উচ্চমাধ্যমিকের পর শিক্ষার্থীদের করণীয়

শাহ বিলিয়া জুলফিকার
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৮: ২৮
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৮: ২৯

এইচএসসির ফল প্রকাশিত হয়েছে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগের স্বপ্ন দেশসেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে আটঘাট বেঁধে নেমেছেন তাঁরা। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ের কী কী করা উচিত, সে সম্পর্কে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিট ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া রাফিদ হাসান সাফওয়ান নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ দিয়েছেন।

এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে ভর্তি পরীক্ষার খোঁজ রাখতে হবে। কেননা, এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী এবং বিশেষায়িত কিছু বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে মোট ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে ‘কৃষি গুচ্ছ’ ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বুয়েট স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। তা ছাড়া অন্যান্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে থাকে। সেসব খোঁজ রেখে ওয়েবসাইটের নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।

প্রস্তুতি শুরু
এইচএসসির পর অ্যাডমিশনের প্রস্তুতি সময় খুব কম। চার-পাঁচ মাস সময় পাওয়া যায়। কারও যদি নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে তিনি নিজে থেকে প্রস্তুতি শুরু করবেন। যদি মনে করেন তাঁর ঘাটতি আছে, নিজে প্রস্তুতি নিতে পারবেন না, তা হলে কোনো কোচিংয়ের দ্বারস্থ হবেন অথবা নিয়মিত অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নেবেন। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে তাঁর জন্য ভালো হবে, পাবলিকে নাকি বেসরকারিতে—এই সিদ্ধান্তগুলো নিতে হবে ও সে আলোকে প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে পড়তে হবে।

লক্ষ্য স্থির রাখা জরুরি
বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা বা মানবিক—যে বিভাগের শিক্ষার্থীই হোক, একজন শিক্ষার্থীর প্রধান কাজ হচ্ছে নিজের লক্ষ্য স্থির রাখা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতি নেওয়ার সময় অনেক শিক্ষার্থীকেই দেখা যায়, তাঁদের আসলে কী পড়া উচিত, তা নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। এ জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। এইচএসসির পর একজন শিক্ষার্থীর সামনে অনেক সুযোগ থাকে। একটি সুযোগের বদলে অনেক সুযোগ বাছাই করলে দুই নৌকায় পা দেওয়ার মতো হবে। কেউ যদি লক্ষ্য স্থির রাখেন যে তাঁকে এই বিষয়ে পড়তে হবে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে, তাহলে সে লক্ষ্য তাঁকে পড়ার টেবিলে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে সাহায্য করবে ও বিষণ্নতা থেকে দূরে রাখবে।

সময়ের সঠিক ব্যবহার
সব ধরনের সময় নষ্ট, আড্ডা বা আউট বই না পড়ে এ সময় একজন শিক্ষার্থী শুধু অ্যাডমিশনের পড়ায় মনোযোগ দেবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পুরোনো প্রশ্নগুলো বারবার দেখা ও বিশ্লেষণ চালিয়ে যেতে হবে। কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে অভিজ্ঞ কোনো বড় ভাই অথবা কোচিংয়ের কারও শরণাপন্ন হতে হবে। তা ছাড়া একজন শিক্ষার্থী নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পরীক্ষা দেবেন। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।

অভিভাবকের দায়িত্ব
অভিভাবকের দায়িত্ব অন্য যেকোনো সময় থেকে এই সময় একটু বেশি। এ সময় খুব চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয় একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে। যার কারণে এই চাপটা সহ্য করার জন্য অভিভাবকের দায়িত্ব একটু বেশি। অভিভাবকের সব সময় সন্তান যথার্থ যত্ন পাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখা উচিত। তা ছাড়া হতাশায় ভুগছে কি না, তা-ও জানতে হবে। পড়াশোনার চাপ বেশি থাকায় সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে। সবশেষে বাবা-মায়ের উচিত সন্তানকে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দেওয়া, তাকে বাধ্য করা নয়। সন্তান নিজের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলে অভিভাবককে যেন আশ্রয়স্থল হিসেবে ভাবতে পারে।

অনুলিখন: শাহ বিলিয়া জুলফিকার

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত