মোবাইল ফোনে প্রেমের অভিনয় করে প্রেমিককে বাসায় ডেকে নেওয়া হয়। এরপর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে পরিবারের কাছে দাবি করা হয় মুক্তিপণ। এভাবে অপরাধ চালিয়ে যাওয়া একটি চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন প্রতারক চক্রের মূল হোতা মেহেদী হাসান সঞ্চয় (১৯), লিপি আক্তার স্বর্ণা (৩৮), লাভলী আক্তার (৩৯), আবু হানিফ (৩৪), মো. বাদল মিয়া (৩৮) ও মো. গোলাম রাব্বী (২০)। 

আজ মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের স্পেশালাইজড কোম্পানি কমান্ডার মাঈদুল ইসলাম। 

কোম্পানি কমান্ডার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ও অজ্ঞাত মোবাইল নম্বরে পরিচয়ের সূত্র ধরে ব্ল্যাকমেইলিং ও পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে অপহরণ ও চাঁদাবাজ চক্রের এই সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করে আসছিলেন। গত ২৯ আগস্ট রাতে প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগীর ভাই র‍্যাব ক্যাম্পে অভিযোগ করেন। অভিযোগের তিনি জানান, তাঁর ভাইকে কৌশলে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এই চক্র। সেখানে তাঁকে আটকে রেখে মারধর করে এবং তাঁর কাছে থাকা সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাঁর মুক্তির জন্য ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। 

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে উদ্ধার এবং বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব-১ ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার রাতে তাঁদের আটক করা হয়। এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে অশ্লীল ছবি ও গোপন ভিডিও ধারণকাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ সর্বমোট সাতটি মোবাইল ফোন, নগদ ২৪০ টাকা ও একটি লোহার পাত উদ্ধার করা হয়। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রতারক চক্রের নারী সদস্যরা কৌশলে ডেকে এনে ভুক্তভোগীকে আটকে রাখে। এরপর ওই স্থানে ভুক্তভোগীদের নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। এরপর এই ভিডিও তাদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে—এই মর্মে ভয়ভীতি দেখিয়ে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মুক্তিপণ আদায় করে। 

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।