ভারতে ধর্ষণের ভিডিওতে মগবাজারের টিকটক হৃদয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৮ মে ২০২১, ১৩: ২৬
Thumbnail image

ঢাকা: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালা রাজ্যে। সেই ভিডিওতে একজন বাংলাদেশিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। নিপীড়নের শিকার তরুণীও বাংলাদেশি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ বলছে, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী এবং নির্যাতনকারীদের একজন রাজধানীর হাতিরঝিলের বাসিন্দা। ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ নামে পরিচিত তিনি। ওই তরুণী ও অভিযুক্তরা সবাই এখনো ভারতে অবস্থান করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভিডিওতে দেখা গেছে, ২০–২২ বছর বয়সী একটি মেয়েকে তিন/চার জন যুবক ও একজন মেয়ে অমানুষিক নির্যাতন করছেন। সাইবার পেট্রোলিংয়ের অংশ হিসেবে পুলিশের নজরে আসে ভিডিওটি। ঘটনাটি ঘটেছে ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে।

যৌন নির্যাতনকারী একজনের চেহারার সঙ্গে মগবাজার এলাকার এক তরুণের ফেসবুকে পোস্ট করা ছবির মিল পাওয়া যায়। সেই সূত্রেই তার পরিচয় শনাক্ত করা হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ। তার মাকে ভিডিওটি দেখালে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন। পরে স্বীকার করেন, ভিডিওতে তার ছেলে রিফাতুল ইসলাম হৃদয় আছেন। শর্ট ভিডিও শেয়ারিংয়ের অ্যাপ টিকটকের কারণে মগবাজার এলাকার অনেকেই তাকে চেনে। বয়স ২৬ বছর।

হৃদয়ের মা ও মামার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে চার মাস আগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই।

পুলিশ আরও জানায়, হৃদয়ের মামার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে যোগাযোগ করা হলে হৃদয় জানান, তিন মাস আগে ভারতে গেছেন তিনি। যৌন নির্যাতনের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনা ঘটেছে ১৫-১৬ দিন আগে। হৃদয় আরও জানান, ওই নারী বাংলাদেশি। তার বয়স ২০-২২ বছর। বাসা মগবাজারের হাতিরঝিল এলাকায়, স্থায়ী ঠিকানা বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদর।

নির্যাতনের শিকার তরুণীর বিস্তারিত পরিচয় জানতে চাওয়া হলে হৃদয় হোয়াটসঅ্যাপে তার ভারতীয় পরিচয়পত্র পাঠান, যেটিকে সেখানে বলা হয় আধার কার্ড। এরই মধ্যে ওই তরুণীর পরিবারের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। তরুণীর বাবা তাকে শনাক্ত করেছেন। হৃদয়ের সঙ্গে নির্যাতনে যাঁরা অংশ নিয়েছে তাদের পরিচয়ও শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিসি তেজগাঁও শহীদুল্লাহ বলেন, তাঁরা ধারণা করছেন, এটি একটি সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র। তাঁরা প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিদেশ গমনেচ্ছু নারীদের প্রলুব্ধ করে। তদন্তের প্রয়োজনে ভারতীয় পুলিশ এবং ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে। ঘটনার শিকার তরুণীকে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত আনার পদক্ষেপও নিচ্ছে পুলিশ।

এ ঘটনায় জড়িত রিফাতুল ইসলাম হৃদয়ের বাবা-মা ও মামাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মানবপাচারের মামলারও প্রস্তুতি চলছে। নির্যাতিত তরুণীর বাবা মামলা দায়েরের করবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানায় পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত