কর্মীদের পরিকল্পনাতেই নগদের টাকা ছিনতাইয়ের নাটক

পাবনা ও সাঁথিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০: ১৪
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১: ১৭

ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বিতরণের জন্য পাবনা থেকে সাঁথিয়া ও আতাইকুলায় নিয়ে যাচ্ছিলেন নগদের দুই মাঠকর্মী। পথে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সব টাকা খুইয়েছেন এমন ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁদের। ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাকারী নগদের দুই মাঠকর্মীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত গুলি, ছুরি ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুনসী। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পাবনা শহরের চকপৈলানপুর (নয়নামতি) এলাকার আহম্মদ উল্লাহ রুমির ছেলে শিস ইসলাম (২২), শালগাড়িয়া এলাকার বানির ছেলে ইয়াছিন আলী ওরফে রাহাত (২১), শালগাড়িয়ার নিকারীপাড়ার আব্দুল বারেকের ছেলে রায়হান হোসেন (২১), ইব্রাহীম আলী মুন্সির ছেলে ইমন হোসেন বাঁধন (২৪), রজব আলীর ছেলে তানভীর হোসেন (২১), শালগাড়িয়া উত্তর খাঁ পাড়ার মাসুম হোসেনের ছেলে রনি হোসেন (২২), হেমায়েতপুরের পাককিয়া এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে ইমরান শেখ (২৪) এবং পৌর এলাকার বড়দিকশাইল স্কুলপাড়ার উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে তুহিন হোসেন (২৭)। 

আকবর আলী মুনসী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, নগদের কর্মী তুহিন ও ইমরান শেখের সঙ্গে সপ্তাহখানেক আগে ঘটনার পরিকল্পনা করেন শিস ইসলাম। এর জন্য রাহাতকে অস্ত্রও সরবরাহ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে তাঁরা লোকেশন নির্ধারণ করেন। নগদের কর্মী তুহিনের সঙ্গে শিস ইসলামসহ অন্য আসামিরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা থেকে বিরত থাকেন। উদ্দ্যেশ্য, তুহিনকে কোনোভাবেই যেন সন্দেহ না হয়। 

পরিকল্পনা মোতাবেক তুহিন ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে রওনা দিলে আগে থেকে পাবনার যুব উন্নয়নের সামনে অবস্থানকারী শিস ইসলামসহ তাঁর সঙ্গে থাকা রাহাত ও রায়হানকে নগদের অপর কর্মী আসামি ইমরান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লোকেশন দেন। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে তুহিন যুব উন্নয়নের সামনে দিয়ে যাওয়ার পরপরই শিস ইসলাম, রাহাত ও রায়হান একটি মোটরসাইকেলে এবং তানভির ও বাঁধন অন্য একটি মোটরসাইকেলে তাঁদের পিছু নেন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থল মাধপুর হাইওয়ে থানার সামনে পৌঁছালে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুহিন ও তাঁর সঙ্গে থাকা নগদের কর্মী ইয়াকুব ইসলাম বিশালের কাছে থাকা ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যান। 

পুলিশ সুপার জানান, পরিকল্পনা মোতাবেক শিস ইসলাম, রাহাত ও রায়হান পথ পরিবর্তন করে ভেতরের রাস্তা দিয়ে চলে যান এবং বাঁধন ও তানভির মহাসড়ক দিয়ে পুনরায় পাবনার দিকে যান। পরে তাঁরা আতাইকুলা থানার শ্রীপুর বাজারের পাশে একটি ধানখেতে এসে মিলিত হন এবং ছিনতাইকৃত টাকা ভাগাভাগি করেন। ছিনতাইয়ে সরাসরি অংশগ্রহণকারী মোটরসাইকেল আরোহী তিনজনসহ মোট চারজন নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে দুই দিনের রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ-প্রশাসন) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, ডিবির ওসি এমরান মাহমুদ তুহিন, আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফেজ উদ্দিনসহ পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত