প্রেমের সম্পর্কের জেরে খুন হন জয়পুরহাটের সেই গৃহবধূ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২২, ১৯: ০১

জয়পুরহাটের গত ২৭ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) গৃহবধূ সাজেদা ইসলাম সাজুর (৩৭) হত্যা রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। প্রেমের সম্পর্কের জেরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর প্রেমিকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তরিকুল ইসলাম।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জেলা শহরের খঞ্জনপুর পূর্বপাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে রাব্বি হোসেন (২৩) এবং একই এলাকার আনিছুর রহমানের ছেলে আবু সাঈদ (২৩)। তাঁরা দুজন জয়পুরহাট সাইদ নর্থ বেঙ্গল স্কুলে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করতেন। সাঈদ ওই গৃহবধূর প্রেমিক বলে দাবি করেছেন বলে জানায় পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জয়পুরহাট পৌরসভার অন্তর্গত জানিয়ার বাগান এলাকায় অবস্থিত ডা. পারভীনের বিল্ডিংয়ের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়াটে হিসেবে থাকতেন সাজেদা ইসলাম সাজু। সেখানে গত ২৭ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা তাঁকে হত্যা করে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।

গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি রাব্বি হোসেন এবং আবু সাঈদঘটনার পর ওই বাসার ভাড়াটিয়া, গৃহকর্মীসহ সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর মৃতের স্বামী হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এর পরপরই তদন্তে নামে পুলিশ।

নিহতের মোবাইলের কল লিস্ট দেখে এবং দুটো নম্বর টার্গেট করা হয়। এর মধ্যে একটি নম্বর অন্য জেলার ছিল। আরেকটি নম্বর স্থানীয় এক যুবকের। তাঁর নাম দেখা যায় রাব্বি। এভাবে মামলা রুজুর ১২ দিনের মধ্যেই এই রাব্বিকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রাব্বি হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এ হত্যা কাণ্ডে তাঁর সহযোগী ছিলেন আবু সাঈদ (২৩)।

হত্যার কারণ প্রসঙ্গে আসামির বরাত দিয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, মৃত সাজেদা ইসলাম সাজুর সঙ্গে আবু সাঈদের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন (গত ২৭ সেপ্টেম্বর) ভাড়াটে থাকা ওই বাসাতে কেউ না থাকার সুযোগ নেন আবু সাঈদ। তিনি সাজেদা ইসলাম সাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই বাড়িতে যান। সে সময় আবু সাঈদের সঙ্গে ছিলেন রাব্বি হোসেন। তাঁরা দুজনেই সাজেদা ইসলাম সাজুর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে চান।

কিন্তু সাজু রাজি না হওয়ায়, আবু সাঈদ সাজেদার বুকের ওপর ওঠে বসে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরেন এবং রাব্বি তাঁর পা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর দ্রুত তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি রাব্বি হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর স্বীকারোক্তির সূত্র ধরেই এ হত্যার সঙ্গে জড়িত অপর আসামি আবু সাঈদকে তাঁর বাড়ি জয়পুরহাট জেলা শহরের খঞ্জনপুর পূর্বপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপ.) ফারজানা হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোশফেকুর রহমান, জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম, ওসি (ডিবি) শাহেদ আল মামুনসহ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত