ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে অনুপ্রেরণার গল্প শোনালেন পাকিস্তানের স্থপতি ইয়াসমিন লারি

বিজ্ঞপ্তি  
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ৫৯
Thumbnail image
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে অনুপ্রেরণার গল্প শোনালেন পাকিস্তানের স্থপতি ইয়াসমিন লারি। ছবি: সংগৃহীত

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণামূলক গল্প শোনালেন পাকিস্তানের প্রথম নারী এবং বিশ্বব্যাপী মানবতাবাদী আর্কিটেক্ট হিসেবে খ্যাত ইয়াসমিন লারি। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে এক বিশেষ বক্তব্য দেন প্রখ্যাত এই স্থপতি।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচার বিভাগ নিয়মিতভাবে ‘অঙ্গন লেকচার সিরিজ’ আয়োজন করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্থাপত্য ও ডিজাইনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণার গল্প এবং নতুন ধারণা সম্পর্কে জানতে পারেন। এই সিরিজের ১৫০তম পর্বে বক্তব্য দেন ইয়াসমিন লারি।

ইয়াসমিন লারি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ‘পৃথিবী বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও: স্থাপত্যকে কার্বনমুক্ত, উপনিবেশমুক্ত এবং গণতান্ত্রিক করো’ শীর্ষক বক্তব্য দেন। তিনি বক্তব্যে স্থাপত্যকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অসমতা প্রতিরোধ এবং দুর্বল সমাজকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার একটি বলিষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেন।

ইয়াসমিন লারি বলেন, ‘স্থপতি এবং স্থাপত্য কেবল ভবন তৈরির বিষয় নয়; এটি পৃথিবীর জন্য টেকসই সমাধান তৈরি, সমাজকে ক্ষমতায়িত করা এবং সাম্য প্রতিষ্ঠার একটি উপায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্থাপত্যকে আমাদের কার্বনমুক্ত, উপনিবেশমুক্ত এবং গণতান্ত্রিক করে গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে যাতে আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারি, যেখানে টেকসই ও মানবতা একসঙ্গে অবস্থান করে।’

ইয়াসমিন লারির বক্তব্য শেষে আর্কিটেকচার বিভাগের চেয়ারপারসন প্রফেসর জয়নাব ফারুকী আলীর সঞ্চালনায় একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রাণবন্ত আলোচনায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা স্থপতিরা অংশ নেন।

আলোচনায় ইয়াসমিন লারির বিভিন্ন কর্ম; যেমন আধুনিক ব্রুটালিস্ট ভবন, মিররড অফিস টাওয়ার, বিভিন্ন ঐতিহ্য সংরক্ষণ প্রকল্পসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক স্থাপত্যের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্থাপত্যচর্চায় তাঁর এই কাজগুলোর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বিশেষ আলোকপাত করা হয়।

এ ছাড়া ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ইয়াসমিন লারির তত্ত্বাবধানে সপ্তাহব্যাপী একটি শীতকালীন পাঠশালা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আর্কিটেকচার বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘জিরো কার্বন’ বাঁশের একটি ভবন নির্মাণ করেন। এই প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড কাঠামোটি দুর্যোগকালীন পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহারের উপযোগী। সেই সঙ্গে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেশনের আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রধান আলোচক ছিলেন ইয়াসমিন লারি।

দুই দশকের বেশি সময় ধরে ইয়াসমিন লারি দুর্যোগ-সহনশীল ও শূন্য কার্বন বাসস্থান তৈরির পাশাপাশি তার ‘বেয়ারফুট সোশ্যাল আর্কিটেকচার’ দর্শনের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করার কাজ করে যাচ্ছেন। বেয়ারফুট সোশ্যাল আর্কিটেকচার মূলত টেকসই, সেবা ও পরিবেশবান্ধব এবং কার্বন নিরপেক্ষ উপাদান দিয়ে স্থাপত্য তৈরির একটি দর্শন।

স্থাপত্য শাস্ত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ইয়াসমিন লারি ২০২৩ সালে রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস থেকে রয়্যাল গোল্ড মেডেল এবং ২০২০ সালে জেন ড্রু পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত