Ajker Patrika

বিদ্রোহীর হামলায় বিধ্বস্ত নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা

ফরিদপুর ও নগরকান্দা প্রতিনিধি
বিদ্রোহীর হামলায় বিধ্বস্ত নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর। কিন্তু নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নে।

ওই ইউপিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কাছে হেরে যান আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. খোরশেদ খান। এর পর থেকেই তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের লোকজন ও বাড়িতে একের পর এক হামলা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোনো কারণ ছাড়াই ইউনিয়নের দরগা গট্টি গ্রামে নৌকার সমর্থক সেলিম তালুকদার ও নুরু তালুকদারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। একই সময় বাগাট গট্টি গ্রামের রুস্তম মোল্যা ও মিন্টু মোল্যাসহ কয়েকজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। পাশের আগুলদিয়া গ্রামেই খোরশেদের বাড়ি। ওই গ্রাম থেকে খোরশেদের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দরগা গট্টি গ্রামে এসে এ হামলা চালান বলে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের দিন বুধবার গট্টি গ্রামে খোরশেদের পক্ষের নেতা রফিক মাতুব্বরের সমর্থকেরা রকন মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া কয়েক মাস আগে আগুলদিয়া গ্রাম থেকে খোরশেদের সমর্থকেরা জোট বেঁধে পাশের মোড়হাট ও জয়ঝাপ গ্রামে কয়েকবার হামলা চালান। এসব ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়িঘর। এত কিছুর পরেও খোরশেদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ভুক্তভোগী দরগা গট্টি গ্রামের নুরু তালুকদার বলেন, ‘গত ইউপি নির্বাচনে যাঁরা নৌকায় ভোট দিয়েছেন, বেছে বেছে তাঁদের বাড়িতে একের পর এক হামলা চালাচ্ছেন খোরশেদ খান ও তাঁর সমর্থকেরা। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার কোনো কারণ ছাড়াই আগুলদিয়া গ্রাম থেকে আমাদের গ্রামে এসে আমাদের কয়েকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন।’

সেলিম তালুকদার নামের একজন বলেন, ‘নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকে পাগল হয়ে গেছেন খোরশেদ। প্রতিটি গ্রামে ইন্ধন দিয়ে সহিংসতা সৃষ্টি করছেন। খোরশেদের বাড়ি আগুলদিয়া গ্রামে। অথচ ওই গ্রাম থেকে দল বেঁধে প্রতিটি গ্রামে গিয়ে হামলা চালাচ্ছেন। খোরশেদের অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়ে আমরা বাড়িতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছি না। মনে হচ্ছে, নৌকায় ভোট দিয়ে আমরা পাপ করেছি।’

গট্টি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু বলেন, ‘নৌকার সমর্থকদের অত্যাচার-নির্যাতন করছেন বিদ্রোহী প্রার্থী খোরশেদ খান। আমি বিষয়টি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

অভিযুক্ত খোরশেদ খান সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। শুনেছি, বিভিন্ন এলাকার লোকজন এবং স্থানীয়রা রাতে (বৃহস্পতিবার) আজিজ মোল্যার নেতৃত্বে ২০-৩০ জন প্রথমে ছালাম ও কুটি মিয়াসহ আমার সমর্থকদের কয়েকজনের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে ওরা পাল্টা হামলা চালালে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আমি জানতে পেরে বিট অফিসারকে বিষয়টি জানাই।’

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, ‘গট্টি ইউনিয়নে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খোরশেদ খান উসকানি দিয়ে সহিংসতা সৃষ্টি করে আসছেন। পুলিশ তাঁকে ধরার জন্য চেষ্টা করছে। তা ছাড়া খোরশেদের সঙ্গে ইব্রাহিম, দেলোয়ার খা, খবির, পাভেল, জাহিদ ও সাহিন গট্টি ইউনিয়নে উসকানি দিয়ে সংঘর্ষ বাধাচ্ছেন বলে জানতে পেরেছি। এঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার আমলে গভর্নর হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলাম: আহসান এইচ মনসুর

আলোচনায় ড. ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী দেখার আকাঙ্ক্ষা, আইনি পথ কী

এক দশক পর প্রকাশ্যে গায়িকা ডাফি, শোনালেন অপহরণ ও ধর্ষণের ভয়াবহ বর্ণনা

জাতীয় ঈদগাহে যাবেন না রাষ্ট্রপতি, ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়বেন বঙ্গভবনে

শেখ হাসিনাকে ভারতে রেখে নির্বাচন পেছালে দেশের সংকট বাড়বে: ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত