটওয়ে দিয়ে জমা দেওয়া সম্ভব। ফলে দ্বৈত সাবমিশনের ঝামেলা প্রায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাগুজে নথির ওপর নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল সাবমিশন শুধু সুবিধার বিষয় নয়, এটি বাজার শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার একটি কাঠামোগত পরিবর্তন।
ডিএসই জানায়, চায়নিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কাজ করে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়ানোর পর সিস্টেমটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ফিচার যুক্ত করা সহজ হবে।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান বলেন, একক ডিজিটাল সাবমিশন পয়েন্ট চালু হওয়ায় ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপজনিত ভুল কমবে এবং তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ ডিজিটালি যাচাইযোগ্য থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম (এসএসএস)।
নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানি ও ফান্ডগুলো মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য রেগুলেটরি ফাইলিং কাগজ ছাড়াই অনলাইনে জমা দিতে পারবে। এতে সময় ও খরচ কমার পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং ট্র্যাকিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
ডিএসই সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তথ্য একই ডিজিটাল গেটওয়ে দিয়ে জমা দেওয়া সম্ভব। ফলে দ্বৈত সাবমিশনের ঝামেলা প্রায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাগুজে নথির ওপর নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল সাবমিশন শুধু সুবিধার বিষয় নয়, এটি বাজার শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার একটি কাঠামোগত পরিবর্তন।
ডিএসই জানায়, চায়নিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কাজ করে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়ানোর পর সিস্টেমটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ফিচার যুক্ত করা সহজ হবে।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান বলেন, একক ডিজিটাল সাবমিশন পয়েন্ট চালু হওয়ায় ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপজনিত ভুল কমবে এবং তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ ডিজিটালি যাচাইযোগ্য থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্টফোন কেনা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিউআর কোড চালু থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এই নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের...
১০ ঘণ্টা আগে
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।
১৬ ঘণ্টা আগে