মেডিকেল শিক্ষায় অনন্য কিরগিজস্তান

Thumbnail image

দেশের মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেন না, তাঁদের জন্য কিরগিজস্তান সম্ভাবনার দেশ। দেশটির সলিমবেকভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. আদিত্য রায়হান চৌধুরী জানিয়েছেন সে দেশের মেডিকেল শিক্ষার সম্ভাবনার কথা। লিখেছেন শাহ বিলিয়া জুলফিকার

মো. আদিত্য রায়হান চৌধুরীর জন্ম বগুড়া জেলায়। ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবেন। প্রথমবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভর্তি হতে পারেননি, তাই দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে দেশের বাইরে এমবিবিএস করার কথা ভাবেন। কম খরচ ও সহজে ভিসা পাওয়া যায় এমন দেশ কিরগিজস্তানকে বেছে নেন। অন্য দেশ যেখানে ছয়-সাত বছর সময় নেয় ডক্টর অব মেডিসিন শেষ করতে, সেখানে কিরগিজস্তানে পাঁচ বছরেই ডিগ্রি সম্পূর্ণ হয়। এখানের প্রতিটি মেডিকেলে দুর্বল শিক্ষার্থীদের আলাদা যত্ন নেওয়া হয়। মেডিকেল শিক্ষার পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়েও পড়ার সুযোগ রয়েছে।

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা
কিরগিজস্তানে ডক্টর অব মেডিসিন করতে চাইলে সাধারণত এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৯ পয়েন্ট থাকতে হবে। কিরগিজস্তানের জাতীয় ভাষা কিরগিজ। কিন্তু কিরগিজস্তানের ৯০ শতাংশ মানুষ রাশিয়ান ভাষায় কথা বলে। মূলত কিরগিজস্তান ছিল স্টেট অব সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। তাই তাদের জাতীয় ভাষা থাকার পরও রুশ ভাষার প্রাধান্য বেশি। কিরগিজস্তানের প্রধান ভাষা রুশ আর দ্বিতীয় ভাষা হলো ইংরেজি। এখানে পড়াশোনা করতে গেলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রুশ ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। 

খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ
কিরগিজস্তানে চাকরি বা খণ্ডকালীন কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। শুদ্ধভাবে রুশ ভাষা জানার ফলে প্রতি সপ্তাহে রোববারের কাজ করেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পূর্ণকালীন কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু লেখাপড়ার ক্ষতি করে কেউ কাজ করেন না। প্রতি রোববার বা ছুটির দিনে অনেক শিক্ষার্থী খণ্ডকালীন কাজ করেন। বিশ্বের অন্য যেকোনো উন্নত দেশের মতো কিরগিজস্তানে প্রতি দিনের পে-রেট বা বেতনের হার তুলনামূলক বেশি এবং প্রতিদিন পারিশ্রমিক প্রদান করে।

আবেদনের প্রক্রিয়া
কিরগিজস্তানে আবেদন-প্রক্রিয়া সহজ ও কম সময়সাপেক্ষ। আবেদন করতে হলে যেকোনো শিক্ষার্থীর মাধ্যমে করতে হবে অথবা বাংলাদেশের কিছু অনুমোদিত এজেন্সি আছে, যাদের মাধ্যমে আবেদন-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। আবেদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সনদ, পাসপোর্টের স্ক্যান করে দিতে হবে এবং পাসপোর্ট আকৃতির ছবি লাগে। দুই-সাত কর্মদিবসের মধ্যে অফার লেটার পেয়ে যায়। প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারি ও সেপ্টেম্বর দুই সেশন হয়ে থাকে। ফেব্রুয়ারি ও সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদান করে ভার্সিটিগুলো। অগ্রিম কোনো টাকা দিতে হয় না, কারণ প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজের টাকা নিজে এসে পরিশোধ করতে পারেন। 

আদিত্যের পরামর্শ
কিরগিজস্তানে পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য আদিত্যের পরামর্শ হলো কিরগিজস্তানে ডক্টর অব মেডিসিন করতে অন্য দেশের মতো বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ নেই। আবার টিউশন ফি নিজ থেকে দিতে গেলে এ দেশে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তাই কিরগিজস্তানে আসার আগে মানসিকভাবে সেই প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে। যেকোনো কিছুর আগে রুশ ভাষা, রেস্টুরেন্ট, ড্রাইভিংয়ের কাজ শিখে আসা ভালো। এ ছাড়া আইটি স্কিল, ইংরেজি ও রুশ ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারলে সহায়ক হয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত