নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশুর মৃত্যু, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২২, ২৩: ১২
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ১২: ৩৭

ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় দুই বছরের এক শিশু। এ ঘটনায় অবরুদ্ধ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) উদ্ধার করা হয়েছে। 

আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় বাচোর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুটি উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ী গ্রামের বাদশাহ আলীর মেয়ে।

এ ঘটনায় পৌরশহরের শিবদিঘী যাত্রী ছাউনি মোড় অবরোধ করে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। অন্যদিকে উপজেলার মীরডাঙ্গী নামক এলাকায় আশ্রয় নেওয়া রানীশংকৈল থানার ওসি এসএম জাহিদ ইকবালসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোট গ্রহণ শেষে তালা প্রতীকের প্রার্থী বাবুল প্রার্থীকে ইউপি সদস্য হিসেবে জয়ী ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খতিবর রহমান। ফলাফল ঘোষণার পর মোরগ প্রতীকের প্রার্থী খালেদুর রহমান ও ফুটবল প্রার্থী আজাদ ফলাফল পুনরায় ভোট গণনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন। এক সময় তারা অনুরোধ রাখার আশ্বাস দিলেও হঠাৎ করেই নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে আসতে চাইলে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা তাঁদের গাড়ি আটকে দেন। এ সময় পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল পরে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে এক নারীর কোলে থাকা ওই শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। 

গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশু মারা যাওয়ার পর রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন উত্তেজিত জনতা। শুধু নিহতের পর তাৎক্ষণিকভাবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় পুলিশের একটি মাইক্রোসহ দুজন পুলিশকে বেধড়ক মারধর করেন উত্তেজিত জনতা। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিত সাহার নেতৃত্বে দুই গাড়ি বিজিবি ও পুলিশ সদস্যসহ রানীশংকৈল থানার ওসিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে।

এদিকে উদ্ধরকৃতদের নিয়ে ফেরার পথে উত্তেজিত জনতা নিহত শিশুর মরদেহ নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং থানা ঘেরাও করেন। পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এরপর বিজিবির একটি দল থানার সামনে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসক ফিরোজ আলম জানান, দুজন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১৩ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ছাড়াও প্রায় অর্ধশতাধিক সাধারণ মানুষ জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ইউএনও সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, ওই ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটের ফলাফল নিয়ে আসার সময় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা ভোট কর্মকর্তাদের বাধা দেওয়ার কারণেই প্রশাসন সেখানে অ্যাকশনে যায়।

নিহত শিশুটির বিষয়টি ইউএনও বলেন, শিশুটির ময়নাতদন্তের পর ঘটনার বিস্তারিত বলা যাবে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত