ধর্ষণে কিশোরীর সন্তান প্রসব, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৬: ৫১
Thumbnail image

রাজধানীর সবুজবাগে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন। 

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজু আহমেদ একজন রেস্টুরেন্ট কর্মী। সবুজবাগের ওহাব কলোনির বাসিন্দা তিনি। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাঁকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় আসামি রাজুকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় শেষে আবার তাঁকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়। 

ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার ২০ দিনের মাথায় ২৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেয়। বর্তমানে শিশুটি রাজধানীর আজিমপুরে সোনামণি নিবাসে রয়েছে।

তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলার বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে আদালতে ১০ জন সাক্ষ্য দেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, যখন ধর্ষণের শিকার হয়, তখন শিক্ষার্থীর বয়স ছিল ১১ বছর। ২০১৭ সালের ১২ মে থেকে মামলার বাদীর বাসায় যাতায়াত করতেন আসামি রাজু। ১১ বছরের শিশুকে ফুসলিয়ে এবং বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি প্রায়ই ধর্ষণ করত। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শিশুর শারীরিক পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক জানান, সে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপর শিশুর মা বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। 

রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেন, আসামি রাজুর অপরাধ অত্যন্ত ভয়াবহ, স্পর্শকাতর এবং লজ্জাজনক, যা আমাদের বিবেককে তাড়িত করে। আসামি যে অপরাধ করেছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু আইনগতভাবে ধর্ষিতার গর্ভে যে সন্তান জন্মলাভ করেছে, তার পিতৃপরিচয় রয়েছে। সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হলে ওই শিশু পিতৃপরিচয় হারিয়ে ফেলবে। এ কারণে আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো।

পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, শিশুটির বয়স ২১ বছর পর্যন্ত রাষ্ট্র তার ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করবে। অন্য কোনো আদালত ইচ্ছা করলে শিশুটির অভিভাবকের দায়িত্ব তৃতীয় যেকোনো পক্ষকে দিতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত