শিক্ষার্থীদের অনলাইন রিসোর্স ব্যবহারের ১০ গুরুত্ব

মো. আশিকুর রহমান
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮: ০২

প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে ডিজিটাল লিটারেসির গুরুত্ব বেড়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি ডিজিটাল লিটারেসির দক্ষতা অর্জন করতে না পারে, তাহলে তারা একাডেমিক ও ক্যারিয়ার জীবনে পিছিয়ে পড়বে। তাই এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ডিজিটাল লিটারেসির মাধ্যমে অনলাইন রিসোর্স ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো এখানে তুলে ধরা হলো:

তথ্যের সহজ প্রাপ্যতা

ডিজিটাল যুগে তথ্যের অভাব নেই। বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ তথ্য অনলাইনে বিদ্যমান। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু, তথ্যের মধ্যে কোনটি সঠিক ও প্রাসঙ্গিক, তা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল লিটারেসির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শেখেন, কীভাবে সঠিক তথ্য খুঁজে বের করতে হয়।

গবেষণার দক্ষতা উন্নয়ন

অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা তাঁদের গবেষণার দক্ষতা বাড়াতে পারেন। গুগল স্কলার, পাবমেড, জেট অব সায়েন্স ইত্যাদি অনলাইন ডেটাবেইস তাঁদের গবেষণামূলক কাজের জন্য অপরিহার্য। তাঁরা বিভিন্ন গবেষণাপত্র, নিবন্ধ এবং থিসিস ব্যবহার করে নিজেদের কাজকে সমৃদ্ধ করতে পারেন। এই দক্ষতা তাঁদের অ্যাকাডেমিক জীবনে বড় ভূমিকা রাখবে।

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা

সাইবার নিরাপত্তা আজকের দিনে একটি বড় উদ্বেগ। শিক্ষার্থীদের সাইবার হামলা, ফিশিং স্ক্যাম এবং অন্যান্য ডিজিটাল হুমকি সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি। ডিজিটাল লিটারেসির মাধ্যমে তাঁরা নিরাপদ পাসওয়ার্ড তৈরি, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা এবং অনলাইনে নিরাপদ থাকার কৌশল শেখেন। এটি তাঁদের ডিজিটাল জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক হবে।

কার্যকর যোগাযোগের দক্ষতা

ডিজিটাল লিটারেসি শিক্ষার্থীদের অনলাইন যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ায়। ই-মেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সঠিক ভাষা ব্যবহার এবং শিষ্টাচার রক্ষা করা জরুরি। কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতা তাঁদের পেশাদার জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ, সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারা তাঁদের ক্যারিয়ারের জন্য একটি বড় সুবিধা।

আত্মশিক্ষার সুযোগ

আজকের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে আত্মশিক্ষা অর্জন করতে পারেন। কোরসেরা, ইউডেমি এবং ইউটিউবের মতো অনলাইন রিসোর্স তাঁদের বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। ডিজিটাল সাক্ষরতার মাধ্যমে তাঁরা শিখতে পারেন, কোন রিসোর্সগুলো তাঁদের জন্য উপযুক্ত এবং কীভাবে সেগুলো ব্যবহার করতে হয়।

প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন

বর্তমান কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত দক্ষতার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ডিজিটাল লিটারেসির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সফটওয়্যার ও টুলস ব্যবহারের দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। এটি তাঁদের চাকরির বাজারে একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেয়। প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন তাঁদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে।

সৃজনশীলতার উন্নয়ন

ডিজিটাল লিটারেসি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনের সুযোগ দেয়। অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করে তাঁরা নতুন ধারণা সৃষ্টি করতে পারেন এবং সৃজনশীল প্রজেক্ট তৈরি করতে পারেন। ব্লগ লেখা, ভিডিও তৈরি এবং ডিজিটাল আর্টের মাধ্যমে তাঁরা নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করতে পারেন। এই সৃজনশীলতা তাঁদের ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

সমালোচনামূলক চিন্তার বিকাশ

ডিজিটাল লিটারেসি শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তার দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাঁরা বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারেন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন। এই সক্ষমতা তাঁদের অ্যাকাডেমিক এবং পেশাগত জীবনে সাফল্য অর্জনে সহায়ক হবে। তথ্যের মধ্যে গভীরতা এবং যুক্তি খুঁজে বের করা তাঁদের চিন্তার গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।

সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল

ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের শেখানো উচিত, কীভাবে তাঁদের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং ডিজিটাল ডিস্ট্রাকশন থেকে নিজেদের কীভাবে রক্ষা করতে হয়। এটি তাঁদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করবে।

ডিজিটাল নাগরিকত্বের গুরুত্ব

ডিজিটাল নাগরিকত্বের ধারণা শিক্ষার্থীদের শেখায় কীভাবে একজন দায়িত্বশীল অনলাইন ব্যবহারকারী হতে হয়। এটি অন্তর্ভুক্ত করে, কীভাবে অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয় এবং অনলাইনে নেতিবাচক আচরণ থেকে দূরে থাকতে হয়। ডিজিটাল নাগরিকত্বের মাধ্যমে তাঁরা সমাজের একটি অংশ হিসেবে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত