Ajker Patrika

দলবল নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাকে পেটালেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

সময়টা বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টা। চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেটস্থ দোকান মালিক সমিতির অফিস কক্ষ। চেয়ারে বসে আছেন সমিতির প্রচার সম্পাদক মনির হোসেন বাপ্পী। পাশে সমিতির আরও কয়েকজন নেতা। এ সময় আচমকা অফিসে ঢোকেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজেমী ও স্টেট অফিসার রেজাউল করিম। 

তাঁদের নেতৃত্বে সিটি করপোরেশনের একদল নিরাপত্তা রক্ষীসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন। দলটি অফিসে ঢুকেই সমিতির নেতাদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ায়। একপর্যায়ে মনির হোসেনকে বেধড়ক মার শুরু করেন স্টেট অফিসার রেজাউল করিম। এরপর অন্যরা যোগ দেন। চতুর্মুখী মারধরে আহত হন মনির হোসেন বাপ্পী। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়। 

এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। 

বিষয়টি নিয়ে শনিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছে দোকান মালিক সমিতি। সমিতির সহসভাপতি মো. ইব্রাহিম ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মার্কেটের ৩৭১ নম্বর দোকানটির মালিক সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রকৌশলী আবদুল মালেক। তিনি প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তার কমান্ডার লতিফুল হক কাজেমীর শ্বশুর। দোকানটি মনির ও জাকির হোসেন নামে দুই ভাই ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করতেন। মন্দার কারণে তাঁরা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন। দোকান মালিকের কাছে তাঁদের ১১ লাখ টাকা জামানত ছিল। 

ভাড়াটিয়া ও মালিকের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিয়ম অনুযায়ী সমিতি তা মিটমাট করে দেয়। এ ক্ষেত্রেও সমিতি তা করতে গেলে দোকান মালিক প্রভাব দেখাতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। মারধরের সেই দৃশ্য সমিতির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সেই ফুটেজ আজকের পত্রিকার কাছে সংরক্ষিত আছে।

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজেমী ঘটনার কথা স্বীকার করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের মেয়রের নির্দেশে একটা বন্ধ দোকান উচ্ছেদ করতে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ওই মার্কেটে যাই। একপর্যায়ে দোকান মালিক সমিতির একজন আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে উচ্ছেদ দলে থাকা কর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়।’

ভিড়িও ফুটেজে মারধরের দৃশ্য রয়েছে— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমি সমিতির ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। কয়েক দিন আগে ওই দোকানের মালিক সিটি করপোরেশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী আবদুল মালেকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সেখানে উচ্ছেদ অভিযানে যাই।’ সাবেক ওই কর্মকর্তা তাঁর শ্বশুর কিনা সে প্রশ্নে চুপ থাকেন কমান্ডার লতিফুল হক কাজেমী।

ঘটনার বর্ণনায় মারধরের শিকার মনির হোসেন বাপ্পী বলেন, ‘আমি সমিতির প্রচার সম্পাদক ও মার্কেটের তৃতীয় তলার দায়িত্বপ্রাপ্ত। তৃতীয় তলার ৩৭১ নম্বর দোকানটি নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা চলছিল। সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে আমি সমস্যা সমাধানের অংশ হিসেবে নিয়মমাফিক আলাপ আলোচনা করছিলাম অফিসে। এ সময় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা সমিতির কোনো কথা না শুনে আমার ওপর হামলে পড়ে। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে তারা। এ সময় সমিতির অফিস সহকারী মাহমুদুল হক জামশেদকেও তারা বেধড়ক মারধর করে। এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’ 

এ বিষয়ে দোকান মালিক সমিতির আরেক সহসভাপতি দস্তগীর আজাদ বলেন, ‘মনির হোসেন বাপ্পী আমাদের মার্কেটের ৩৩৩ জন ব্যবসায়ীর নির্বাচিত প্রতিনিধি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা তাঁকে এভাবে বেধড়ক মারধর করতে পারেন না। এ নিয়ে আমরা মাননীয় মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত