চবিতে চায়ের দোকানে চেয়ারে বসা নিয়ে সাংবাদিককে পেটাল ছাত্রলীগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩, ০১: ২৯
আপডেট : ২০ জুন ২০২৩, ০১: ৩০

চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক সাংবাদিকের মুখে গরম চাসহ কাপ ছুড়ে মেরেছেন শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে উল্টো পেটে উপর্যুপরি লাথি ও মারধর করেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা।

সোমবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে একটি চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য এবং একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

সাংবাদিকের মুখে চা ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদের বিরুদ্ধে। মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত একজন শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান। বাকি আরও ১০-১২ জনকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় স্টেশনে চা খেতে গিয়েছিলাম। ছাত্রলীগের খালেদসহ বেশ কয়েকজন বসে ছিল সেখানে। একটি চেয়ার খালি থাকায় আমি সেটা নিয়ে আসার সময় খালেদ আমাকে বলল— তুমি এটা কার অনুমতি নিয়ে নিচ্ছ? আমি খালেদকে আগে থেকে চিনতাম, ও আমাদের জুনিয়র। তাই বললাম, তুমি করে বলছ কেন? আমাকে চিনো? এরপর সে আমার সেশন জিজ্ঞেস করে। সেশন বলার সঙ্গে সঙ্গে তার হাতে থাকা গরম চাসহ চায়ের কাপ আমার মাথায় মেরে দেয়।’

সাংবাদিক আরও বলেন, ‘আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে সে বলে, তুই সাংবাদিক হইছোস তো কী হইছে? এ কথা বলেই তার সঙ্গে থাকা ১০-১২ জন আমাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা চায়ের কাপ দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করতে থাকে এবং পেটে লাথি মারতে শুরু করে। এর মধ্যে আরাফাত রায়হান বেশি মারধর করেছে। বাকিদেরও চিনি। তবে সবার নাম এখন মনে করতে পারছি না। আমার কিডনিতে আগে থেকেই সমস্যা আছে। পেটে আঘাত পাওয়ায় পেট ফুলে যাচ্ছে, খুব অসুস্থ বোধ করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি বমি করে, তাহলে সিটিস্ক্যান করানো লাগবে। এ ছাড়া রোগীর কিডনিতে সমস্যা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে পেটে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে কি-না পরীক্ষা করে দেখতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ বলেন, ‘চেয়ার নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। পরে তিনি খারাপ ব্যবহার করায় হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। মারধর করা হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে দেখতে এসেছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত