টাকার জন্য ইউপি সদস্য আরিফকে অপহরণ করে হত্যা: পিবিআই

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ৩৬
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩: ২৯
Thumbnail image
ইউপি সদস্য আরিফ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার চারজন। ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আরিফুর রহমান আরিফ (৪৬) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার ভোররাতে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার দাপুনিয়া খেজুরতলা মোড় এলাকা থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করে। পিবিআই জানায়, টাকা আদায়ের জন্য আরিফকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে।

১ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার পিঠাসুতাগামী সড়কের পাশে অজ্ঞাত হিসেবে আরিফের মরদেহের সন্ধান মেলে। পরদিন নিহতের স্ত্রী আয়শা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে তারাকান্দা থানায় মামলা করেন।

নিহত আরিফুর রহমান আরিফ রায়পুর উপজেলার লামচরী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চারবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য ছিলেন। আরিফ এর আগে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সদস্য ছিলেন। স্থানীয় জোড়পোল বাজারে তাঁর ফার্নিচার ও রড-সিমেন্টের দুটি দোকান রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আশিকুর রহমান (৩৫), রাহাত হোসেন তন্ময় (২৫), পরশ চৌধুরী শ্রাবণ (২৯) ও এহতেশামুল হক নিশাত (২৫)। আশিকুর মাদারীপুরের শিবচর গ্রামের বাসিন্দা। তন্ময়ের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার কুমারগাতি গ্রামে। শ্রাবণ রংপুরের কোতোয়ালি থানার গণেশপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নিশাত তারাকান্দার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে গ্রেপ্তারের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে নেওয়া হলে তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ঢাকা থেকে জব্দ করা হয়েছে।

পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার জানান, আসামিরা অপহরণ চক্রের সদস্য। আসামি শ্রাবণ ঢাকায় অবস্থানরত আরিফুর রহমান আরিফের তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা সাজান। গত ২৫ ডিসেম্বর শ্রাবণ ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে আসেন। ৩১ ডিসেম্বর তাঁর বন্ধু তন্ময় ও নিশাতকে নিয়ে ঢাকার মিরপুর চলে যান। সেখানে গিয়ে আসামি শ্রাবণ সুকৌশলে আরিফুর রহমানকে মিরপুর ১ নম্বর এলাকা থেকে ডেকে নেন। আরিফুর রহমান সেখানে আসামাত্র আসামি শ্রাবণ, আশিক, তন্ময় ও নিশাত মিলে তাঁকে ধরে ফেলেন। প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তাঁদের আগে থেকেই ভাড়া করে রাখা গাড়িতে উঠতে বলেন।

রকিবুল আক্তার আরও জানান, আরিফুর রহমান গাড়িতে ওঠামাত্র তাঁরা ময়মনসিংহের দিকে রওনা দেন। আরিফকে বাধ্য করেন তাঁর স্ত্রীর কাছে মোবাইল ফোনে কল করতে ও টাকা পাঠানোর জন্য এসএমএস করতে। বিকাশ নম্বর হিসেবে আসামি আশিকের একটি নম্বর দেন। গাজীপুরে জ্যামে গাড়ি আটকে গেলে আরিফ নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলে আসামিরা অপহরণের বিষয়টি যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য তাঁকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে আসামিরা আরিফকে হত্যা করে ফেলে রেখে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত