আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
শুধু নামের মিল থাকায় ভয়ংকর কোনো অপরাধীর বদলে সাধারণ মানুষকেও কারাগারে পাঠাচ্ছে পুলিশ। বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেলের ঘানি টানছেন তাঁরা। কেউ কেউ হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়ে মুক্তি পাচ্ছেন। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা শাস্তির আওতায়ও আসছেন। তবু এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি থামছে না। এর কারণ অনুসন্ধানে খোদ পুলিশি প্রতিবেদনই উঠে এসেছে রহস্যময় এক অনুসন্ধান স্লিপের ত্রুটির কথা। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ পুলিশ বা বিপি ফরমে যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ছবি থাকে, তাহলে আর ভুল হবে না।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা বলছেন, ব্রিটিশ আমল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বা বিপি ফরম ৭৭ অনুসন্ধানী স্লিপ ধরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ওই ফরমে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে সুনির্দিষ্ট করে শনাক্ত করা যায় না। যে কারণে আসামির নাম ও বাবার নামের আংশিক মিল থাকায় নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোনো পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে শনাক্তে পুলিশ তাঁর স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানার সংশ্লিষ্ট থানায় এই ফরম অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তাঁকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার বা আটক করে। তবে পুলিশ বলছে, ১৯৪৩ সালের পুলিশ প্রবিধানের ৩৭৯ ধারায় এই ফরম ডিজাইন করা। যেখানে কেবল আসামির নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা থাকে। একই এলাকায় একই নামের একাধিক লোক থাকলে তখন তাঁদের শনাক্তে জটিলতা হয়।
বিগত চার বছরে এমন বিনা অপরাধে কারাভোগের কারণ খুঁজতে গিয়ে খোদ পুলিশের তদন্তেই উঠে এসেছে ‘ব্রিটিশ আমলের অনুসন্ধান স্লিপের’ কারণেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তাই সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত পুলিশের অনুসন্ধান স্লিপের পরিবর্তন আনার সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি।
অপরাধ না করেও নামের মিল থাকায় ৫ বছর কারাভোগ
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের হাতে ২০০৫ সালে পল্লবী থানার একটি মাদকের মামলায় সাহাবুদ্দিন বিহারি ওরফে আরমান নামের এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হন। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক থাকেন। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর আরমানের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। তাঁকে গ্রেপ্তারে আদালতের নির্দেশনা আসে ডিএমপিতে। ডিএমপি সদর দপ্তর আরমানের নাম ঠিকানাসহ অনুসন্ধানী স্লিপ পাঠিয়ে পল্লবী থানাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়। তবে পল্লবী থানা-পুলিশ ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি আরমান নামে মিরপুরে বেনারসিপল্লির নিরপরাধ এক কারিগরকে গ্রেপ্তার করে। কেবল নামের আংশিক মিল ও বাবার নাম মিল থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তিনি পাঁচ বছর কারাভোগ করেন।
পরে তাঁর মা বানু খাতুন ২০১৯ সালের ৭ জুলাই উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা করেন। এরপর নিরপরাধ ৪ বছর ১১ মাস ২২ দিন কারাভোগের পর ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি মুক্তি পান। উচ্চ আদালত বিষয়টি পুলিশ মহাপরিদর্শককে তদন্তের নির্দেশ দেন। আরমানকে বেআইনি আটকের ঘটনা তদন্ত শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আরমানের ঘটনাটি তদন্ত করতে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলমকে সভাপতি করে একটি তদন্ত কমিটি করে পুলিশ সদর দপ্তর। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম এবং সদস্য পুলিশ পরিদর্শক মো. কবির হোসেন। কমিটি ঘটনার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল অভিযুক্ত ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাতজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেন।
বাপের নামের পরিবর্তে শ্বশুরের নাম
কমিটির দেওয়া ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে, ২০০৫ সালে ডিবির হাতে সাহাবুদ্দিন বিহারি ওরফে আরমানকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর বাবার নাম আড়াল করেন। পুলিশের কাছে তিনি নিজের বাবার নামের পরিবর্তে শ্বশুরের নাম মো. ইয়াছিন বলেন। তাঁর বাবার প্রকৃত নাম মঈন উদ্দিন ওরফে মহিউদ্দিন। সাহাবুদ্দিন বিহারি আরমানের নামের সঙ্গে বেনারসিপল্লির কারিগর আরমানের ও তার বাবার নামের মিল থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। আরমান প্রকৃত আসামি কি না, তা গ্রেপ্তারকারী পুলিশ সদস্যরা পেশাদারির সঙ্গে যাচাই করেননি। এ ছাড়া আসামি শনাক্তে ১৯৪৩ সালের পুলিশ আইন বা পিআরবি প্রবিধানের ৩৭৯ ধারায় ‘ফরম বিপি ৭৭’ এ যে ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা অপর্যাপ্ত বলে কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে। তাই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলেও কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
৪ বছরে একই রকম ৯ জনের কারাভোগ
আরমান ছাড়াও গত চার বছরে একই রকম ৯ জন ব্যক্তি বিনা অপরাধে কারাভোগ করেছেন। তাঁরা হলেন টাঙ্গাইলের জাহালম, সিরাজগঞ্জের মানিক হাওলাদার, কুমিল্লার লেপ-তোশকের দোকানি মো. ইউনুছ, পটুয়াখালীর গলাচিপার বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক রাজিব মিয়া, ভোলার লালমোহনের দিনমজুর লিটন, চট্টগ্রামের মিনু এবং টেকনাফের হাসিনা বেগম। চলতি বছরের অক্টোবরে তদন্ত কমিটি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জানান, নিরপরাধ আরমানের কারাভোগের প্রধান কারণ পুলিশের অনুসন্ধান স্লিপ ৭৭। ওই ফরমে আসামির পর্যাপ্ত তথ্য চাওয়া হয়নি। এ জন্যই নিরপরাধ মানুষ কেবল নামের মিল থাকায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন। গত ২৪ অক্টোবর আইজিপি ফরমটি সংশোধনের জন্য পিবিআইয়ের কমিটিকে এ বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাব দিতে বলেন। গত ৬ নভেম্বর পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার প্রস্তাবটি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠান। এরপর সেটি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে।
আসামির ছবি সংযুক্ত
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমান ফরমে আসামির কেবল বাবার নাম চাওয়া হয়, তবে প্রস্তাবিত ফরমে মাতার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া অনুসন্ধানী স্লিপে আসামি গ্রেপ্তারের পর যে ছবি তোলা হয়, সেই ছবিও সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। আসামির নাম-ঠিকানার সঙ্গে ‘অনুসন্ধানী স্লিপ বা বিপি ৭৭ ফরমে’ তাঁর ছবি থাকলে একজনের পরিবর্তে আরেকজন গ্রেপ্তার হওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া প্রস্তাবিত ‘অনুসন্ধান স্লিপে’ আসামির জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি সংযুক্ত করলে নিরপরাধ মানুষ গ্রেপ্তার হবেন না বলেও প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিটির করা প্রস্তাবিত বিপি ফরম যাতে কার্যকর হয় এবং ব্যবহারের জন্য তা মুদ্রণ ও সরবরাহ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পুলিশ সদর দপ্তর অনুরোধ জানিয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যে সকল ত্রুটি পেয়েছি। তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। তবে পুরোনো অনুসন্ধান স্লিপে আসামি শনাক্তে খুবই কম তথ্য চাওয়া হয়। যার জন্য শনাক্ত করতে পুলিশকে বেগ পেতে হয়। তবে ফরমে যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ছবি থাকে, তাহলে আর ভুল হবে না। তাই আমরা এই ফরম পরিবর্তন করে নতুন ফরম করার প্রস্তাব দিয়েছি।’
শুধু নামের মিল থাকায় ভয়ংকর কোনো অপরাধীর বদলে সাধারণ মানুষকেও কারাগারে পাঠাচ্ছে পুলিশ। বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেলের ঘানি টানছেন তাঁরা। কেউ কেউ হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়ে মুক্তি পাচ্ছেন। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা শাস্তির আওতায়ও আসছেন। তবু এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি থামছে না। এর কারণ অনুসন্ধানে খোদ পুলিশি প্রতিবেদনই উঠে এসেছে রহস্যময় এক অনুসন্ধান স্লিপের ত্রুটির কথা। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ পুলিশ বা বিপি ফরমে যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ছবি থাকে, তাহলে আর ভুল হবে না।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা বলছেন, ব্রিটিশ আমল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বা বিপি ফরম ৭৭ অনুসন্ধানী স্লিপ ধরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ওই ফরমে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে সুনির্দিষ্ট করে শনাক্ত করা যায় না। যে কারণে আসামির নাম ও বাবার নামের আংশিক মিল থাকায় নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোনো পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে শনাক্তে পুলিশ তাঁর স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানার সংশ্লিষ্ট থানায় এই ফরম অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তাঁকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার বা আটক করে। তবে পুলিশ বলছে, ১৯৪৩ সালের পুলিশ প্রবিধানের ৩৭৯ ধারায় এই ফরম ডিজাইন করা। যেখানে কেবল আসামির নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা থাকে। একই এলাকায় একই নামের একাধিক লোক থাকলে তখন তাঁদের শনাক্তে জটিলতা হয়।
বিগত চার বছরে এমন বিনা অপরাধে কারাভোগের কারণ খুঁজতে গিয়ে খোদ পুলিশের তদন্তেই উঠে এসেছে ‘ব্রিটিশ আমলের অনুসন্ধান স্লিপের’ কারণেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তাই সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত পুলিশের অনুসন্ধান স্লিপের পরিবর্তন আনার সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি।
অপরাধ না করেও নামের মিল থাকায় ৫ বছর কারাভোগ
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের হাতে ২০০৫ সালে পল্লবী থানার একটি মাদকের মামলায় সাহাবুদ্দিন বিহারি ওরফে আরমান নামের এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হন। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক থাকেন। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর আরমানের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। তাঁকে গ্রেপ্তারে আদালতের নির্দেশনা আসে ডিএমপিতে। ডিএমপি সদর দপ্তর আরমানের নাম ঠিকানাসহ অনুসন্ধানী স্লিপ পাঠিয়ে পল্লবী থানাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়। তবে পল্লবী থানা-পুলিশ ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি আরমান নামে মিরপুরে বেনারসিপল্লির নিরপরাধ এক কারিগরকে গ্রেপ্তার করে। কেবল নামের আংশিক মিল ও বাবার নাম মিল থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তিনি পাঁচ বছর কারাভোগ করেন।
পরে তাঁর মা বানু খাতুন ২০১৯ সালের ৭ জুলাই উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা করেন। এরপর নিরপরাধ ৪ বছর ১১ মাস ২২ দিন কারাভোগের পর ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি মুক্তি পান। উচ্চ আদালত বিষয়টি পুলিশ মহাপরিদর্শককে তদন্তের নির্দেশ দেন। আরমানকে বেআইনি আটকের ঘটনা তদন্ত শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আরমানের ঘটনাটি তদন্ত করতে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলমকে সভাপতি করে একটি তদন্ত কমিটি করে পুলিশ সদর দপ্তর। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম এবং সদস্য পুলিশ পরিদর্শক মো. কবির হোসেন। কমিটি ঘটনার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল অভিযুক্ত ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাতজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেন।
বাপের নামের পরিবর্তে শ্বশুরের নাম
কমিটির দেওয়া ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে, ২০০৫ সালে ডিবির হাতে সাহাবুদ্দিন বিহারি ওরফে আরমানকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর বাবার নাম আড়াল করেন। পুলিশের কাছে তিনি নিজের বাবার নামের পরিবর্তে শ্বশুরের নাম মো. ইয়াছিন বলেন। তাঁর বাবার প্রকৃত নাম মঈন উদ্দিন ওরফে মহিউদ্দিন। সাহাবুদ্দিন বিহারি আরমানের নামের সঙ্গে বেনারসিপল্লির কারিগর আরমানের ও তার বাবার নামের মিল থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। আরমান প্রকৃত আসামি কি না, তা গ্রেপ্তারকারী পুলিশ সদস্যরা পেশাদারির সঙ্গে যাচাই করেননি। এ ছাড়া আসামি শনাক্তে ১৯৪৩ সালের পুলিশ আইন বা পিআরবি প্রবিধানের ৩৭৯ ধারায় ‘ফরম বিপি ৭৭’ এ যে ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা অপর্যাপ্ত বলে কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে। তাই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলেও কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
৪ বছরে একই রকম ৯ জনের কারাভোগ
আরমান ছাড়াও গত চার বছরে একই রকম ৯ জন ব্যক্তি বিনা অপরাধে কারাভোগ করেছেন। তাঁরা হলেন টাঙ্গাইলের জাহালম, সিরাজগঞ্জের মানিক হাওলাদার, কুমিল্লার লেপ-তোশকের দোকানি মো. ইউনুছ, পটুয়াখালীর গলাচিপার বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক রাজিব মিয়া, ভোলার লালমোহনের দিনমজুর লিটন, চট্টগ্রামের মিনু এবং টেকনাফের হাসিনা বেগম। চলতি বছরের অক্টোবরে তদন্ত কমিটি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে জানান, নিরপরাধ আরমানের কারাভোগের প্রধান কারণ পুলিশের অনুসন্ধান স্লিপ ৭৭। ওই ফরমে আসামির পর্যাপ্ত তথ্য চাওয়া হয়নি। এ জন্যই নিরপরাধ মানুষ কেবল নামের মিল থাকায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন। গত ২৪ অক্টোবর আইজিপি ফরমটি সংশোধনের জন্য পিবিআইয়ের কমিটিকে এ বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাব দিতে বলেন। গত ৬ নভেম্বর পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার প্রস্তাবটি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠান। এরপর সেটি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে।
আসামির ছবি সংযুক্ত
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমান ফরমে আসামির কেবল বাবার নাম চাওয়া হয়, তবে প্রস্তাবিত ফরমে মাতার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া অনুসন্ধানী স্লিপে আসামি গ্রেপ্তারের পর যে ছবি তোলা হয়, সেই ছবিও সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। আসামির নাম-ঠিকানার সঙ্গে ‘অনুসন্ধানী স্লিপ বা বিপি ৭৭ ফরমে’ তাঁর ছবি থাকলে একজনের পরিবর্তে আরেকজন গ্রেপ্তার হওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া প্রস্তাবিত ‘অনুসন্ধান স্লিপে’ আসামির জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি সংযুক্ত করলে নিরপরাধ মানুষ গ্রেপ্তার হবেন না বলেও প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিটির করা প্রস্তাবিত বিপি ফরম যাতে কার্যকর হয় এবং ব্যবহারের জন্য তা মুদ্রণ ও সরবরাহ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পুলিশ সদর দপ্তর অনুরোধ জানিয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যে সকল ত্রুটি পেয়েছি। তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। তবে পুরোনো অনুসন্ধান স্লিপে আসামি শনাক্তে খুবই কম তথ্য চাওয়া হয়। যার জন্য শনাক্ত করতে পুলিশকে বেগ পেতে হয়। তবে ফরমে যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ছবি থাকে, তাহলে আর ভুল হবে না। তাই আমরা এই ফরম পরিবর্তন করে নতুন ফরম করার প্রস্তাব দিয়েছি।’
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১৭ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১৭ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১৭ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
২১ দিন আগে