‘ময়নাতদন্তে হত্যার প্রমাণ মেলেনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ০৪ মে ২০২১, ২১: ০৭
Thumbnail image

ঢাকা: গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের আট দিন পর ময়নাতদন্তের ‘প্রাথমিক’ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্বাসরুদ্ধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে মুনিয়ার। হত্যার কোনো প্রমাণ মেলেনি। কেমিকেল ও ডিএনএ রিপোর্ট আসার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। আপাতত এই প্রতিবেদন সামনে রেখেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ মামলার তদন্ত করছেন।

এ ব্যাপারে ঢামেকের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. মাকসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচরাচর দুই দিনের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়া হয়। কিন্তু এ ঘটনায় আমাদের একটু সময় লেগেছে। মঙ্গলবার প্রাথমিক ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টের সঙ্গে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের কোনো অসামঞ্জস্য নেই। এ ঘটনায় আমরা হত্যার কোনো প্রমাণ পাইনি। এর বেশি আমার বলা সমীচীন হবে না। যা বলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরাই বলবেন।

মুনিয়ার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, একজন নারী কনস্টেবল ও ভুক্তভোগীর বোন নুসরাত জাহানের উপস্থিতিতে তিনি সিলিংফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা মুনিয়ার লাশ নামান। পরে বিছানায় শুইয়ে দেন। মরদেহের চোখ দুটি বন্ধ ছিল। জিহ্বা আধা ইঞ্চি বাইরে এবং দাঁত দিয়ে কামড়ানো অবস্থায় দেখা যায়। মুখ দিয়ে সামান্য লালাও বের হতে দেখা গেছে। গলার বাম দিকে অর্ধাচন্দ্রাকৃতি গভীর কালো দাগ ছিল। হাত দুটি শরীরের সঙ্গে অর্ধেক মুষ্ঠিবদ্ধ ছিল।

সুরতহাল প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নারী কনস্টেবল ও মুনিয়ার বড় বোন নুসরাতের মরদেহের বুক, পেট ও পিঠ স্বাভাবিক দেখতে পান। তবে মৃতদেহের যৌনাঙ্গ দিয়ে লালচে রঙের পদার্থ নির্গত হচ্ছিল।

এ ব্যাপারে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান মাকসুদ বলেন, ভুক্তভোগী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা সেটি জানার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আবার বিষ প্রয়োগের বিষয়টি মাথায় রেখে কেমিকেল পরীক্ষাও করতে দেওয়া হয়েছে। এগুলো পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা- সিআইডি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। সম্পূর্ণ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসতে আরও দুই মাস সময় লাগবে। তখন বিস্তারিত জানা যাবে।

তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল হাসান। তবে প্রতিবেদন সম্পর্কে জেনেছেন। সে অনুযায়ীই তদন্ত এগিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার রাতেই তার পরিবারের পক্ষ থেকে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় একমাত্র আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। পরদিনই পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও গৃহকর্মীসহ আট জন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে দুবাইয়ের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। তবে আনভীর এখন কোথায় আছেন সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই পুলিশের।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত