অভিযোগ পেলে পরীমণির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : গোয়েন্দা পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২১, ১৫: ১৪
আপডেট : ১৭ জুন ২০২১, ২০: ৩০

ঢাকা: নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে কর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে রাজধানীর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। গভীর রাতে ওই ক্লাবে গিয়ে মদ চেয়ে পরীমণির ভাঙচুরের ঘটনায় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

হাফিজ আক্তার বলেন, যেহেতু মামলাগুলো চলমান, মামলার বাদীকে (পরীমণি) প্রয়োজনে সব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্ত শেষে বিষয়গুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত কথা বলা যাবে।

হাফিজ বলেন, `কমিউনিটি ক্লাবের ঘটনাটি আমাদের গুলশান টিম এলাকায়। আমরা জেনেছি, ৮ জুন গভীর রাতে পরীমণি ওই ক্লাবে গিয়েছেন। ৯৯৯-এর একটি ফোনে ওখানকার ঘটনাটি জানতে পারে পুলিশ। তবে পরবর্তী সময়ে এটা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা এটা নিয়ে কাজ করব।'

৮ জুন গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে নায়িকা পরীমণি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান। ওই রাতে পরীমণি ও তাঁর সঙ্গীরা কী কী করেছেন তা বুধবার (১৬ জুন) রাতে গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ক্লাবের এক সদস্যের রেফারেন্সে এক নারী ও এক পুরুষসহ ৭ জুন গভীর রাতে ক্লাবে আসেন পরীমণি। তিনি মাতাল অবস্থায় প্রায় ১৫টি গ্লাস, ৯টি সিগারেটের ছাইদানি এবং কয়েকটি ছোট প্লেট ভাঙচুর করেন। কেউই তাঁকে আটকাতে পারেনি।’

আলমগীর বলেন, 'নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পর অ্যালকোহলসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরীমণির সামাজিক পরিচয় বিবেচনায় তাঁকে সেবা দেন বার টেন্ডাররা। কিন্তু পরীমণি আরও সেবা চাইছিলেন।'

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরীমণির সঙ্গে থাকা জিমি হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরার কারণে ক্লাবের পোশাক নীতিমালা ভাঙায় তাঁকে বের হয়ে যেতে বলে কর্তৃপক্ষ। এতেই খেপে যান পরীমণি। তারপর অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে ভাঙচুর শুরু করেন তিনি। প্রায় ৫০ মিনিট তাঁরা ক্লাবে ছিলেন।

ঘটনার পরপর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে পুলিশ ডাকেন পরীমণি। পুলিশ এসে তাঁর অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়ায় ক্লাব থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। পরে ওই রাতে পুরো ঘটনা থানায় নথিভুক্ত করে রাখে গুলশান থানার পুলিশ।

আলমগীর বলেন, তাঁরা যে সদস্যদের মাধ্যমে ক্লাবে আসেন, তিনিও তাঁদের চলে যেতে বলেন। কিন্তু তাঁরা যেতে চাননি। পরে বাধ্য হয়ে আমাদের সেই সদস্যই চলে যান। এর মধ্যে আমাদের ক্লাবের সব কর্মকর্তা চলে যান। শুধু দুজন ওয়েটার ছিল।

এর আগে গত রোববার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন এই অভিনেত্রী। স্ট্যাটাসে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর সহায়তা চান। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাভার থানায় একটি মামলা হয়। এরপর গ্রেপ্তার হন মূল অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ পাঁচজন। তাঁদের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ (৬৫) ও তুহিন সিদ্দিকী অমির (৩৩) সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিনই পরীমণি রাজধানীর মিন্টো রোডের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে কথা বলার জন্য যান। সেখান থেকে বের হয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বন্ধুসুলভ আচরণ করেছে। এত তাড়াতাড়ি পুলিশ ম্যাজিকের মতো আমাকে সহযোগিতা করবে সেটা আমি ভাবতে পারিনি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেখলাম আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমি অভিযোগের ব্যাপারে সঠিক বিচার পাব। পুলিশের ওপর আমার আস্থা আছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত