‘অপরাধে জড়ালেই ব্যবস্থা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও চৌগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ১২: ৫০
Thumbnail image

কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধে জড়ালে তাঁকে বাহিনী থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেছেন, পুলিশে কোনো অপরাধীর স্থান নেই। অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই পুলিশ বাহিনী।

পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা নিজে অপরাধ করব না। সিনিয়র, জুনিয়র কোনো সহকর্মীকেই অপরাধ করতে দেব না।’

গতকাল বুধবার সকালে যশোর পুলিশ লাইনসে খুলনা রেঞ্জের সব ইউনিটের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও ফোর্সের সঙ্গে বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন। এ সময় মানুষের সঙ্গে অমানবিক ও অপেশাদার আচরণ না করার জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

গত মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে যশোরে আসেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।

করোনাকালে পুলিশের অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় পুলিশ এক মুহূর্তের জন্যও দায়িত্ব পালনে পিছপা হয়নি। প্রথম দিকে পুলিশের সুরক্ষা সামগ্রী ছিল না, পিপিই ছিল না, তবুও পুলিশ দেশ ও জনগণের সেবায় প্রথম দিন থেকেই আত্মনিয়োগ করেছে। করোনাকালে দেশমাতৃকার সেবায়, দেশ ও জনগণের জন্য আমাদের ১০৬ জন সহকর্মী আত্মোৎসর্গ করেছেন। ২৭ হাজার পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নিজেদের দায়িত্বের গণ্ডি পেরিয়ে পুলিশ মানুষকে সেবা দিয়েছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ পুলিশকে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ এখন ‘‘ফ্রন্টলাইন হিরো’’।’

সহকর্মীদের উদ্দেশে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম বুলেট নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে পুলিশ জনগণের আস্থা, ভালোবাসা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। আবার করোনাকালে পুলিশ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। জনগণের এ বিশ্বাস ও আস্থা ধরে রাখা অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমাদের সবাইকে এ কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সবাই মিলে পুলিশ বাহিনীর সম্মান বাড়াতে হবে।’

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী আধুনিক পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।’

পুলিশের আধুনিকায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘ইতিমধ্যে পুলিশে সর্বাধুনিক ট্যাকটিক্যাল বেল্ট, বডি ওর্ন ক্যামেরা ইত্যাদি যুক্ত হয়েছে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে এবং জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ভবিষ্যতে পুলিশের আধুনিকায়নে যা যা করা প্রয়োজন, তাই করা হবে।’

পুলিশের নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কারের প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘দীর্ঘ ৪০ বছর পর পুলিশের কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি সংস্কার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কনস্টেবল পদে জব মার্কেট থেকে “বেস্ট অব দি বেস্ট’’ প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছে। সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’

আইজিপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও করোনাকালে দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ও তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ড. খ মহিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।

এ দিন আইজিপি যশোর পুলিশ হাসপাতাল, ইন্সপেক্টর কোয়ার্টার, চৌগাছা, যশোর এবং পুলিশ অফিসার্স মেস উদ্বোধন করেন। তিনি যশোর জেলা পুলিশের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত