হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পোলট্রি ফিড ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২১, ২২: ০০

ঢাকা: হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে আবদুল মোতালেব নামে এক ব্যক্তিকে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পোলট্রি ফিডের মেশিনারিজ আনার কথা বলে সিগারেট, মদ ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ভর্তি কন্টেইনার আনায় মাধ্যমে তিনি এই টাকা পাচার করেন। এই ঘটনায় আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তারাও জড়িত বলে জানিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুর রউফ বলেন, ২০১৭ সাল পর্যন্ত হেনান আনহুই এগ্রো এলসি এবং এগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি নামের দুইটি কোম্পানি পোলট্রি ফিড আমদানির নামে ১ হাজার ১৩ কোটি টাকা পাচার করা হয়। এই কোম্পানি দুটির মালিক আব্দুল মোতালেব। তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

টাকা পাচারের পদ্ধতি হিসেবে তিনি বলেন, মূলত উচ্চ মূল্যের কিন্তু কম শুল্কের পণ্য আমদানির ঘোষণা দেয় এ দুটি কোম্পানি। কিন্তু আমদানি করে কম মূল্যের উচ্চ শুল্কের পণ্য। এভাবে টাকার একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করে। এই কোম্পানি দুটি ৭৮টি কন্টেইনারের মাধ্যমে এই বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করে। টাকা পাচারের সঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেবে কাস্টমস।

তবে আবদুল মোতালেব বলছেন, টাকা পাচার সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি কাস্টমস কর্মকর্তাকে জানান, তাঁর পোলট্রি ফিডের ব্যবসা ছিল। ব্যবসায় তাঁর লোকসান হয়। তারপর এক ব্যক্তি তাঁকে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেন। সেখান থেকে তাঁর ভোটার আইডি কার্ডসহ বিভিন্ন তথ্য নেওয়া হয়। তিনি টাকা পাচার সম্পর্কে কিছুই জানেন না। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মালিক তাঁকে ফোন বন্ধ করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি মোবাইল ও সিমকার্ড ফেলে দিলেও দেশের বাইরে পালিয়ে যাননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টমস ডিজি বলেন, পাচারের মূল হোতা দুজন। তাঁদের একজনকে কাস্টমস গ্রেপ্তার করে। তিনি ৬ মাস পর জামিনে বের হয়ে আসেন। তবে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। মুলহোতাদের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে নাম বলা যাচ্ছে না। হোতাদের মধ্যে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। কিন্তু এখন নাম বলব না। মুলহোতাদের নাম না বলে আব্দুল মোতালেবকে হাজার কোটি টাকা পাচারকারী কেন বলা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্রে তার নাম আছে। কোম্পানি তার নামে। তাই তাঁকে পাচারকারী বলা হচ্ছে। কাস্টমস ডিজি জানান, তাঁরা মানিলন্ডারিংয়ের ৫৫টি মামলার তদন্ত করছেন। এসব মামলায় ১৭১ জন আসামি পলাতক রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত