Ajker Patrika

তুর্কি ভাষা শেখা জরুরি

মুসাররাত আবির
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২১, ১৫: ৫০
তুর্কি ভাষা শেখা জরুরি

ঐতিহাসিক ও আধুনিক দেশ হিসেবে তুরস্কের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। এখানকার শিক্ষাব্যবস্থা বেশ ভালো। ইউরোপের সবচেয়ে পুরোনো, অভিজাত ও ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বের অনেক শিক্ষার্থী পড়তে আসেন এখানে। এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াচ্ছে।

বৃত্তির কথা
তুরস্ক সরকার প্রদত্ত বৃত্তি ‘তুরকিয়ে বুরসলারি’। বিশ্বের অসংখ্য শিক্ষার্থী এই বৃত্তির জন্য আবেদন করে থাকেন।

এই শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ-সুবিধাগুলো হলো: বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রাম ও প্লেসমেন্ট, টিউশন ফি, আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা, বিনা মূল্যে তুর্কি ভাষা শেখার এক বছরের কোর্স, স্বাস্থ্যবিমা, মাসিক সম্মানী ভাতা, একবার তুরস্কে আসা এবং একবার নিজ দেশে যাওয়ার বিমান টিকিট।

মাসিক সম্মানী ভাতায় স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য ৮০০ লিরা, স্নাতকোত্তরদের জন্য ১ হাজার ১০০ লিরা ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৬০০ লিরা দেওয়া হয়।

আগ্রহী শিক্ষার্থীরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামে পড়াশোনা করতে পারবেন। আবেদনের জন্য স্নাতকের ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ৭০ শতাংশ এবং স্নাতকোত্তর-পিএইচডির জন্য স্নাতক-স্নাতকোত্তরে ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হয়। তবে মেডিকেলে ভর্তি হতে চাইলে ৯০ শতাংশ নম্বর প্রয়োজন। তুরস্কের শিক্ষাব্যবস্থায় মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরগুলো বেশ সমৃদ্ধ। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত বৃত্তিও রয়েছে।

টিউশন ফি
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রোগ্রামের টিউশন ফি ২৪০ থেকে ৭৫০ ডলার। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় টিউশন ফি ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামের টিউশন ফি যথাক্রমে ৩০০ থেকে ৬০০ ও ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং, অবস্থান ও অনুষদভেদে টিউশন ফির তারতম্য ঘটে।

সুযোগ-সুবিধা
তুরস্কের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ উপযোগী। একজন শিক্ষার্থীর জন্য মাসে থাকা-খাওয়ার খরচ, পোশাক, পরিবহন, টেলিফোন খরচ বাবদ ১০-১৫ হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে যায়। তুর্কিরা বন্ধুপ্রতিম জাতি হলেও বেশ নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলেন। তবে এখানে ভাষা না শিখে গেলে যোগাযোগ করতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে।

ভর্তির প্রক্রিয়া
তুরস্কে পড়াশোনার ভাষা তুর্কি হলেও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি কোর্স রয়েছে। তবে তুর্কি ভাষাটা দৈনন্দিন কাজের জন্য শিখে নেওয়া জরুরি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে টোফেল বা আইইএলটিএস স্কোর প্রয়োজন হয়, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা লাগে না। আগ্রহীরা কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিতে আবেদন করতে বয়স যথাক্রমে অনূর্ধ্ব ২১, ৩০ ও ৪৫ বছর হতে হবে।

যেসব কাগজপত্র দরকার হবে–
১. জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট।
২. আবেদনকারীর সম্প্রতি তোলা স্পষ্ট ছবি।
৩. বোর্ড পরীক্ষার নম্বর।
৪. ডিপ্লোমা অথবা পরীক্ষায় উত্তীর্ণের অস্থায়ী সনদ।
৫. একাডেমিক নম্বরপত্র।
৬. আন্তর্জাতিক স্কোর, যেমন স্যাট, জিম্যাট, জিআরই (যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাওয়া হয়)। 
৭. ভাষা সার্টিফিকেট। 
তুরস্ক সরকার সহশিক্ষা কার্যক্রমের ওপরও বেশ জোর দেয়।

সুতরাং আপনি যে বিভাগে পড়তে চান, সে-সম্পর্কিত আপনার কোনো কার্যক্রম বা পুরস্কার পেয়ে থাকলে নিজের মোটিভেশন লেটারে সেটা উল্লেখ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়  আন্তর্জাতিক সম্পর্ক থেকে শুরু করে কম্পিউটার সায়েন্স, চারুকলা, মনোবিজ্ঞান, মেডিসিন, ফার্মেসি, সাংবাদিকতাসহ অসংখ্য কোর্স রয়েছে।
আপনার যদি ভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে তুরস্কে পড়তে আসা আপনার জন্য ভালো একটি সিদ্ধান্ত হতে পারে।

অনুলিখন: মুসাররাত আবির

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত