প্রবাসীর স্বর্ণালংকার লুট করতে বৃদ্ধা মাকে খুন, গ্রেপ্তার ২

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০: ৩২
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১: ২২

গাজীপুরের বাসন থানাধীন আদেপাশা এলাকা প্রবাসীর মা খুন হওয়ার দেড় বছর পর হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। প্রবাসীর পাঠানো স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করতে তাঁর বৃদ্ধা মাকে খুন করা হয়েছে বলে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে উঠে আসে। 

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এসব তথ্য জানান। এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

এ মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া পশ্চিম পাড়া (মাটির মসজিদ) এলাকার মো. বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. আল আমিন (২৬) এবং গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন আদেপাশা উত্তর পাড়ার উদ্দিনের ছেলে মো. মামুনুর রশীদ (৩৮)। 

এর আগে আজ ভোরে এ মামলার আসামি মামুনুর রশীদকে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়া আরেক আসামি আল আমিনকে গতকাল বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়। 

এ ঘটনায় নিহতের নাম মোসা. সাহেরা বেগম (৬০)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন আদেপাশা উত্তর পাড়ার মৃত আ. ছাত্তারের মেয়ে এবং সৌদিপ্রবাসী বাবুলের মা। বাবুলের মেয়ে তিন বছরের মেয়ে সারা মনিকে সাহেরা বেগম ওই বাসায় থাকতেন। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, নিহত সাহেরা বেগম তাঁর সৌদিপ্রবাসী ছেলে বাবুলের মেয়ে সারা মনিকর (০৩) সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন আদেপাশা উত্তর পাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। 

 ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট দুপুরে নিহতের প্রবাসী ছেলে তাঁর মাকে মোবাইল করে পাননি। পরে প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানিয়ে বাড়িতে খোঁজ নিতে বলেন। প্রতিবেশীরা বাড়িতে গিয়ে সাহেরা বেগমকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কারও কোনো সাড়া শব্দ পাননি তাঁরা। এ সময় বাড়ির মেইন গেট তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তাঁরা। পরবর্তীতে তাঁর ছেলের অনুরোধে তাঁরা মেইন গেটের তালা ভেঙে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে সারা মনিকে কান্নারত অবস্থায় দেখতে পান। এ ছাড়া বাড়ির উত্তর-পশ্চিম কোণের রুমের ভেতরে গলায় গামছা প্যাঁচানো সাহেরা বেগমের মরদেহ দেখতে পান। 

পরে খবর পেয়ে বাসন থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এ সংক্রান্তে নিহতের মেয়ে পারভীন আক্তার বাদী হয়ে বাসন থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। 

মামলাটি বাসন থানা-পুলিশ প্রায় এক বছর তদন্ত করে। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ায় মামলাটি পিবিআই গাজীপুরের নিকট হস্তান্তর করা হয়। 

পুলিশ সুপার আরও জানান, পরে তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, সাহেরা বেগমের একমাত্র ছেলে বাবুল স্ত্রীসহ বিদেশে থাকেন। বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রীর কন্যা সন্তান সারা মনি (০৩) বৃদ্ধা মা বাড়িতে বসবাস করতেন। নিহতের বাসায় ফরিদা বেগম নামে একজন গৃহপরিচারিকা কাজ করতেন। ফরিদা বেগমের ছেলে আল আমিন সালেহার বাসায় মাঝে মাঝে যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে সাহারা বেগম আল আমিনকে দিয়ে বিভিন্ন কাজকর্ম করাতেন। এ কারণে আল আমিন জানতে পারেন সালেহার ছেলে মার জন্য স্বর্ণালংকার ও টাকা পাঠিয়েছেন। এসব স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করার জন্য অপর আসামির সহায়তায় ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট আসামি মামুন বাড়িতে ঘরের ভেতরে ঢুকেই সাহারা বগমের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যান। 

এ সময় আসামিরা মেইন গেট বাহির থেকে তালা দিয়ে দেন। পরে উভয় আসামি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ঘটনার সময় অপর আসামিকে গেইন গেটে পাহারায় ছিলেন। এ জন্য আসামি মামুন অপর আসামি আল আমিনকে ১০ হাজার টাকা দেন। 

আজ বৃহস্পতিবার আদালতে আসামি আল আমিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান পুলিশ সুপার। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত