রাবির শিক্ষক তাহের হত্যা: যেকোনো সময় কার্যকর হবে আসামিদের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২: ৩৪
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২: ৪৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলার আসামি জাহাঙ্গীরের আটকের বৈধতা নিয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর ফলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা রইল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদেশের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, বিষয়টি আপিল বিভাগে পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি হয়েছে। রিভিউ খারিজ হয়েছে। এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছে করা আবেদনও খারিজ হয়েছে। এর পরও তাঁরা আবেদন করেছিলেন, যা খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফাঁসি কার্যকর বিলম্ব করতেই ইচ্ছা করে এই আবেদন করা হয়েছিল। এখন ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।

এর আগে জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাবের করা রিট গত ১৭ জুলাই খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত চাওয়া হয়।

মঙ্গলবার শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী এস এন গোস্বামীকে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটা বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল-রিভিউ সব শেষ হলো। তারপর আবার এটার বিরুদ্ধে রিট নিয়ে হাইকোর্টে গেলেন কেন? এখানে রিট করার কোনো সুযোগ আছে? 

জবাবে আইনজীবী গোস্বামী বলেন, ‘এ রকম ডিসিশন নেই। তবে আমাদের আপত্তির জায়গাটা হচ্ছে, আসামিকে আটক ও আদালতে হাজিরের ক্ষেত্রে সংবিধানের বিধান মানা হয়নি।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজিরের বিষয়টি আপিলের রায়ে উত্তর দেওয়া হয়েছে। আর একজন প্রফেসরকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো, সেটা ৭১ সালের বর্বরতাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন আমরা কোনো বিচার করি, তখন ঘটনাটা আমাদের সামনে রাখতে হয়।’

এ সময় বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম আইনজীবী এস এন গোস্বামীকে বলেন, ক্লায়েন্টকে সৎ পরামর্শ দেওয়াটাও একজন আইনজীবীর দায়িত্ব।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি তাঁর লাশ বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এই হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। পরে দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।

তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন। আপিল খারিজ হলে রিভিউ আবেদন করেন তাঁরা। তবে ওই রিভিউ আবেদনও খারিজ হয়। রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করা হয় ৩ মে। 

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার আবদুল জলিল গত ১৯ জুলাই বলেছেন, কোনো আইনি বাধা না থাকলে চলতি মাসেই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত