রাজধানীর শ্যামপুরের পশ্চিম জুরাইনের একটি বাসায় দেবরের দায়ের কোপে নাজমা আক্তার (৩২) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। এ সময় নিহত গৃহবধূর আরেক দেবর নাসির আহমেদ সোহেল (৩০) ও তাঁর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার রিমা (২৫) আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত দেবর আবুল কালাম আজাদ সেন্টুকে আটক করেছে।

আজ শনিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে পশ্চিম জুরাইন আইজি গেট এলাকার তিনতলা বাসার দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় নাজমা আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত নাজমার আরেক দেবর নেছার আহমেদ জানান, পশ্চিম জুরাইনে তাঁদের নিজেদের বাড়ি। তাঁরা যৌথ পরিবারে থাকেন। গত ডিসেম্বরে নাজমার স্বামী ও তাঁর বড় ভাই আবুল কাশেম সেলিম কিডনির সমস্যার কারণে মারা যান। তাঁর তিন সন্তান রয়েছে।

নেছার বলেন, ‘সকালে আমার ভাবি নাজমা আক্তার ও আহত রিমা সকালে একসঙ্গে রান্নাঘরে নাশতা তৈরি করছিল। এ সময় অতর্কিতভাবে সেন্টু দা দিয়ে নাজমা আক্তারকে কুপিয়ে আহত করে। রিমা এগিয়ে এলে তার বাম হাতে আঘাত করে। তাদের চিৎকার শুনে নাসির রান্নাঘরে গেলে তার হাতেও আঘাত করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় নাসির সেন্টুকে জাপটে ধরে ফেলে।’ 

নেছার আরও বলেন, ‘সেন্টু দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিল। পাঁচ বছর আগে দেশে এসেছে। পরিবারের সবার প্রতি তাঁর আক্রোশ ছিল। আমাদের দুই বোন পাশেই থাকে। তারাই সম্পত্তির বিষয় নিয়ে সেন্টুকে কুপরামর্শ দিত। সম্পত্তি এখনো আমাদের বাবার নামে। সেন্টুকে বলা হয়েছে, যখন ভাগ করা হবে তখন তাঁরটা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমার বোনদের প্ররোচনায় সেন্টু আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। এর আগেও ছোট ভাই নাসিরকে ছুরিকাঘাত করেছিল।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মৃত নাজমার বুকে ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।’

শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে জুরাইনে দেবরের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে ভাবি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে দেবর আবুল কালাম আজাদ সেন্টুকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’