দীর্ঘ সময় নিয়ে অপরাধী গ্রেপ্তার, অল্প দিনেই জামিন: ডিবিপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৯: ০৭
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ২৩: ০৪

রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতদলের মূল হোতাসহ ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল রোববার রাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো নাঈমুর রহমান নাঈম, আবু জাফর বিপ্লব, সজিব মিয়া, জহুরুল ইসলাম, আলামিন, দিলিপ সোহেল, আলামিন ও শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া আজাদ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৪টি চাপাতি, ৪টি ছুরি, ৫টি লোহার রড, চোখ বাঁধার কাজে ব্যবহৃত ৩টি গামছা, ১০টি মোবাইল ফোন, খেলনার পিস্তল ২টি এবং ৯ হাজার ৮০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করি। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে আসে তারা। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় অপরাধীরা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পূর্বের অপরাধ জগতেই ফেরে।’
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘যখনই কোনো ডাকাত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করি, দেখা যায় বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে তারা আবার জামিনে বের হয়ে একই পেশায় যুক্ত হয়। তাদের গ্রেপ্তার করতে যত সময় লাগে, এরপরে আবার জামিন নিয়ে বের হয়ে যায়।’

গ্রেপ্তার ডাকাতদলের সদস্যএসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকে সতর্ক করে বলেন, ‘রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে দূরপাল্লার এক বাসে ওঠার পর ভয়ানক এক ডাকাতদলের কবলে পড়েন এক ডাক্তার। বাসে ১২ ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা মহানগর ও আশপাশ এলাকায় বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতির ঘটনায় যারা মামলা নেয়নি তারা ঠিক করেনি। পথিমধ্যে যেখানেই ঘটনা ঘটুক না কেন, ভুক্তভোগীর মামলা নিতে হবে।’

হাফিজ আক্তার জানান, চলতি মাসের গত ২০ জানুয়ারি দিবাগত রাতে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিকুল ইসলাম তাঁর বন্ধুসহ উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আব্দুল্লাহপুর পেট্রলপাম্পের সামনে থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে আর কে আর পরিবহনে ওঠেন। পরে বন্ধুসহ তাঁকে বাসে ওঠামাত্রই ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই হাত ও চোখ বেঁধে ফেলে। 

এ সময় শফিকুল ইসলামদের সঙ্গে থাকা ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, বিকাশে থাকা ৫ হাজার টাকা ও ব্যাগে থাকা ২টি ব্যাংকের এটিএম কার্ড দিয়ে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোবাইল ফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। 

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এই ডাকাতদলটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে আর কে আর পরিবহনের একটি বাসকে ভাড়ার কথা বলে সাভারের গেন্ডা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে ডাকাতরা প্রথমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে জিম্মি করে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে বাসটি নিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকে। আর টার্গেট করে যাত্রী উঠিয়ে পরবর্তী সময়ে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাতমুখ বেঁধে তাঁদের সঙ্গে থাকা  টাকা, মোবাইল ফোন এবং মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের নির্জন স্থানে নামিয়ে দেয়।

এই চক্রটি ঢাকা জেলার সাভার, টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে একইভাবে ডাকাতি করে। ডাকাতদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বাস ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে ডাকাতরা নিজেদের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত