ইরাসমাস মুন্ডাস বৃত্তি পেতে চাইলে

আনিসুল ইসলাম নাঈম
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৭: ৪৬

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন জাহিদ হাসান জনী। পরে তিনি বিদেশে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনার করার প্রস্তুতি নেন। একপর্যায়ে ইউরোপের মর্যাদাপূর্ণ ইরাসমাস মুন্ডাস বৃত্তির জন্য মনোনীত হন তিনি। এ বৃত্তির আওতায় জনী ‘কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ডেটা সায়েন্স’ প্রোগ্রামে ফিনল্যান্ডের আল্টো ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর পর্ব শুরু করবেন। তাঁর বৃত্তি পাওয়ার গল্প শুনেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম। 

জনীর জন্ম রাজধানী ঢাকার ধামরাই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি।

বৃত্তি পাওয়ার অনুভূতি
ই-মেইল পেয়ে চমকে যান জনী। প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাঁর মা-বাবা এ খবর শুনে খুব খুশি হয়েছেন।

বৃত্তির স্বপ্ন দেখা
জনী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন তাঁর বিভাগের এক সিনিয়র ইরাসমাস মুন্ডাস বৃত্তি পান। তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন তিনি। 

জনী যেভাবে বৃত্তি পেল
নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত জনী বেশ কয়েকটি ইরাসমাস মুন্ডাস প্রোগ্রামে আবেদন করেন। প্রথম প্রোগ্রামের রিজেকশন মেইল পান তিনি। এরপর টানা ৩টা প্রোগ্রামে সেকেন্ড ফেজের কল পান। এর মধ্যে একটি প্রোগ্রামে পরীক্ষা দেন। আরেকটি প্রোগ্রামের ইন্টারভিউয়ের কল পান।এভাবে স্বপ্নের গন্তব্যের দিকে ছুটেছেন জনী। 

যেভাবে আবেদন
ইরাসমাস মুন্ডাস বৃত্তির আবেদনের পদ্ধতি অন্য বৃত্তির আবেদন করার থেকে সহজ। ইরাসমাস মুন্ডাসের সব প্রোগ্রাম ‘ইরাসমাস মুন্ডাস ক্যাটালগে’ পাওয়া যায়। সেখানে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক প্রোগ্রাম রয়েছে। সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাঁদের পছন্দমতো প্রোগ্রামটি বাছাই করার মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। ক্যাটালগে বিভিন্ন উপায়ে প্রোগ্রাম ফিল্টার করা যায়।

যেমন ডিপার্টমেন্ট, সাবজেক্ট, দেশ, সাল, ক্রেডিট কিংবা সরাসরি কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার মাধ্যমে। যে কেউ এ ফিল্টার আবেদন করে প্রোগ্রাম বাছাই করতে পারেন। শুধু ইনফরমেশন প্রোভাইড করে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করে ফি ছাড়া আবেদন করতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এ বৃত্তির জন্য কিছু কাগজপত্র লাগে। যেমন ব্যাচেলর সার্টিফিকেট, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, মোটিভেশন লেটার/কভার লেটার/স্টেটমেন্ট অব পারপাস, রিকমেন্ডেশন লেটার ৩টি, ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট (IELTS/TOEFL), ইউরোপাস কারিকুলাম ভিটা, পাসপোর্ট, রেসিডেনসিয়াল সার্টিফিকেট এবং রিসেন্ট ফরমাল ছবি।

এ ছাড়া অতিরিক্ত কিছু ডকুমেন্ট, যেমন ECTS কনভারশন এক্সেল শিট, ব্যাচেলর কোর্স আউটলাইন, ১ বা ২ মিনিট মোটিভেশন ভিডিও, প্রুফ অব রিসার্চ ওয়ার্ক (বাধ্যতামূলক না), প্রুফ অব ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্স (বাধ্যতামূলক না), অন্য কাগজপত্র (এক্সট্রা কারিকুলাম বা কোনো অর্জনের সার্টিফিকেট দেওয়া যায়) ইত্যাদি লাগবে।

সুযোগ-সুবিধা 
এ বৃত্তি পেলে যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়: এ বৃত্তি দিয়ে ফুল টিউশন ফি এবং হেলথ ইনস্যুরেন্স কাভার করবে। প্রতি মাসে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ ইউরো দেওয়া হবে।

ট্রান্সপোর্ট ব্যয় হিসেবে বছরে ৩ হাজার ইউরো এবং ইনস্টলেশন ব্যয় ১ হাজার ইউরো দেওয়া হবে। ইউরোপের একাধিক দেশে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। জয়েন্টলি মাস্টার্স এবং ডাবল মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের সুযোগও রয়েছে। এ ছাড়া একাডেমিক যাবতীয় খরচ বহন করবে। পাশাপাশি চাইলে নিজের ইউনিভার্সিটিতেও রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা প্রজেক্টে অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ফ্যাকাল্টির সঙ্গে পার্টটাইম কাজ করতে পারবেন।

বৃত্তি পেতে করণীয়
ভালো সিজিপিএ বৃত্তি পেতে ভূমিকা রাখে। স্নাতকে ফল ভালো করার চেষ্টা করুন। যাঁদের স্নাতক সম্পন্ন হয়েছে, তাঁরা রিসার্চ দক্ষতা, জব এক্সপেরিয়েন্স, পাশাপাশি প্রজেক্টে কাজের অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। ভালো প্রোফাইল ও মোটিভেশন লেটার ইরাসমাস মুন্ডাস বৃত্তি পেতে সহায়তা করে। মোটিভেশন লেটারটি বৃত্তি কমিটি মনোযোগসহ পড়ে থাকে। তাদের কনভিন্স করার সুন্দর মাধ্যম কিন্তু নিজের হাতেই।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত