এক ঘরেই গলায় ফাঁস নিলেন স্বামী, টেরই পেলেন না স্ত্রী!

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০: ৩১

জয়পুরহাটে মোস্তাকিম হোসেন (২০) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের বড় মাঝিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোস্তাকিমের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মোস্তাকিম ওই গ্রামের আব্দুল হামিদের ছোট ছেলে। 

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ঈদ-উল-আযহার দুই দিন আগে মোস্তাকিম হোসেন ও নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের মানপুর গ্রামের বাবু সরদারের মেয়ে রিয়া পারভীনের (১৮) বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পরই স্বামী-স্ত্রীর কলহ শুরু হয়। কয়েক দিন পর বাবার বাড়ি চলে যান রিয়া। গতকাল শুক্রবার দুই পরিবারের মধ্যে আপস হয়। রিয়াও স্বামীর বাড়ি ফিরে আসেন। রাতে মোস্তাকিম খাবার না খেয়েই স্ত্রীর সঙ্গে একই ঘরে শুয়ে পড়েন। রাত ১টার দিকে রিয়া ঘরের বাইরে আসেন। সেসময় মোস্তাকিমের নানিও বাইরে আসেন। রিয়া তাঁকে জানান, মোস্তাকিম গলায় ফাঁস নিয়েছেন। তখন পরিবারের সবাই বিষয়টি জানেন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। 

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মোস্তাকিমকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রিয়া ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু জড়িত। 

মোস্তাকিমের বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমার ছেলেকে হত্যা করা লাশ ঝুলে রাখা হয়েছে। এর সঙ্গে আমার পুত্রবধূ ও তার কয়েকজন বন্ধু জড়িত।’ 

মোস্তাকিমর বন্ধু রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আর মোস্তাকিম ছোটবেলার বন্ধু। একসঙ্গে লেখাপাড়া করেছি। গত শুক্রবার অন্যদের সঙ্গে আমিও মোস্তাকিমের স্ত্রী রিয়াকে আনতে যাই। তখন লক্ষ্য করি, মোস্তাকিমের শ্বশুর তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন। একটুতেই মোস্তাকিমের সঙ্গে রাগারাগি করে কথা বলছিলেন। এরপরও সব স্বাভাবিকভাবে পার করে দিয়ে আমরা বাড়িতে চলে আসি। আজ সকালে শুনি মোস্তাকিম মারা গেছে।’ 

ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী এক ঘরে শুয়ে ছিল। সেখানেই স্বামী গলায় ফাঁস নিল। অথচ স্ত্রী টের পেল না। চিৎকার চেঁচামেচি করল না। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। পরস্পরের মুখে শুনেছি, মেয়ের অন্যত্র সম্পর্ক আছে। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জয়পুরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড। তবে আমরা যে লক্ষণগুলো পেয়েছি, তাতে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে। যাইহোক, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সত্যতা জানা যাবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত