Ajker Patrika

বড় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
বড় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নরসিংদীর রায়পুরায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নর জেরে বড় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাই মো. শফিকুল ইসলামকে (২৬) রাতভর পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার সকালে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের দড়ি হাইরমারা দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত শফিকুল ইসলাম ওই এলাকার মৃত মোরশেদ মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়ার কুলি ছিলেন। 

অভিযুক্তরা হলেন, আব্দুল মোতালিব ও মাসুম। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক রয়েছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমার ছেলে সুমন মিয়ার বাড়িতে একটি মিটার রয়েছে। কিন্তু সুমন টঙ্গীতে বসবাস করায় বর্তমানে তাঁর সংযোগটি অপর ভাই মাসুম ব্যবহার করে আসছিল। পরে একই মিটার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাচ্ছিল শফিকুল। তাতে আপত্তি জানায় বড় দুই ভাই মোত্তালিব ও মাসুম। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। তবুও শফিকুল তাঁর ভাই সুমনের পরিচয় দিয়ে স্থানীয় পল্লিবিদ্যুৎ চরসুবুদ্ধি সাব জোনাল অফিসে সংযোগ বিচ্ছিন্নের আবেদন করেন। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির লোকেরা গতকাল দুপুরে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ওই সময় মোতালিবের একটি অবৈধ সংযোগ দেখতে পান তাঁরা। পরে অবৈধ ও বৈধ দুটি সংযোগই বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরই জেরে রাতে শফিকুলের সঙ্গে মোত্তালিব ও মাসুম বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। পরে বাড়ির আঙিনায় শফিকুলকে একটি কাঁঠাল গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর উপর্যুপরি পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আজ সকালে স্থানীয়রা শফিকুলের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখে মা এবং পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। 

নিহতের মা আয়েশা বেগম বলেন, ঘটনার সময় আমি আমার বাবার বাড়ি ছিলাম। তবে ঘটনার পর থেকে আমার দুই ছেলে মোতালিব ও মাসুম পলাতক রয়েছেন। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বাড়ির অবৈধ ও বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়ে যাওয়া নিয়ে শফিকুলের ওপর বড় দুই ভাই মাসুম ও মোতালেব ক্ষুব্ধ ছিলেন। এর জেরে গতকাল রাতে দুই ভাই মিলে পিটিয়ে শফিকুলকে হত্যা করেছেন বলে শুনেছি। 

চরসুবুদ্ধি পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির সাব জোনাল অফিসের এজিএম আব্দুল্লাহ ইবনে আজিজ বলেন, এ বিষয়ে আগে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। গতকাল নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে ওই দুটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডটি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন নিয়ে হয়েছে কিনা তা জানি না। মনে হচ্ছে তাঁদের পূর্ব বিরোধের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। 

এ বিষয়ে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মরদেহটি উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

উপপরিদর্শক আরও বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত