শিশুটির মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন এএসআই

প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২১, ১৮: ৫৪
আপডেট : ১৩ জুন ২০২১, ২১: ৫৬

কুষ্টিয়া: পুলিশের এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে গুলি করে তাঁর সাবেক স্ত্রী, আগের পক্ষের শিশুপুত্র ও স্ত্রীর কথিত প্রেমিককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড়ের নাজ ম্যানশনের নিচতলায় মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে এএসআই সোমেন সরকারি পিস্তল দিয়ে মোট ১১ রাউন্ড গুলি চালায়। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত সোমেনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত তিনজন হলেন-এএসআই সোমেনের সাবেক স্ত্রী আসমা খাতুন (২৫), ছেলে রবিন (৭) এবং আসমা খাতুনের কথিত প্রেমিক শাকিল খান।

প্রত্যক্ষদর্শী মুদি দোকানি মাসুদ সরদার জানান, আজ সকালে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড়ের নাজ ম্যানশনের নিচতলায় মার্কেটে ছেলে রবিনকে নিয়ে আসমা খাতুন আসেন। সেখানে আসমা খাতুন তাঁর কথিত প্রেমিক শাকিল খানের সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে সেখানে আসেন আসমার সাবেক স্বামী পুলিশের এএসআই সোমেন। তাঁরা চারজনই নিচে দোকানের সামনে কথা বলছিলেন।

মাসুদ আরও বলেন, আমি তখন দোকানে কলা সাজাচ্ছিলাম। তাঁরা ৫ থেকে ৭ মিনিট কথা বলার পর বাসার নিচে দোকানের করিডরে যান। এরপরই সেখান থেকে গুলির শব্দ পাই। তারপর দেখি তাঁদের বাচ্চাটি পালিয়ে বাইরে চলে আসে। এরপর লোকটি পিস্তল হাতে দৌড়ে এসে শিশুটির মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল জানান, বাচ্চাটিকে গুলি করে লোকটি আবার ভেতরে চলে যায়। এরপর আমরা বাসার নিচতলা থেকে আরও বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ পাই। এরই মধ্যে গুলির শব্দে মানুষ জড়ো হয়। পিস্তল হাতে লোকটি বাইরে এসে মানুষের উদ্দেশ্যে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর জনতা পাল্টা ইট পাট খেল নিক্ষেপ করলে সে আবার বাসার কলাপসিবল গেটের ভেতরে চলে যায়। পরে পুলিশ আসলে সে অস্ত্র ফেলে দুই হাত উঁচু করে আত্মসমর্পণ করেন।

এদিকে স্থানীয়রা প্রথমেই শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হয় আসমা ও শাকিলকে। এর কিছুক্ষণ পর তাঁদের মৃত্যু হয়।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম ও খুলনার অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) একে এম নাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমেন কুষ্টিয়ার হালশা ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের আসমার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর আসমার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে আসমা সোমেনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আসমা বিকাশ কর্মী শাকিলের সঙ্গে সর্ম্পকে যুক্ত হলে ক্ষেপে যান সোমেন। সোমেন ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত