কওমি মাদ্রাসাকে নীতিমালা ও নিবন্ধনের আওতায় আনার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২১, ১৮: ৪৩
আপডেট : ২৪ জুন ২০২১, ১৯: ১৭

ঢাকা: দেশের সব কওমি মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনতে একটি নীতিমালা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের এক অফিস আদেশে গত ২১ জুন এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

অফিস আদেশে জানানো হয়, কওমি শিক্ষা বোর্ড গঠনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ১৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিকে। আহ্বায়ক করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানকে। সদস্যসচিব হিসেবে আছেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক মো. আব্দুস সেলিম।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, কওমি মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকরকরণ ও সরকারের নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্যে সমন্বিত একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করবে এই কমিটি।

একই সঙ্গে কওমি মাদ্রাসাগুলো পরিচালনা করা আলাদা ছয়টি বোর্ডকে সমন্বয় করে একটি কওমি শিক্ষা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

হঠাৎ এমন কমিটি করার উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কওমি মাদ্রাসা নিয়ে সরকারের এখনো কোনো নীতিমালা নেই। সুতরাং কীভাবে এখানে নিয়োগ, বেতন হবে এবং কীভাবে চলবে ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণ করার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে কমিটি করা হয়েছে।

নীতিমালা প্রণয়নে কওমি মাদ্রাসাগুলোর পক্ষ থেকে আপত্তি করা হলে কীভাবে তা মোকাবিলা করা হবে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো কোনো মিটিং ডাকা হয়নি। কয়েকটি মিটিং করলে এই বিষয়টি বোঝা যাবে।

১৫ সদস্যের ওই কমিটিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ন্যূনতম যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসার ছয় বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও পদাধিকার বলে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

এর মধ্যে অন্যতম জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ফরীদ উদ্দীন মাসউদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সবে কমিটি করেছে। এখনো আলাপ-আলোচনার জন্য কোনো বৈঠক হয়নি। কমিটিতে সবগুলো বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছে। আলাপ-আলোচনা শুরু হলে তারপর কীভাবে আগানো যায় পরবর্তীতে সেগুলো নির্ধারণ করা হবে। এ কমিটি কওমি মাদ্রাসার স্বতন্ত্রতার পরিপন্থী কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলেও আশাবাদ জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর কেন্দ্র করে হেফাজতের দেশব্যাপী সহিংসতার পরে সমালোচনার মুখে পড়ে কওমি মাদ্রাসাগুলো। এরপর ২৫ এপ্রিল এই শিক্ষাব্যবস্থার সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার সভায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত