শেখ হাসিনা ও রেহানাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া সানাউল হকের পরিবারের ‘জালিয়াতি’ তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ৩৫
Thumbnail image

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে বেলজিয়ামের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া তৎকালীন রাষ্ট্রদূত সানাউল হকের পরিবারের জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া এই আদেশ দেন।

গত ৩০ মার্চ দেওয়া এই আদেশ আজ মঙ্গলবার প্রকাশ হয়। আদালতসংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৩০ মার্চ ঢাকার জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ঢাকার সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা ও ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ মের মধ্যে তাঁদের পদক্ষেপ সম্পর্কে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। 

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবির বাবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি আদেশ না দেখে কিছু বলতে পারবেন না। তবে এ রকম একটি আদেশের বিষয় তিনি শুনেছেন। 

যাঁদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন প্রয়াত সানাউল হকের ছেলে ইরতেফা মামুন ও সুমন ইফাত মামুন, মেয়ে তাসনিম জাফরুল্লাহ, তৃণা রুবাইয়া মামুন ও সাইদা হুসাইনী মামুন। 

সানাউল হকের বড় ছেলে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাঁর নাম ইরতেফা মামুন। গত বছর মামুনের অভিভাবকত্ব চেয়ে ঢাকার জেলা জজ আদালতে মামলা করেন তাঁর ছোট ভাই সুমন ইফাত মামুন। সেখানে সানাউল হকের নাম লেখা হয় প্রয়াত এএম সানাউল হক। 

এর আগে প্রতিবন্ধী ওই ছেলের শরীর ও সম্পত্তির অভিভাবকত্ব দাবি করে আরেকটি মামলা করেন ২০১৫ সালে। ওই মামলার রায় নিয়ে গুলশানের আরেকটি বাড়ি ২০১৫ সালে বিক্রি করে সানাউল হকের পরিবার। 

পরবর্তী সময়ে ধানমন্ডির আরেকটি বাড়ি বিক্রি করার জন্য ২০২২ সালে আবেদন করলে নথি দেখে বিচারকের সন্দেহ হলে সানাউল হকের বিস্তারিত পরিচয় জানতে চান। শুরুতে তাঁরা পরিচয় প্রকাশ করতে অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে স্বীকার করেন এই সানাউল হকই ছিলেন ১৯৭৫ সালে বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত। 

দুই মামলার নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৩ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাড়িটির দাবিদার সানাউল হকের পরিবারের পাঁচ সদস্য। গুলশান ও ধানমন্ডির দুটি জমিই তাঁরা পান আইয়ুব খানের শাসনামলে। তবে এরই মধ্যে গুলশানের বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন ধানমন্ডির বাড়িটি বিক্রি করতে চান।

পরের মামলায় আদালত আদেশে লেখেন, এর আগে গুলশানের বাড়ি বিক্রি করে প্রতিবন্ধী ভাইয়ের স্বার্থ রক্ষা করেছেন কি না, বা ওই টাকা কী কাজে ব্যয় করা হলো তার কোনো তথ্য বা হিসাব বিবরণী আদালতে বা সমাজসেবা কার্যালয়ে দাখিল করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে বাবার নাম পরিবর্তন নিয়ে জালিয়াতি, প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ ও দুর্নীতি হয়েছে কি না তা যাচাই করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা অতিথি হিসেবে ছিলেন বেলজিয়ামের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত সানাউল হকের বাসায়। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বদলে যান সানাউল হক। সানাউল হককে অত্যন্ত স্নেহ করতেন বঙ্গবন্ধু। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেকের আপত্তি সত্ত্বেও তাঁকে রাষ্ট্রদূত করেছিলেন বলে শোনা যায়। 

কিন্তু বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তিনি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে তাঁর বাড়ি থেকে বের করে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেই গল্প বলেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত