স্লোগানে মন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় নেতার নাম নেওয়ায় বিতণ্ডা, আরেক নেতার ভাইকে হত্যা

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৮: ৫৯
Thumbnail image

রংপুরের কাউনিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রীর আগমন ঘিরে মন্ত্রীর নামের সঙ্গে উপজেলা সভাপতির নামে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জেরেই আরেক নেতার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের খানসামা ইমামগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত সোনা মিয়া (৫৫) উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের নাজিরদহ নয়াটারী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তাঁর বড় ভাই মুকুল মিয়া ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক। 

সোনা মিয়ার স্বজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে খানসামা ইমামগঞ্জ বাজারে যান সোনা মিয়া। রাতে তাঁকে বাজারে একা দেখে মোটরসাইকেলে আসা হেলমেট পরিহিত একদল লোক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে দোকানের লোকজন লাশ নিয়ে একটি দোকানের বারান্দায় রাখেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী জানান, গতকাল বিকেলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে ইমামগঞ্জ স্কুল মাঠে আসেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সেখানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক মুকুল মিয়াসহ নেতা-কর্মীরা বাণিজ্যমন্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মায়ার নাম উল্লেখ করে স্লোগান দেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর নামের সঙ্গে মায়ার নামে স্লোগান দেওয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরেই পরে খুন হয়েছেন সোনা মিয়া। 

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আরও জানান, সম্প্রতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অনেকে প্রত্যাশিত পদ পাননি। মূলত এই দ্বন্দ্বের জেরেই আওয়ামী লীগ নেতার ভাইকে হত্যা করার ঘটনা ঘটল। 

সোনা মিয়ার ছোট ভাই আলমগীর হোসেন ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রেজাউল করিম জানান, বিকেলের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে মুকুলের বড় ভাই সোনা মিয়াকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও তাঁর ভাই ইউপি চেয়ারম্যান রাজুর সমর্থকেরা মোটরসাইকেলে করে এসে হেলমেট পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সোনা মিয়ার ওপর হামলা চালান। 

অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক ও তাঁর ভাই রাজুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের ব্যবহৃত ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া বলেন, মন্ত্রীর আগমন অনুষ্ঠানে যারা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছে তারা সরকার এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্টের পাঁয়তারা করছে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনা যে ঘটিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিয়া সুলতানা। 

রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে জানান, এ ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে বিকেল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। 

রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত