ওবায়দুল কাদের–শেখ হেলাল পালিয়েছেন যশোর যুবদল নেতার সহযোগিতায়, দাবি সাবেক নেতার

­যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ৫২
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ২৮
Thumbnail image
যশোর জেলা যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি। ফাইল ছবি

যশোর জেলা যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালসহ তাঁর পরিবারের চার সদস্যকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা।

আজ মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে এবং ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমন অভিযোগ করেন এসকেন্দার আলী জনি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তদন্তের অনুরোধও জানান। তাঁর এমন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই পড়ে গেছে।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে এসকেন্দার আলী জনিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসকেন্দার আলী জনি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘১৩ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে যশোর জেলা যুবদলের সেক্রেটারি আনসারুল হক রানা মাদক সম্রাট শহীদের সহায়তায় পুটখালি ঘাট দিয়ে শেখ হেলালসহ পরিবারের ৪ সদস্যকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পার করে দিয়েছে, সেটা গোয়েন্দার কাছে তথ্য আছে।’

এর আগে দুপুরে এসকেন্দার আলী জনি ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদেরকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে যশোর জেলা যুবদলের সেক্রেটারি। সাংবাদিক সম্মেলন করা হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করুন, অরিজিনাল অপরাধীদের শান্তি দিন।’ লাইভের শিরোনামে তিনি লেখেন, ‘সঠিক তদন্ত চাই, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের কাছে বরাবর।’

ফেসবুক স্ট্যাটাস
ফেসবুক স্ট্যাটাস

২৭ মিনিটের লাইভে এসকেন্দার আলী জনি বলেন, ‘যশোর ক্যান্টনমেন্টে লুকিয়ে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ৫ তারিখের পর তাঁকে ভারতে পালাতে সাহায্য করেছেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা। কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। বেনাপোলের পুটখালির গোল্ড নাসিরের সঙ্গে (সিঙ্গাপুরে) টাকা ভাগাভাগি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঘাট শহীদকে ধরলে এ তথ্য পাওয়া যাবে। শুধু ওবায়দুল কাদের নয়; আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে ভারতে যেতে সাহায্য করেছে যশোর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা। এ তথ্য সব নেতাই জানেন। এখন যশোর যুবদল দেখলে মনে হবে যুবলীগ হেঁটে যাচ্ছে। যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি তমাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা দলকে যুবলীগে পরিণত করেছে।’

ফেসবুক লাইভে এসকেন্দার আলী জনি বলেন, ‘আমি রাজপথে মার খেয়েছি, আমার ভাই মার খেয়েছে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের কারণে পরিবারসহ জেল খেটেছি। আমি ১৭ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার ও ত্যাগী নেতা হয়েও আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি আন্দোলন সংগ্রাম করব; ত্যাগী নেতাদের কেন বহিষ্কার করা হচ্ছে? যুবদলের নেতা-কর্মীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বিএনপির পার্টি অফিসের সামনে মিছিল করেছে। ভিডিওসহ নেতৃবৃন্দকে জানানো হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোপনে যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি তমাল আহমেদ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের সঙ্গে মদের ব্যবসা করে। যুবদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মিলে যুবলীগের সন্ত্রাসীদের দলে নিয়ে এসেছে। যারা বিএনপি অফিস ভাঙচুর করেছে, দলের নেতাদের ছবি ভাঙচুর করেছে, তারা এখন যুবদলে। এখন যুবদলের সভাপতি-সম্পাদক বলছে ৫-৭ কোটি টাকা খরচ করে কমিটি নিয়ে আসবে।’

জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যই এসকেন্দার আলী জনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে শুধু আমাকে নয়, যুবদলের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি দুজনের নামেই দীর্ঘদিন ধরে এসব বলে আসছে। সে সুস্থ নয়। আপনারাও তদন্ত করে দেখেন, সে (ওবায়দুল কাদের) কোন দিক দিয়ে কোথায় গেছে। একজন একটা কথা বললেই তো হবে না। এতদিন ধরে রাজনীতি করলাম, খোঁজখবর নিয়ে দেখেন আমরা কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কি-না।’

এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ বলেন, ‘জনি নেশাগ্রস্ত ছেলে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় জেলা বিএনপি ও জেলা যুবদলের সুপারিশে কেন্দ্রীয় যুবদল তাঁকে বহিস্কার করেছে। সে উন্মাদ হয়ে গেছে। উন্মাদ ও বহিস্কৃত লোক কি বলল, সেটি আমলে নিচ্ছি না। আমলে নেওয়ার দরকার নেই। আমরা কেমন লোক, যশোরের মানুষ জানে। ১৮ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ৩৫ থেকে ৪০ বার জেল খেটেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত