সৈয়দপুরে কর্মী ও গ্রাহকের ১০ লাখ টাকা নিয়ে চম্পট

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৯: ৫৬

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্সের ভুয়া শাখা অফিস খুলে কর্মী ও গ্রাহকের প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে শাহিনুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।

শহরের উপকণ্ঠে শান্ত টাওয়ারে বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের নামে দুটি ভুয়া শাখা অফিস খোলা হয়। এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার হিসাবরক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত আফসানা আফরিন দীপ্তি বাদী হয়ে তিনজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখিত শাহিনুর ইসলামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পুটিমারী গ্রামে। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন গাইবান্ধার শহিদুজ্জামান শহিদ ও সৈয়দপুরের ধলাগাছ এলাকার মোসলেম উদ্দিন।

অভিযোগ মতে, প্রায় তিন মাস আগে শহরের উপকণ্ঠে আসমতিয়া দাখিল মাদ্রাসাসংলগ্ন এলাকার শান্ত টাওয়ারের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়ায় নেন শাহিনুর ইসলাম। এরপর সেখানে বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শাখা অফিসে জনবল নিয়োগের নামে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

চটকদার বিজ্ঞপ্তি দেখে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীরা বিভিন্ন পদে আবেদন করেন। এদের মধ্য থেকে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, ইউনিট ম্যানেজার ও ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েটস পিয়ন পদে ১৪ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। আর নিয়োগকৃতদের প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে পদ অনুযায়ী ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জামানত নেওয়া হয়।

কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে গৃহ নির্মাণ, কৃষি খাত ও কুটির শিল্পের ওপর ঋণ দেওয়ার নামে গ্রাহক সংগ্রহ করেন। আর এসব গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতি লাখে ৫ হাজার টাকা হিসাবে জামানত নেওয়া হয়। অপরদিকে ইন্স্যুরেন্সে ৫ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি বিমা খুলে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা হয়। এভাবে প্রায় ১০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে শাহিনুর ইসলাম উধাও হন। 

অভিযোগকারী আফসানা আফরিন দীপ্তি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এজিএম হিসেবে পরিচয়দানকারী প্রতারক শাহিনুর ইসলামের কথা সরল মনে বিশ্বাস করে 
আমরা প্রতারিত হয়েছি। ওই প্রতারক নিয়োগ দেওয়ার সময় কর্মীদের নামে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের রংপুর শাখায় পৃথক হিসাব নম্বর খুলে একটি করে চেকবই দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারক শাহিনুর ইসলামসহ তাঁর সহযোগীরা গা-ঢাকা দেওয়ায় আমরা কর্মীরা বিপাকে পড়েছি। ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্সের গ্রাহকেরা সঞ্চিত অর্থ ফেরত পেতে প্রতিনিয়ত নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। ফলে গ্রাহকদের চাপে আমরা কর্মীরা সমস্যায় আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে আজ বৃহস্পতিবার শান্ত টাওয়ারে গিয়ে দেখা যায়, টাওয়ারের তৃতীয় তলায় বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নামে একটি সাইনবোর্ড এখনো ঝুলছে। কিন্তু অফিস ঘরটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। গত তিন দিন ধরে দুটি অফিস লোকশূন্য বলে জানিয়েছেন টাওয়ারের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মী মো. সাঈদ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত