বিএসএমএমইউতে নকল মাস্ক সরবরাহ: সেই শারমিনের দোষ পায়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২১, ১৬: ৩৩
আপডেট : ২২ জুন ২০২১, ১৭: ১২

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ সঠিক নয়। এ কারণে এ ঘটনায় করা মামলা থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহানকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মোর্শেদ হোসেন খান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন গত ২৮ এপ্রিল।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাস্কগুলো নকল ছিল না। মামলা দায়েরের সময় তথ্যগত ভুল ছিল। এ ছাড়া মামলার বাদী তদন্ত কর্মকর্তাকে তথ্য সরবরাহ করেননি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত নয় মাসের তদন্তে নকল মাস্ক সম্পর্কে কোনো সাক্ষ্য–প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আইন ও বিএসএমএমইউয়ের সঙ্গে চুক্তিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এন–৯৫ মাস্কগুলো মানসম্মত ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোজাফ্ফর আহমেদ গত বছর ২৩ জুলাই শারমিনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মাস্ক সরবরাহ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচে যাঁরা মাস্ক সরবরাহের দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁদের দেওয়া এন-৯৫ মাস্ক নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে তৃতীয় ব্যাচেই দেখা দেয় বিপত্তি। অভিযোগ ওঠে, এই চালানে সেখানে দায়িত্ব পালন করা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করা হয়। নকল মাস্কগুলোতে লেখা ভুল, লট নম্বর ছিল না। অভিযোগে বলা হয়, আসল এন-৯৫ মাস্কের সঙ্গে নকল মাস্কও সরবরাহ করে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রায় ৮০-৯৫ লাখ টাকার মাস্ক নিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। নোটিশের জবাবও দেন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহান। এতে তিনি বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেন। জবাবে বলা হয়, নকল মাস্ক সরবরাহ করার কোনো ইচ্ছা তাঁদের ছিল না। তাঁদের কাছে যেভাবে প্যাকেটজাত অবস্থায় মাস্কগুলো এসেছে সেভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তাঁরা সেসব মাস্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

মামলার পরপরই গত বছর ২৩ জুলাই শারমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৫ জুলাই আদালতে হাজির করে তাঁকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১০ সেপ্টেম্বর শারমিন জামিন পান। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শারমিনকে সাময়িক বরখাস্তও করে।

মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে ঢাকার আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন ফকির আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ২৮ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। একমাত্র আসামি শারমিনের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। তবে করোনার কারণে মামলার তারিখ ধার্য না হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়নি। এখন যেকোনো দিন শুনানির তারিখ ধার্য হবে।

 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত