স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২২, ১৭: ২৭

জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার অপরাধে দায়ের করা মামলায় এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এই আদেশ দেন। একই রায়ে আসামিকে আরও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন—জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার ধাপ কাথাইল গ্রামের আবুল কালামের ছেলে নাজিম উদ্দীন ওরফে করিম (৩২)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল। 

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর প্রায় দুবছর নাজিম উদ্দিন এবং রওশন আরার দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল। হঠাৎ করেই তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। কেবল তাই নয়, নাজিম উদ্দিন তাঁর স্ত্রী রওশন আরাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। দাম্পত্য কলহ মীমাংসার জন্য পারিবারিকভাবে উদ্যোগও নেওয়া হয়। এ জন্য নাজিম উদ্দিনের বাবাকে এ ঘটনাটি জানান তাঁর স্ত্রী রওশন আরার পরিবার। এতে নাজিম উদ্দিন আরও বেশি রেগে যান। সেই সঙ্গে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। এরই একপর্যায়ে গত ২০১৫ সালের ৬ মে সকালে নাজিম উদ্দীন প্রচার করেন যে, তাঁর স্ত্রী রওশন আরাকে ডাকাতেরা খুন করেছেন। ওই খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন­– নাজিমউদ্দিন তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় নিহতের দাদা ইসমাইল হোসেন ওই দিনই বাদী হয়ে, একজনকে আসামি করে কালাই থানায় মামলা করেন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বুলবুল ইসলাম ৫ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণসহ যাবতীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে সোমবার বেলা ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন। 

জয়পুরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘এই আদেশে আমরা সন্তুষ্ট। এতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত ওই আসামি ইতিমধ্যে গত ২০১৫ সালের ৭ মে থেকে (আজ সোমবার) আদেশের দিন পর্যন্ত হাজতেই ছিলেন। তাই ওই সময় বাদ দিয়ে আজ থেকে তাঁর যাবজ্জীবন হাজতবাস গণনা করা হবে।’ 

মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল (পিপি) এবং উদয় সিং (এপিপি)। আর আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট হেনা কবির ও অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম-১। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত