ঘরে স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ, বিষপানে অসুস্থ স্বামী হাসপাতালে

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২২, ১৪: ৫৯

শেরপুরে পারভীন বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিষপান করে অসুস্থ স্বামী মো. শফিকুল ইসলামকে (৩৮) পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর কীটনাশক খেয়ে স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।

আজ সোমবার ভোরে সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের বয়ড়া পরানপুর গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।

নিহত পারভীন বেগম ওই গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে। স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম সদর উপজেলার হাওড়া আমতলা গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে শফিকুলের সঙ্গে বিয়ে হয় পারভীন বেগমের। তাঁদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান ও ছেলে সন্তান রয়েছে। গত কয়েক মাস আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে পারভীন বেগম স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বয়ড়া পরানপুর এলাকায় তাঁর বাবার বাড়ি চলে আসেন। সম্প্রতি শেরপুর পৌর শহরের আল বারাকা প্রাইভেট হাসপাতালে পারভীন আয়ার কাজ শুরু করেন।

এদিকে রোববার রাতে শফিকুল তাঁর শ্বশুরবাড়িতে আসেন। ভোররাতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে ধারালো কোনো কিছু দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর নিজে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সকালে তাঁদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে শাশুড়ি জামেলা বেগম ঘরে উঁকি দিয়ে পারভীনের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এ সময় শফিকুলকে ঘরের মেঝেতে মুখ দিয়ে ফেনা বের হওয়া অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাঁর চিৎকারে বাড়ির অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসেন এবং সদর থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পারভীন বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। অন্যদিকে শফিকুলকে আটক করে চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

স্বামী মো. শফিকুল ইসলামকে পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছেএদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদলসহ অন্যান্যরা।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত তিন মাস আগে পারভীন বেগম বাবার বাড়ি চলে আসেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী শফিকুল ইসলাম পারভীনকে গলা কেটে হত্যা করেছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে।

এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত পারভীনের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর স্বামীকে আটক করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন তিনি আশঙ্কামুক্ত। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেলে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, কী কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত